রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়ামের বাইরে এক বৃদ্ধ পতাকা বিক্রি করছিলেন। তাঁর হাতে থাকা সবচেয়ে বড় পতাকাটি ছিল লাল–সবুজ, বাংলাদেশের পতাকা। দাম ৫০০ রুপি। বৃদ্ধের সঙ্গে থাকা কিশোর স্লোগান তোলার মতো করে উর্দুতে যে কথা বলল, তার বঙ্গানুবাদ দাঁড়ায় ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আছি।’ এটি আজ দুপুরের ঘটনা।
সন্ধ্যার দিকে গ্যালারি অনেকটাই পূর্ণ হয়ে গেলেও শুরুতে খুব বেশি দর্শক ছিল না। পতাকা ছিল আরও কম দর্শকের হাতে, তবে বেশির ভাগই লাল–সবুজ। আর কিছু পাকিস্তানের পতাকা। বাংলাদেশের পতাকা হাতে রাখা দর্শকদের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ যেমন ছিলেন, ছিলেন পাকিস্তানিও। প্রেসবক্স থেকে গ্যালারির দিকে একবার চোখ বুলিয়েই বুঝে নেওয়া গেছে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে পাকিস্তানের সমর্থন বাংলাদেশের দিকে। খেলার মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চার–ছয় আর বোলারদের উইকেট নেওয়ার মুহূর্তগুলোতে হয়েছে উল্লাসধ্বনি, সেটি এমনকি প্রেসবক্সেও।
আরও পড়ুননিউজিল্যান্ডের কাছে হার, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শেষ বাংলাদেশের৮ ঘণ্টা আগেপ্রেসবক্সে স্থানীয় অনেক সাংবাদিকই ম্যাচের আগে ঘোষণা দিলেন, ‘আজ আমরা বাংলাদেশের সমর্থক।’ নিজেদের দেশ ছাড়া অন্য দেশের সঙ্গে খেলায় পাকিস্তানের মানুষকে আগেও বাংলাদেশকে সমর্থন করতে দেখা গেছে। তবে আজকের সমর্থনে তাদের একটা বিশেষ স্বার্থ ছিল। নিউজিল্যান্ড ও ভারতের কাছে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানের সেমিফাইনালে ওঠার আশা কার্যত শেষ। তবে বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে পাকিস্তানের আশার সলতেতে একটু জ্বালানি পড়ত।
চতুর্থ উইকেটে রবীন্দ্র ও ল্যাথামের জুটি নিউজিল্যান্ডের জয়ের ভিত.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল
১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।
১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।
১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।
মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।
বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।
আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।
কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।
ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি