নরসিংদী শহর যুবদলের আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সুমনের বিরুদ্ধে রেলওয়ে স্টেশনে চাঁদাবাজি, শ্লীলতাহানি ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিচার চেয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গতকাল বুধবার নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার আবু তাহের মোহাম্মদ মুসা নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, স্থানীয় মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সুমন ও তাঁর সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছেন। তারা স্টেশনের ভিআইপি কক্ষে নিয়মিত মাদক ও জুয়ার আসর বসান এবং যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন। সর্বশেষ ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে মাহমুদুল হাসান চৌধুরীর নেতৃত্বে একদল লোক স্টেশনের অফিস কক্ষে ঢুকে স্টেশন মাস্টারসহ কর্মচারীদের লাঞ্ছিত করে ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

স্টেশন মাস্টার মুসা বলেন, ‘চাঁদাবাজ সুমন ও তাঁর লোকজনের অত্যাচারে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটছে। তারা শুধু আমাদের নয়, যাত্রীদেরও হয়রানি করছেন। সুমন আমাদের একজন সিনিয়র স্টাফকে নির্যাতন করেছে। আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছি ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সে রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যতটা লাঞ্ছিত ও হয়রানি করেছে, আওয়ামী লীগের আমলেও আমরা এতটা বঞ্চনার শিকার হয়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে নরসিংদী শহর যুবদলের আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান চৌধুরী সুমন বলেন, ‘যিনি অভিযোগ করেছেন, তিনি আমার বড় ভাইয়ের বন্ধু। তাঁর কাছে আমার নিয়মিত যাতায়াত আছে। কিন্তু লিখিত অভিযোগে যা উল্লেখ করা হয়েছে, তা আমি অবগত নই। আমি নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাহায্য করি। কিন্তু চাঁদাবাজি বা নির্যাতনের ঘটনা সত্য নয়।’

নরসিংদী জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ জানান, অভিযোগের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। লিখিত অভিযোগের কপি তাদের কাছে আসেনি। নেতাকর্মীর বিভিন্ন অপরাধের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে আছে বিএনপি। তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল, যুবদলসহ যে কেউ অপরাধে জড়িত থাকলে দলীয় শাস্তির পাশাপাশি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করব, তা সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে হতে হবে।’
নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধরীর ভাষ্য, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নরস দ য বদল ন ত র লওয় য বদল

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।  

এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর  মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।

এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব  হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।

সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ