গর্ভবতী নারী রোজা পালন করলে যা যা মানতে হবে
Published: 2nd, March 2025 GMT
রমজান মাসে রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় বিধান। তবে গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে এটি একটি সংবেদনশীল বিষয়, কারণ মায়ের স্বাস্থ্য ও অনাগত শিশুর বিকাশের ওপর রোজার প্রভাব থাকতে পারে। তাই গর্ভবতী নারীরা রোজা রাখতে পারবেন কিনা, তা তাদের শারীরিক অবস্থা ও ডাক্তারের পরামর্শের ওপর নির্ভর করে।গর্ভবতী নারীরা রোজা রাখার ক্ষেত্রে কোন কোন নিয়ম মেনে চলতে পারেন— এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ডা.
তিনি বলেন, ‘‘গর্ভাবস্থায় নারীর দেহে বিভিন্ন ধরনের শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন ঘটে। এই সময় পুষ্টির চাহিদা বেড়ে যায়, কারণ মা ও শিশুর উভয়ের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করতে হয়। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে পারে, যা মাথা ঘোরা, দুর্বলতা ও ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে।’’
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় রোজা রাখলে গর্ভস্থ শিশুর ওজনে প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে যদি মা পর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ না করেন। আবার অন্য কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যকর খাবার ও পর্যাপ্ত পানি গ্রহণের মাধ্যমে অনেক গর্ভবতী নারী নিরাপদে রোজা রাখতে পারেন। তবে এটি নির্ভর করে মায়ের শারীরিক সুস্থতা, গর্ভধারণের সময়কাল ও যেকোনো জটিলতা আছে কিনা, তার ওপর।
আরো পড়ুন:
ভাজাপোড়ার পরিবর্তে ইফতারে যা খেতে পারেন
লক্ষ্যে পৌঁছাতে যে কয়টি নিয়ম মানতে পারেন
গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে? এ প্রশ্নের উত্তরে ডা. মাসুদা পারভীন মিনু বেশ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেন। তিনি জানান—
মা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা রক্তস্বল্পতার সমস্যা
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি
আগে গর্ভধারণে জটিলতা হয়েছিল বা গর্ভস্থ শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা থাকলে
গরমকালে রোজা রাখলে পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) হওয়ার ঝুঁকি থাকে
যেসব গর্ভবতী নারী রোজা রাখতে চান, তাদের অবশ্যই আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করবেন, রোজা রাখা মা ও শিশুর জন্য নিরাপদ কি না।
রোজা রাখলে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি—
সেহরি ও ইফতারে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে, যাতে প্রোটিন, ফাইবার ও জটিল কার্বোহাইড্রেট থাকে।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে, যেন পানিশূন্যতা এড়ানো যায়।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন, বিশেষ করে গরমকালে।
যদি মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, পেটে ব্যথা বা শিশুর নড়াচড়া কম অনুভূত হয়, তাহলে রোজা ভেঙে ফেলা উচিত এবং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
ইসলামি দৃষ্টিকোণ: ইসলামে গর্ভবতী নারী ও মায়েদের জন্য বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে। যদি রোজা রাখা মা বা শিশুর জন্য ক্ষতিকর হয়, তাহলে তারা পরে কাফফারা দিয়ে রোজার পরিবর্তে ফিদিয়া দিতে পারেন। ইসলাম মায়ের সুস্থতাকে অগ্রাধিকার দেয়, তাই শরীরের অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়াই শ্রেয়।
গর্ভবতী নারীদের রোজা রাখা বা না রাখার সিদ্ধান্ত তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। সুস্থ মা ও স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় রোজা রাখা সম্ভব হতে পারে, তবে জটিলতা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। ইসলামও এ বিষয়ে ছাড় দিয়েছে, তাই মা ও শিশুর সুস্থতা সর্বাধিক গুরুত্ব পাওয়া উচিত।
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ক ৎসক র পর ম র জন য ইসল ম র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে ফের ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লো ইরান
ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। রবিবার মধ্যরাতে ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালানোর পর, সোমবার (১৬ জুন) ভোর হতে না হতেই দ্বিতীয় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তেহরান।সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলে ইরানের এটি দশম আক্রমণ।
টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, সোমবার ভোরে ইরান নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরপরই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) হোম ফ্রন্ট কমান্ড সাধারণ ইসরায়েলিদের বোমা শেল্টার ও আশ্রয়কেন্দ্রে প্রবেশের নির্দেশ দিয়েছে।
তেহরান টাইমস জানিয়েছে, রবিবার রাতে ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বন্দরনগরী হাইফায় সরাসরি আঘাত হানে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কঠোর সেন্সরশিপ সত্ত্বেও, অনলাইনে প্রচারিত ফুটেজে হাইফায় একটি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র আগুনে পুড়ে গেছে বলে দেখা গেছে। অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে। তেল আবিবের একাধিক স্থানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ইসরায়েলের হামলা
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
রবিবার রাতে ইরান ইসরায়েলের নেগেভ মরুভূমি এবং কিরিয়াত গাটের কৌশলগত স্থানগুলোর পাশাপাশি হাইফার অন্যান্য অঞ্চলগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। এতে ইসরায়েলের সামরিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোর উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে তেহরান।
আগের দিনগুলোতে, ইরান ইসরায়েলের বৃহত্তম তেল শোধনাগার এবং ১৫০টিরও বেশি সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনায় হামলা চালানোর দাবি করেছে।
শুক্রবার ভোরে তেহরানের আবাসিক ভবন ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলা চালানোর পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়।
তেহরান জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৭ জন ইরানি সামরিক কর্মকর্তা, ৯ জন পরমাণু বিজ্ঞানী এবং ২২০ জনেরও বেশি ইরানি বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন।
ইরান ইসরায়েলকে ‘অসহায়’ না করা পর্যন্ত আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ