কূটনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সম্মানে বিএনপির ইফতার
Published: 6th, March 2025 GMT
ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সৌজন্যে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে এই ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আমন্ত্রিত অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সামনের পথ স্পষ্ট, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে দ্রুত প্রত্যাবর্তন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গণতন্ত্র, জবাবদিহি, আইনের শাসন, সুশাসন, ন্যায়বিচার এবং মানবতা সমুন্নত রাখার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভাগ্য কেবল তার জনগণই নির্ধারণ করবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আশা করি, আমাদের বিশ্বব্যাপী বন্ধু ও অংশীদারেরা আমাদের সম্মিলিত বিকাশের জন্য অ-হস্তক্ষেপ, সার্বভৌমত্ব এবং বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের বিশ্বব্যাপী নিয়মগুলোকে সম্মান করবে। গণতন্ত্র ও উদার বাণিজ্য অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমাদের অঞ্চলের সম্মিলিত অগ্রগতি নিশ্চিত করতে আমরা আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই।’
ইফতারের আগে বিএনপির মহাসচিব কূটনীতিকদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। ইফতার অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন, জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস, কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ডেপুটি হেড অব মিশন জন ড্যানিলোভিচসহ রাশিয়া, জাপান, সংযুক্ত আবর আমিরাত, নরওয়ে, সুইডেন, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল, ইরাকসহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কূটনীতিকেরা অংশ নেন। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা কূটনীতিকদের নিয়ে আলাদা টেবিলে বসেন।
এ ছাড়া ইফতারে অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মনিরুজ্জামান, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সুজনের সম্পাদক ও নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান তোফায়েল আহমেদ, অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদকদের মধ্যে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, নয়াদিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, ইনকিলাব সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দিন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, দেশ রূপান্তর সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ, কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ, কালবেলা সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, ডেইলি সান সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস, সাংবাদিক মাসুদ কামাল, মোস্তফা ফিরোজ ও লেখক জাহেদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
ইফতারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফজলে এলাহী আকবর, আবদুল কাইয়ুম, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, বিজন কান্তি সরকার ও জহির উদ্দিন স্বপন, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, শামা ওবায়েদ, মীর হেলাল, মওদুদ হোসেন আলমগীর, তাবিথ আউয়াল, ইশরাক হোসেন অংশ নেন।
ইফতার ও মাগরিবের নামাজ শেষে কূটনীতিকসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা নৈশভোজে অংশ নেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক টন ত ক ব এনপ র আম দ র আবদ ল ইফত র আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২০২৪ সালের ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
গত ২৪ জুলাই সকালে ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।
খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। ওই রায়ের পর দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।
বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।
২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’
ঢাকা/কেএন/ইভা