নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি-২০২৫ এর শিরোপা জিতে নিয়েছে ভারত। দীর্ঘ এক যুগ পর তারা এই টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতল। ফাইনাল শেষে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি রজার বিনি চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়দের সাদা জ্যাকেট এবং ম্যাচ অফিসিয়ালদের মেডেল প্রদান করেন। অন্যদিকে আইসিসির নতুন চেয়ারম্যান জয় শাহ রোহিত শর্মার হাতে ট্রফি তুলে দেন এবং ভারতীয় খেলোয়াড়দের মেডেল প্রদান করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়াও।

কিন্তু সমাপনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) কোনো কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আর এই ঘটনায় আয়োজক দেশ পাকিস্তান অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। জানা গেছে, পিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুমায়ের আহমেদ, যিনি একইসঙ্গে টুর্নামেন্টের পরিচালকও, তিনি ভেন্যুতে উপস্থিত থাকলেও তাকে সমাপনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে ডাকা হয়নি।

আরও জানা যায়, পিসিবি চেয়ারম্যান মোহসিন নাকভী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পূর্বনির্ধারিত দায়িত্বের কারণে দুবাই যেতে পারেননি। তাই পিসিবির সিইওকে ফাইনাল ম্যাচ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ, বিসিসিআই সভাপতি রজার বিনি ও সচিব দেবজিত সাইকিয়া থাকলেও আয়োজক পাকিস্তানের কারো উপস্থিত না থাকাটা অবশ্য দৃষ্টিকটুই ছিল।

আরো পড়ুন:

দুই বছরের জন্য আইপিএল থেকে নিষিদ্ধ হওয়ার পথে ব্রুক

চ‌্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়: মাঠে বিরাট-আনুশকার আনন্দঘন মুহূর্ত

এদিকে বলা হচ্ছে, হয়তো পিসিবির সিইও আইসিসির সংশ্লিষ্ট আয়োজকদের সঙ্গে যথাযথভাবে যোগাযোগ করতে পারেননি। সে কারণেই তাকে ফাইনালের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ডাকা হয়নি। তাতে করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক হয়েও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে মঞ্চে কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না।
পিসিবি অবশ্য এ বিষয়ে আইসিসির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলার পরিকল্পনা করছে। তারা জানতে চাইবে, কেন তাদের সিইওকে সমাপনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

এদিকে, পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতারও ফাইনালের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পিসিবি কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছে, কিন্তু আমি লক্ষ্য করেছি ফাইনালের পর পিসিবির কোনো প্রতিনিধি সেখানে ছিল না। পাকিস্তান ছিল এই টুর্নামেন্টের আয়োজক। অথচ তাদের কেই মঞ্চে নেই! আমি এটা বুঝতে পারছি না এমনটি কেন হলো!’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘পিসিবির কেউ কেন সেখানে ছিল না ট্রফি তুলে দেওয়ার জন্য? এটা আমার বুঝে আসছে না। এটা ভেবে দেখা দরকার। এটা ছিল বিশ্বমঞ্চ, তোমাদের সেখানে থাকা উচিত ছিল। দেখে মন খারাপ লাগছে।’’

২৯ বছর পর পাকিস্তান আইসিসির কোনো বড় ইভেন্ট আয়োজন করেছিল এবার। কিন্তু নিরাপত্তার অজুহাতে ভারত পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে হাইব্রিড মডেলে ভারতের সবগুলো ম্যাচ দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ ন আইস স র ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।  

এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর  মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।

এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব  হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।

সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ