বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড রাফিনহা বলেছেন, দলের চিকিৎসক কার্লেস মিনারোর মৃত্যু শোক খেলোয়াড়দের জয়ের জন্য শক্তি জুগিয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ, ২০২৫) চ্যাম্পিয়নস লিগে বেনফিকার বিপক্ষে দারুণ একটা জয় পায় কাতালান ক্লাবটি।

ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রাফিনহার জোড়া গোলে বার্সেলোনা ৩-১ ব্যবধানে জয়লাভ করে বেনফিকার বিপক্ষে। তবে এই ম্যাচে কাতালান ক্লাবটির তরুণ উইঙ্গার লামিল ইয়ামাল একাই বেনফিকার নাভিশ্বাস তুলেছিলেন। এই ১৭ বছর বয়সী উইঙ্গার ছিলেন একটা মাইলফকও। দুই লেগ মিলিয়ে বার্সা ৪-১ গোলের আগ্রিগেটে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যায়।

ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ম্যাচের ১১ মিনিটে একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বেনফিকার ডি বক্সে ঢুকে যান ইয়ামাল। রাফিনহার কেবল ট্যাপ-ইন করে গোলটা করলেন। তবে মিনিট দুয়েক পরই কর্নারে দুর্দান্ত এক হেড করে আর্জেন্টাইন তারকা নিকলাস ওতামেন্দি সমতায় ফেরান বেনফিকাকে।

আরো পড়ুন:

দশ জনের বার্সার বিপক্ষে হারল বেনফিকা

পয়েন্টে শীর্ষে বার্সা, গোলে লেভানডোফস্কি

এরপর একের পর এক আক্রমণে বেনফিকার ডিফেন্সে কাঁপুনি ধরিয়ে দেন ইয়ামাল। বেনফিকার সুইডিশ লেফট ব্যাক স্যামুয়েল দাহল কোনোভাবেই আটকাতে পারছিলেন না ইয়ামালকে। ম্যাচের ২৭ মিনিটে ইয়ামাল আবারও এগিয়ে দেন স্বাগতিকদের। এই গোলের মাধ্যমে দারুণ একটা রেকর্ড গড়ে ফেললেন সদ্যই কৌশর পেরিয়ে আসা এই উইঞগার। চ্যাম্পিয়নস লিগে একই ম্যাচে গোল ও অ্যাসিস্ট করা সর্বকনিষ্ট ফুটবলার এখন ইয়ামাল; যার বয়স মাত্র ১৭ বছর ২৪১ দিন। ম্যাচের ৪২ মিনিটে নিজের জোড়া পূরণ করেন রাফিনহা। এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে ১১ গোল করেছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার।

এই জয়ের মাত্র তিন দিন আগে বার্সার চিকিৎসক মিনারো মৃত্যুবরণ করেন। মাত্র ৫৩ বছর বয়সী মিনারোর মৃত্যুর কারণ এখনও অফিসিয়ালি ঘোষণা করা হয়নি। তবে ম্যাচটা চিকিৎসককে উৎসর্গ করতে ভুল করলেন না রাফিনহা, “কার্লেসের মৃত্যুর পর আমরা এই ম্যাচে জয়ের সংকল্প নিয়ে এসেছিলাম।”

ম্যাচে বার্সার পারফরম্যান্সের ব্যাপারে বলতে গিয়ে রাফিনহা আরো যোগ করেন, “বেনফিকা খুব ভালো দল, আমি জানতাম তারা ভালো ট্রানজিশন তৈরি করে, কিন্তু ম্যাচে আমরাই বল নিয়ন্ত্রণ করেছি, এমনকি খেলাটাও। আমরা আরও গোল করতে পারতাম। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পেরেছি বলে আমরা খুশি যে আমরা।”

বার্সেলোনার কোচ হানসি ফ্লিকও এই জয়টি মিনারোর স্মৃতিতে উৎসর্গ করেন, “আমি ম্যাচের আগে বলেছিলাম যে আমরা কার্লেসের স্মৃতিকে সম্মান জানাতে চাই। কার্লেস সবসময় আমাদের সাথে থাকবে। সে আমাদের দলের একটা অংশ ছিল।” 

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ উইঙ গ র

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।  

এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর  মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।

এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব  হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।

সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ