ধর্ষণ ইস্যুতে শহরে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ
Published: 12th, March 2025 GMT
ধর্ষণ ইস্যুতে ২দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখা।
সংগঠনটির মহানগর শাখার সভাপতি এইচ.এম. শাহীন আদনান এর এর নেতৃত্বে বুধবার সন্ধ্যায় ১নং রেইল গেইট থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত এ বিক্ষোভ মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি খাইরুল আহসান মারজান, প্রধান অতিথি বলেন,এখন রমজান মাস ইফতার পরবর্তী সময় এখন আমাদের ইবাদত করার কথা কিন্তু আমাদের রাজপথে এখন আন্দোলন করতে হচ্ছে,এটা আমদের জন্য দু:খের বিষয়।
দেশব্যাপী ধর্ষণ চলছে ধর্ষকের বিচার হচ্ছে না বর্তমান সরকার ধর্ষকের বিচারের সময় কালক্ষেপন করছে,আমরা এতো কিছু বুঝি না,ধর্ষণের বিচার ৭২ ঘন্টার মধ্যে কার্যকর করতে হবে,তানাহলে যেই জনগণ ৩৬ দিনে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটিয়েছে সেই জনগণ নারী শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত না করার জন্য আপনার সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগর এর সভাপতি মুফতী মাসুম বিল্লাহ, মাসুম বিল্লাহ বলেন, কুমিল্লা ক্যান্টনম্যান্টে এক নারী সহ দেশে অনককে ধর্ষণ করে বিবস্ত্র করে ফেলে রেখেছে,যার বিচার আজোও হয়নি,আর বিচাহীনতার সংস্কৃতির কারনে আজকে এই অধ:পতন,এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি পরিবর্তন করে কঠোর বিচার করতে হবে এবং প্রত্যেক টি ধর্ষণের বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে করতে হবে।
সভাপতি এইচ এম শাহীন আদনান বলেন,দেশব্যাপী সকল ধর্ষণের বিচার ও ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আজকে আমরা সংগঠনের পক্ষ্য থেকে বিক্ষোভ মিছিলের মাধ্যমে ২দফা দাবী পেশ করছি,এক.
এসময় তিনি আরো বলেন,ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটি গত ৯মার্চ ঢাকায় দেশ ব্যাপী বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন,সে হিসেবে আজকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়,আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই অনতিবিলম্বে ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত না করা হলে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগর এর সহ-সভাপতি মুহা নোমান আহমেদ,সাধারণ সম্পাদক মুহা আবুল হাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী মুহা. তারেক হাসান,প্রশিক্ষন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম মোল্লা,দাওয়াহ সম্পাদক মুহাম্মাদ মাহবুব বিন আজাদ,তথ্য গবেষনা ও প্রচার সম্পাদক মুহা.খালেদ সাইফুল্লাহ সানভীর,প্রকাশনা ও দফতর সম্পাদক মুহাম্মাদ আমির হামজা,অর্থ ও কল্যান সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল সাইদ,বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক এম মাহদী হাসান,কওমী মাদ্রাসা সম্পাদক এইচ এম ইউসুফ আহমদ,আলিয়া মাদ্রাসা সম্পাদক গাজী মুহাম্মাদ সাইম হোসেন,স্কুল ও কলেজ সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ রুহুল আমিন,সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মুহাম্মাদ আবরারুল করীম,কার্যনির্বাহী সদস্য নাজমুল ইসলাম রাফিন ও থানা,ওয়ার্ড নেতৃত্ববৃন্দ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ল ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।