মাঠে থেকেই সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে বিএনপি
Published: 13th, March 2025 GMT
সংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের গড়িমসিসহ সব ষড়যন্ত্র মাঠে থেকেই মোকাবিলা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। দলটি মনে করছে, গণপরিষদ নির্বাচন, সেকেন্ড রিপাবলিক ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি তুলে জাতীয় নির্বাচনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে। এর পেছনে সরকারের একাধিক উপদেষ্টার মদদ রয়েছে। গত সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে বলা হয়, সরকার বিএনপি ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক দলকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গুরুত্ব দিচ্ছে না। একটি ইসলামী দল, তরুণদের জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের রাজনৈতিক শক্তি ভাবে সরকার। তারা সহজে ক্ষমতা ছাড়বে বা নির্বাচন দেবে বলে মনে হচ্ছে না।
সূত্র জানায়, বৈঠকে একাধিক নেতা বলেছেন, সরকার এনজিওর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। সম্প্রতি বিভিন্ন জেলা-মহানগরে সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে অবস্থান জানান দেওয়া হয়েছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। ঈদের পর নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচির ব্যাপারে নতুন সিদ্ধান্ত আসবে।
বৈঠকে বলা হয়, একটি গোষ্ঠী অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করতে নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তারা যে কোনো মূল্যে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়। সরকারের মধ্যেও এই গোষ্ঠীর লোকজন রয়েছে, যে কারণে সরকারপ্রধান প্রকৃত অবস্থা বুঝতে পারছেন না। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর কিছু ব্যবসায়ী ও তাদের প্রতিষ্ঠান এই ষড়যন্ত্রে রয়েছে। অনেক ব্যবসায়ীর নামে জুলাই-আগস্টের হত্যা মামলা থাকলেও গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এমনকি সচিবালয়ে বসেও তারা সরকারের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এদের প্রশ্রয় দিচ্ছে দুটি দল। এসবের পরও সরকারের ওপর বিএনপির আকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এতে অংশ নেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ষড়যন ত র সরক র র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে হত্যায় বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার, পরিবার বলছে ষড়যন্ত্র
কুমিল্লার মুরাদনগরে দুই সন্তানসহ নারীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আলম সরকারকে গ্রেপ্তার করেছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নে পীর কাশিমপুর গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শাহ আলম একই এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান। ডিবি পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তার দাবি, প্রাথমিক তদন্তে ওই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা মেলায় শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ওই তিন খুনের মামলায় এজাহারনামীয় আসামি।
আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা অপেক্ষার পর আর স্বীকারোক্তি দেননি ‘অন্যতম পরিকল্পনাকারী’০৬ জুলাই ২০২৫তবে শাহ আলম ওই মামলার প্রকৃত আসামি নন বলে দাবি করেছেন তাঁর ছেলে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আজিজ সরকার। তিনি বলেন, ‘ডিবি পুলিশ বলছে, আমার বাবাকে ট্রিপল মার্ডার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তিনি এজাহারনামীয় আসামি। তবে এ মামলার এজাহারের ২৫ নম্বরে থাকা শাহ আলম নামের আসামির বয়স ৪০ বছর। আর আমার বাবার বয়স ৭০ বছরের বেশি। এ ছাড়া আমার দাদার নাম জানেন না, এলাকায় এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাহলে আসামির পিতার নাম অজ্ঞাত রাখা হলো কেন? এটা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র। আমার বাবাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্য এই মামলায় গ্রেপ্তার করানো হয়েছে।’
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিনও বিষয়টি ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে শুনিনি তিনি (শাহ আলম) এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া ঘটনার সময় বা আগে-পরের কোনো সিসিটিভি ফুটেজে তাঁকে দেখা যায়নি। আমার মনে হয়, কোথাও ভুল হচ্ছে। তাঁকে অযথা গ্রেপ্তার করে বৃদ্ধ বয়সে হয়রানি করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুনকুমিল্লায় মা, মেয়ে ও ছেলেকে হত্যার মামলায় আরও ৬ জন গ্রেপ্তার০৫ জুলাই ২০২৫ঘটনার সময় শাহ আলম ঘটনাস্থলে ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত নন বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী রিক্তা আক্তার। আজ সকালে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনায় পীর কাশিমপুরের শাহ আলম নামের একজন জড়িত বলে যখন জানতে পেরেছি, তখন মামলায় নামটি উল্লেখ করেছি। পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারিনি বলে আমি মামলাতে আসামির বাবার নাম অজ্ঞাত রেখেছি। ডিবি পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। আমি কাউকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করতে চাই না। ডিবি পুলিশের তদন্তে যদি তিনি ঘটনায় জড়িত থাকেন, তাহলে গ্রেপ্তার করুক; না হলে, আমি চাই না কোনো নিরীহ মানুষের হয়রানি হোক।’
ঘটনার প্রায় এক মাস পার হলেও প্রধান আসামি শিমুল বিল্লাহ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় ক্ষোভ ও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রিক্তা। তিনি বলেন, ‘শিমুল গ্রেপ্তার না হলে যেকোনো সময় আমার ওপর হামলা হতে পারে, আমাকে হত্যাও করতে পারে। আমি দ্রুত তার গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুনকুমিল্লায় মা, মেয়ে ও ছেলেকে হত্যার ৩৯ ঘণ্টা পর মামলা, আটক ২০৫ জুলাই ২০২৫সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সঙ্গে শাহ আলমের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে মামলাটির মোট ১০ আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। ৯ আসামি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। নতুন করে গ্রেপ্তার শাহ আলমকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
৩ জুলাই সকালে উপজেলার কড়ইবাড়ি গ্রামে মা, ছেলেমেয়েসহ একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন ওই গ্রামের রোকসানা বেগম (৫৩), তাঁর ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার (২৯)। পরদিন রাতে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় মামলা করেন রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার। ওই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আকুবপুর ইউপির চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহকে। তিনি পলাতক আছেন।
আরও পড়ুনমুঠোফোন চুরিকে কেন্দ্র করে খেপিয়ে তোলা হয় এলাকাবাসীকে০৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনকুমিল্লায় মাদক বেচাকেনার অভিযোগে মা ও দুই সন্তানকে গণপিটুনি, কুপিয়ে হত্যা০৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনস্থানীয় ইউপি সদস্যের পরিকল্পনায় মুরাদনগরে ‘মব’ সৃষ্টি করে তিনজনকে হত্যা০৫ জুলাই ২০২৫