রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ধর্ষণবিরোধী গণপদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে, তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে বলেছে এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ফোরাম-এশিয়া)। একই সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকার সমুন্নত রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেছে তারা।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংস্থার নেটওয়ার্ক ফোরাম–এশিয়া আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের আইনি হয়রানি ও তাঁদের ওপর বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নিন্দা জানানো হয়। যৌন নিপীড়নের বিচারের দাবিতে ১১ মার্চ (মঙ্গলবার) আয়োজিত এক মিছিল ঘিরে এ ঘটনা ঘটে।

বিবৃতিতে বলা হয়, নারী অধিকারকর্মীসহ মানবাধিকারকর্মী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিশানা করার ঘটনা বাংলাদেশে ভিন্নমতকে ক্রমাগতভাবে অপরাধ হিসেবে দেখার চিত্রই তুলে ধরছে। এটা ইতিমধ্যে অবদমিত নাগরিক সমাজের ভূমিকাকে আরও সংকুচিত করছে।

ফোরাম–এশিয়া বলেছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক বিগত সরকারগুলোর দমনমূলক কৌশলের ধারাবাহিকতাকে প্রতিফলিত করছে।

ফোরাম এশিয়ার নির্বাহী পরিচালক মেরি আইলিন ডায়াজ-বাকালসো বলেন, ‘মানবাধিকারকর্মী শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাত বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব অভিযোগ অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং তাঁদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার ও নতুন করে হয়রানি থেকে সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে ফোরাম–এশিয়া।’

ফোরাম–এশিয়ার নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘ভিন্নমতকে সহিংসভাবে দমনের পরিবর্তে বাংলাদেশকে অবশ্যই জনগণের মতপ্রকাশ, শান্তিপূর্ণ সভা–সমাবেশ ও জমায়েতের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখতে হবে।’

নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা করে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ মোড় পেরিয়ে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পৌঁছালে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পরদিন রমনা থানায় একটি মামলা করে। মামলায় আসামি হিসেবে বামপন্থী কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের ১২ জন নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৭০ থেকে ৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরও পড়ুনপুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা১২ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।

আরো পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।

যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।

লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।

বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ