ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি একসঙ্গে লাগানো। ওজন প্রায় ২৭৯ টন। রেললাইনের ওপর থাকা এমন ভারী ট্রেনকে টেনে নিয়ে যাওয়াই তো একজন মানুষের জন্য ‘অসম্ভব’ কাজ। আর যদি কেউ শুধু দাঁত দিয়ে সেই ট্রেন টেনে নিয়ে যান, তাহলে তো বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই। এমন ‘বিস্ময়কর’ কাজটিই করেছেন মিসরের কুস্তিগীর আশরাফ মাহরুস। কাবোঙ্গা নামেও তিনি সে দেশে বেশ পরিচিত। তাঁর অবিশ্বাস্য শক্তির বেশ কিছু নমুনার মধ্যে এটি একটি।
আশরাফ এ সপ্তাহে তিনটি ক্যাটাগরিতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, কেবল দাঁত দিয়ে ট্রেন টেনে নিয়ে যাওয়া। অন্য দুটি স্বীকৃতি হচ্ছে, ভারী লোকোমোটিভ টেনে নিয়ে যাওয়া এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে গাড়িকে ১০০ মিটার টেনে নেওয়া।
আশরাফ বলেন, তিনি ২ টন ওজন লোকোমোটিভ মাত্র ৪০ সেকেন্ডে টেনে নিয়ে যান।
মিসরের রাজধানী কায়রোর রামসেস রেলস্টেশনে গত বৃহস্পতিবার আশরাফের ট্রেন টেনে নিয়ে যাওয়া দেখতে বিপুলসংখ্যক মানুষ উপস্থিত হন। দড়িতে বেঁধে তিনি যখন দাঁত দিয়ে ২৭৯ টন ট্রেন টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন উপস্থিত মানুষ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছিলেন। আশরাফ দাঁত দিয়ে ট্রেনটি ১০ মিটার (৩৩ ফুট) টেনে নিয়ে যান।
এরপর আশরাফ নিজের বাহু দিয়ে ট্রেনটি টেনে নিয়ে যেমন নিজের কৃতিত্বকে আরও বেশি করে ফুটিয়ে তোলেন, তেমনি উপস্থিত মানুষও তাঁর এমন বিস্ময়কর কাজ উপভোগ করেন।
৪০ বছর বয়সী আশরাফ কুস্তিগীরদের সংগঠন ইজিপশিয়ান ফেডারেশন ফর প্রফেশনাল রেসলার্সের প্রেসিডেন্ট। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাত্র ৩০ সেকেন্ডে ১১টি ডিম ভেঙে কাঁচা খেয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন। এর আগে ২০২১ সালে তিনি ১৫ হাজার ৭৩০ কিলোগ্রাম ওজনের ট্রাক দাঁত দিয়ে টেনে নিয়ে রেকর্ড করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার আশরাফের ওই ট্রেন টেনে নেওয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজকদের একজন দৌলত এলনাকেব বলেন, চূড়ান্ত প্রতিযোগিতার আগে আশরাফ মাত্র ২০ দিন অনুশীলন করেছিলেন। তা–ও নিয়মিত ছিল না।
দৌলত বলেন, আশরাফের আসলে ‘অস্বাভাবিক শক্তি’ রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র আশর ফ
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
মাকিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে চুক্তি বাতিলকারী দেশগুলোর জন্য একটি স্পষ্ট বার্তা নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর তার সেই বার্তাটি হচ্ছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি দাঙ্গাবাজ দেশ, যাকে বিশ্বাস করা যায় না।
শুল্ক স্থগিতাদেশের সময় চীন ছাড়া সবদেশকে বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করার জন্য ট্রাম্প যে ৯০ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন, সেই সময়ের মধ্যে চীনা কর্মকর্তারা বিদেশী সরকারগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঠেলে দেওয়ার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, একবার এই চুক্তিগুলো কার্যকর হয়ে গেলে, তিনি চান মার্কিন মিত্ররা ‘একটি দল হিসেবে চীনের সাথে যোগাযোগ করুক’, যাতে মার্কিন পক্ষ আলোচনায় আরো বেশি সুবিধা পায়।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে শুরু করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্যন্ত মার্কিন মিত্ররা নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটনের উপর নির্ভর করে এবং অর্থনৈতিকভাবে ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করার জন্য তাদের উৎসাহ রয়েছে। অবশ্য চীন আরো সমান তালে শুল্ক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্পের শেষ বাণিজ্য যুদ্ধের পর থেকে বেইজিং মার্কিন রপ্তানি থেকে তার অর্থনীতিকে মুক্ত করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। দেশটিতে নিবেদিতপ্রাণ এবং সক্রিয় সৈন্য সংখ্যার বিচারে বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক বাহিনী রয়েছে।
শি ট্রাম্পের সাথে ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং তার সরকার ‘পাল্টাপাল্টি’ শুল্ক বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র জোর দিয়ে বলছে যে, অন্য পক্ষ, অর্থাৎ চীনকে উত্তেজনা কমানোর প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে, চীন নিজেকে নিয়মভিত্তিক ব্যবস্থার একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে উপস্থাপন করছে এবং অন্যান্য দেশকে ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে।
সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর আমেরিকান স্টাডিজের পরিচালক উ জিনবো বলেন, “এটি কেবল চীন-মার্কিন সম্পর্কে নয়। এটি আসলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে।”
গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতিবিদদের সাথে দেখা করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়া উ জানান, অন্যান্য সরকারেরও বুঝতে হবে বেইজিংয়ের প্রচেষ্টা তাদের উপকার করেছে।
তিনি বলেন, “যদি চীন আমেরিকার বিরুদ্ধে না দাঁড়াত, তাহলে আমেরিকা কীভাবে তাদের ৯০ দিনের বিরতি দিত। চীনের উপর শুল্ক আরোপের ফলে ট্রাম্প অন্যান্য দেশের উপর শুল্ক আরোপ বন্ধ করার জন্য আবরণ পেয়েছেন। তাদের এটা উপলব্ধি করা উচিত।”
চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই সোমবার ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ব্রিকস ব্লকের দেশগুলোকে ট্রাম্পের দাবি প্রতিহত করার জন্য বেইজিংয়ের সাথে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, “আপনি যদি নীরব থাকেন, আপস করেন এবং পিছু হটতে চান, তাহলে এটি কেবল বুলিকে আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।”
তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘন্টা পরে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইংরেজি সাবটাইটেলসহ একটি ভিডিওতে ওয়াশিংটনকে ‘সাম্রাজ্যবাদী’ শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, গত শতাব্দীতে জাপানি রপ্তানি সীমিত করার মার্কিন পদক্ষেপ তোশিবার মতো কোম্পানিগুলোকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
ওয়াং ই বলেছেন, “একজন ধর্ষকের কাছে মাথা নত করা ঠিক তৃষ্ণা নিবারণের জন্য বিষ পান করার মতো, এটি কেবল সংকটকে আরো গভীর করে তোলে। চীন পিছু হটবে না যাতে দুর্বলদের কণ্ঠস্বর শোনা যায়।”
ঢাকা/শাহেদ