ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধে বিপদে পড়তে পারে বন্ধু মাস্কের টেসলা
Published: 15th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বিপদে পড়তে পারে ইলন মাস্কের বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা। প্রতিষ্ঠানটি সতর্ক করে বলেছে, ট্রাম্পের শুল্কনীতির ফলে মার্কিন রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, কারণ অন্যান্য দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর প্রতিশোধমূলক শুল্ক চাপাতে পারে।
শুক্রবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধির কাছে পাঠানো টেসলার এক চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি বৈষম্যমুক্ত বাণিজ্যের পক্ষপাতী। তবে আশঙ্কার বিষয় যদি অন্যরা প্রতিশোধমূলক শুল্ক চাপায় তাহলে মার্কিন রপ্তানিকারকরা বৈষম্যমূলক পরিস্থিতিতে পড়বে।
মিত্র মাস্ককে ট্রাম্প সরকারি খরচ কমানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। ১১ মার্চ ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে টেসলার প্রচারণা করেছিলেন। চিঠিতে সেই তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এটি এখনো স্পষ্ট নয়, কে সেই সইহীন চিঠিটি লিখেছিলেন। অথবা মাস্ক বিষয়টি জানেন কিনা।
চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত টেসলার শেয়ারের দাম ৪০ শতাংশ কমেছে। এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী মাস্ক। অনেকের অভিযোগ, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতি করছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গত বছর টেসলার বিক্রি কম যাওয়া ও উৎপাদন লক্ষ্য পূরণ না করার প্রেক্ষাপটে শেয়ারের দাম কমে যাওয়া বেশি উদ্বেগের।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, টেসলা এর সরবরাহ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনছে। যাতে আরও বেশি সংখ্যক স্থানীয় পরিবেশক গাড়ি ও ব্যাটারি সরবরাহ করতে পারেন। বিদেশিদের ওপর নির্ভরতা যেন কমে যায়।
তবে এতে সতর্ক করে বলা হয়, স্থানীয়ভাবে গাড়ির সব যন্ত্রাংশ ও উপকরণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে সংগ্রহের চেষ্টা করা হলেও সবকিছু যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া যাবে না।
মার্কিন সরকার চীনের সব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করেছে। বেইজিংও গাড়িসহ বেশ কয়েকটি মার্কিন পণ্যে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পর চীন টেসলার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার। গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউসের অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেছিলেন, যারা টেসলার বিরোধিতা করছে তাদেরকে 'সন্ত্রাসী' হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সির প্রধান ইলন মাস্ক সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর খরচ কমাতে অদক্ষ কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে টেসলার শোরুমগুলোর সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে। তাদেরকে হুমকি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, বিক্ষোভকারীরা 'একটি বিখ্যাত মার্কিন প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করছে'। কেউ এই বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির প্রতিষ্ঠানে হামলা চালালে তাকে 'জাহান্নামে যেতে হবে'।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করা ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপ করায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডাও প্রতিশোধমূলক শুল্কের হুমকি দিয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।