ধর্ষণের মামলায় ফাঁসির সাজা নির্ধারণসহ নারী ও শিশু নিপীড়ন রোধে পাঁচ দাবি জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগ। এ দাবিতে শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন তারা। জামায়াতের হাজারখানেক নারী নেতাকর্মী মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ধর্ষণের বিচারের দাবিতে স্লোগান দেন।

ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াতের নারী নেতাকর্মীদের এতদিন সভা, সমাবেশ, মিছিলের মতো প্রকাশ্য কর্মসূচির দেখা যায়নি। নারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দলীয় বার্তা পৌঁছাতেন। ৫ আগস্টের পরও নারী নেতাকর্মীরা ছিলেন আড়ালে। তবে সপ্তাহখানেক আগে থেকে নারী নেতাকর্মীদের সামনে আনতে শুরু করেছে জামায়াত। প্রথমবারের মতো রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্য কর্মসূচি করছেন নারীরা।

শনিবার জামায়াতের মহিলা বিভাগের মানববন্ধন থেকে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘বেঁচে থাকা ও নিরাপত্তার অধিকার দাও', ‘ধর্ষকদের প্রকাশ্য জনসম্মুখে ফাঁসি চাই, দিতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি কর, করতে হবে’, ‘ধর্ষণ মামলায় জামিন বিধান বাতিল কর, করত হবে’, ‘ধর্ষণ মামলায় এক বিধান, এক শাস্তি; ধর্ষককে ফাঁসি দিবি, দিতে হবে’।

জামায়াতের মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি নুরন্নিসা সিদ্দিকা বলেন, ‘মাগুরার শিশু আছিয়া হত্যার মামলার রায় এক সাপ্তাহের মধ্যে দিতে হবে। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। ধর্ষণের একমাত্র সাজা হবে ফাঁসি। ধর্ষকরা যুগে যুগে আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় সমাজ থেকে ধর্ষণ দূর করা যায়নি। ধর্ষককে জনসম্মুখে ফাঁসি দিতে হবে। তাহলে আর কেউ ধর্ষণের সাহস পাবে না। ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ষণ মামলা নিষ্পত্তির ঘোষণার বাস্তবায়ন চাই।’

জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাবিকুন্নাহার মুন্নী বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচার সরকারের ছত্রছায়ায় ধর্ষণের বিস্তার হয়েছে সমাজে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থন থাকলেও, পাঁচ দাবি বাস্তবায়ন না করলে নারী সমাজকে কঠোর আন্দোলনে যেতে হবে।’

মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য নাজমুন্নাহার নীল, মহিলা বিভাগের সহকারী সেক্রেটারি সাঈদা রুম্মান ও মার্জিয়া বেগম প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ত কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দর নির্বাচনী আসনকে দুই ভাগে বিভক্তি করার প্রতিবাদে মানববন্ধন 
  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’