ফরিদপুরে মোবাইলে ‘অশ্লীল’ ভিডিও দেখিয়ে দুই শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে রেজাউল মুন্সী (৫৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুর সদরের ডিক্রির চর ইউনিয়নের সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকায় নদী বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে কার্গো ও ডকইয়ার্ডের ব্যবসা করে আসছেন রেজাউল মুন্সী। রোববার বিকেলে সিঅ্যান্ডবি সংলগ্ন এলাকায় ১০ ও ১২ বছর বয়সী দুই কন্যা শিশুকে ডেকে নিয়ে নিজের মোবাইলে থাকা অশ্লীল ভিডিও দেখিয়ে তাদের ধর্ষণের চেষ্টা করেন রেজাউল। বিষয়টি বাড়িতে গিয়ে শিশুরা তাদের পরিবারের সদস্যদের জানায়। এর জেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিশুদের পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী রেজাউল মুন্সীকে একটি দোকানে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা ওই ব্যবসায়ীকে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রেজাউল মুন্সীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে থানা নিয়ে আসেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আসাদউজ্জামান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সেনাবাহিনীর সহায়তায় রেজাউল মুন্সীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সেখানে পুলিশ-সেনাবাহিনীর সদস্যরা পৌঁছানোর আগেই উত্তেজিত জনতা তাকে মারধর করে। এতে তিনি আহত হয়েছেন।

ওসি আরও বলেন, ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জ উল ম ন স র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না

মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।

আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।

বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’

এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্‌স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ