মিয়ানমার সীমান্তে গুলিবিদ্ধ দুই বাংলাদেশি
Published: 22nd, March 2025 GMT
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ভেতরে গুলিতে দুই বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শনিবার সকালে স্থানীয়রা মিয়ানমারের সীমানায় গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। আহতদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম (২০) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে প্রথমে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহত জাহাঙ্গীর আলম ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুরুল কবিরের ছেলে। আহত অপরজন রোহিঙ্গা নাগরিক মোহাম্মদ হোসেন (২৭), যিনি ঘুমধুমের ভাজাবনিয়া এলাকায় বসবাসরত মিয়ানমার নাগরিক আব্দুল হাকিমের ছেলে। তাকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ জাফর ইকবাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আহত জাহাঙ্গীর বর্তমানে চিকিৎসাধীন। তার বাম পায়ে দুটি গুলি লেগেছে। অপরজন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে।
আহতদের পরিবার জানিয়েছে, জাহাঙ্গীর সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় চাষাবাদের জমিতে পানি দিতে গিয়েছিলেন। তবে স্থানীয় একটি সূত্র দাবি করেছে, তারা মিয়ানমারের ভেতরে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সীমান্ত এলাকায় চোরাকারবারিদের আনাগোনার কারণে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে জান্তার সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিদ্রোহীরা ঘুমধুম সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের দুটি বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) চৌকি দখল করে।
সীমান্তের মিয়ানমার অংশে বিভিন্ন রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতার তথ্যও পাওয়া গেছে। তবে কার গুলিতে এই দুই যুবক আহত হয়েছেন, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।