চাঁদ রাতে শ্রীমঙ্গল রণক্ষেত্র, সাবেক মেয়রসহ আটক ১৪
Published: 31st, March 2025 GMT
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ৪ ঘণ্টার সংঘর্ষে শ্রীমঙ্গল আতঙ্কের শহরে পরিণত হয়েছে। চাঁদ রাতের এ ঘটনায় ঈদের জমজমাট বাজার মুহূর্তে সব তছনছ হয়ে যায়। পরে পুলিশ ৫৬ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর রাত ৩টা পর্যন্ত। এ দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে যৌথবাহিনী শহরে টহল দিচ্ছে।
জানা যায়, শ্রীমঙ্গল পৌর এলাকার গদারবাজার এলাকার খাস ভূমিতে জেলা বিএনপি নেতা, সাবেক মেয়র মহসিন মিয়া মধু বিনা লাভের দোকানের নামে ও কয়েকজন ফল ব্যবসায়ী দখলদারিত্ব কায়েমের চেষ্টা করছিলেন। অন্যদিকে একই স্থানে ইজিবাইক চালকরা সেখানে তাদের স্ট্যান্ড গড়ে তোলার লক্ষ্যে যানবাহন থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করাতেন। চাঁদ রাত সাড়ে ১১টার দিকে একজন চালক বিনা লাভের দোকানের পাশে একটি ইজিবাইক রাখেন। এ সময় দোকানের সেলসম্যান বাধা দেন। তখন দুইজনের মাঝে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের আনহার মেম্বার বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে সাবেক মেয়রসহ ৪০-৫০ জন যুবক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ উপস্থিত হলে উপস্থিত সকলের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অপরদিকে ইজিবাইক শ্রমিকদের পক্ষে পশ্চিম ভাড়াউড়া এলাকা থেকে কয়েকশ লোক যোগ দিলে উভয় পক্ষের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ফলে শ্রীমঙ্গল শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা রাত তিনটা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। পরে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ ৫৬ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ দিকে মৌলভীবাজার জেলার পাইকারি ও সস্তা দরে কেনা-বেচার জন্য শ্রীমঙ্গলের বিপণী বিতান ও মার্কেটের উপচে পড়া ভিড় মুহূর্তে ফাঁকা হয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর সাবেক মেয়রের বাসা ও কয়েকটি বাসা-বাড়িতে যৌথ অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
ওসি (তদন্ত) মোবারক হোসেন জানান, আহতদের অনেকে শ্রীমঙ্গল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। আটককৃতদের মাঝে সাবেক মেয়র মহসিন মিয়া মধু, তার ছেলে মুরাদ হোসেন সুমন, আলকাছ কাউন্সিলর ও মেয়রের চাচাত ভাই সেলিম মিয়া নাম জানা গেছে।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আমিনুল ইসলাম সরকার ১৪ জনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে সোমবার সাড়ে ১১টার দিকে জানান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখনও কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি।
তিনি আরও জানান, রোববার দিবাগত রাতের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ৫৬ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে। অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।