ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য ই–মেইল নিরাপত্তা আরও সহজ করতে নতুন এনক্রিপশন প্রযুক্তি চালু করছে গুগল। নতুন এই প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে জিমেইল ব্যবহারকারীরা সহজেই এনক্রিপ্টেড ই–মেইল পাঠাতে পারবেন। গুগল জানিয়েছে, নতুন প্রযুক্তিটি ব্যবহারের জন্য প্রেরক ও প্রাপককে আলাদা কোনো সফটওয়্যার ইনস্টল বা এনক্রিপশন সার্টিফিকেট বিনিময় করতে হবে না। আর তাই প্রযুক্তিটি প্রচলিত এনক্রিপশন পদ্ধতির তুলনায় সহজ ও ব্যবহারবান্ধব।

গুগলের তথ্যমতে, গতকাল বুধবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন এনক্রিপশন প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে শুধু একই প্রতিষ্ঠানের জিমেইল ব্যবহারকারীদের মধ্যে এনক্রিপ্টেড ই–মেইল পাঠানো যাবে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এটি সব জিমেইল ব্যবহারকারীর জন্য চালু করা হবে। নতুন এই নিরাপত্তাব্যবস্থা ক্লায়েন্ট-সাইড এনক্রিপশন প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে ‘এনক্রিপশন কি’ ব্যবস্থাপনার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে প্রতিষ্ঠানের হাতে। তবে প্রযুক্তিটি পুরোপুরি এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন নয়।

আরও পড়ুনজিমেইলে ই-মেইল শিডিউল করে রাখবেন যেভাবে১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বর্তমানে জিমেইল সিকিউর মাল্টিপারপাস ইন্টারনেট মেইল এক্সটেনশনস প্রটোকলের মাধ্যমে এনক্রিপশন সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে এই পদ্ধতিতে এক্সটারনাল ই–মেইল পাঠাতে হলে প্রাপককে এই প্রটোকল কনফিগার করতে হয়, যা অপেক্ষাকৃত জটিল। নতুন এনক্রিপশন প্রযুক্তি চালু হলে এ জটিলতা অনেকটাই কমে যাবে।

আরও পড়ুনজিমেইল অ্যাকাউন্টের জায়গা খালি করবেন যেভাবে৩০ আগস্ট ২০২৪

নতুন এনক্রিপশন প্রযুক্তিতে ই–মেইল লেখার সময় ব্যবহারকারীরা ‘অ্যাডিশনাল এনক্রিপশন’ অপশন চালু করলেই বার্তা এনক্রিপ্ট হয়ে যাবে। যদি প্রাপক জিমেইল ব্যবহার না করেন তবে তিনি একটি লিংক পাবেন, যেখানে অতিথি হিসেবে গুগল ওয়ার্কস্পেস অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করে ই–মেইল পড়ার পাশাপাশি উত্তর দেওয়া যাবে।

সূত্র: দ্য ভার্জ

আরও পড়ুনজিমেইলের এই পাঁচ সুবিধার কথা জানেন তো০২ জুলাই ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ