পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ঘরের মেঝেসহ বাড়ির বিভিন্ন স্থানে প্রেমিকের রক্ত ছিটিয়ে নিখোঁজ হওয়ার নাটক সাজানো গৃহবধূ আঁখি আক্তারকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রিশিবপুর ইউনিয়নের পাদ্রিশিবপুর গ্রাম থেকে তাকে আটক করা হয়। গৃহবধূর প্রেমিক হাসান মাহমুদও (৩২) আটক হন।

রবিবার (৬ এপ্রিল) এতথ্য জানান কলাপাড়া থানার ওসি তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমান। 

এর আগে, কলাপাড়া উপজেলার চাকামাইয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চাকামইয়া গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন আাঁখি। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় অনেকে ধারণা করেন, তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার উদ্দেশ্যে অপরহরণ করা হয়েছিল উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন আঁখির বাবা আলমগীর হাওলাদার। ওই মামলায় আাঁখির স্বামী আলমগীর হোসেনসহ শ্বশুর বাড়ির ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। এরপর ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে আঁখি আক্তার ও তার প্রেমিকা মাহমুদ হাসানকে পাদ্রিশিবপুর গ্রাম থেকে আটক করে। 

আরো পড়ুন:

ডাবল মার্ডারে গ্রেপ্তার, তাহসিন হত্যাকাণ্ডে রিমান্ডে ছোট সাজ্জাদ

শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি

পুলিশ জানায়, প্রায় ৯ মাস আগে আঁখি আক্তারের ছোট বোনকে দেখতে তার বাবার বাড়ি বাকেরগঞ্জের পূর্ব মহেষপুর গ্রামে যান হাসান। সে সময় হাসান আঁখি আক্তারের বোনকে পছন্দ করলেও তারা হাসানকে পছন্দ করেনি। বিষয়টি হাসানকে ফোন করে জানান আঁখি। এরপর তাদের মধ্যে মোবাইল ফোনে কয়েকবার কথা হয়। এক পর্যায়ে হাসানের সঙ্গে আঁখির প্রেমর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। 

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হাসান আঁখিকে নিয়ে যেতে কলাপাড়ায় আসেন। তার আগে তিনি আমতলীতে নিজের একব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে আঁখির স্বামী আলমগীর হোসেনের বাড়ি কলাপাড়ার পশ্চিম চাকামাইয়া যান। আঁখি তার প্রেমিকের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে স্বামীর ঘরের মেঝেসহ বাড়ির বিভিন্ন স্থানে ছিটিয়ে দেন। পরে তিন সন্তানকে রেখে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যান আঁখি। এ ঘটনায় ওই দিন হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে স্বামী আলমগীর হোসেনসহ শ্বশুর বাড়ির ৯ জনের নামে থানায় মামলা করেন আঁখির বাবা আলমগীর হাওলাদার। পরে পুলিশ স্বামী আলমগীরসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে আছেন। 

আঁখিকে খুঁজে বের করতে মাঠে নামে জেলা গোয়েন্দা শাখা ও থানা পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা পুলিশ হাসানের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে গৃহবধূ ও তার প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। 

কলাপাড়া থানার ওসি তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‍“ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে গৃহবধূ আঁখি ও তার প্রেমিক হাসনকে আটক করেছে। তার পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন। আটকের সময় হাসানের বাড়িতে শুধু তার মা উপস্থিত ছিলেন। আটককৃতদের আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক আলমগ র হ কল প ড় গ হবধ

এছাড়াও পড়ুন:

রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।

গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।

রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিকল্পিতভাবে প্রচারণা চলছে যে বিএনপি সংস্কারের বিরোধী: মির্জা ফখরুল
  • কাঁচাপাট রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিজেএ চেয়ারম্যানের
  • বাবাকে না পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে যায় শিশু, মুহূর্তে ট্রাকচাপায় নিহত
  • রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
  • ক্ষুব্ধ-বিরক্ত আঁখি বললেন, ভণ্ডামি থেকে মুক্তি চাই
  • ‘বয়স বাড়ছে, বুঝে ফেলি কে মিথ্যা বলে’—ফেসবুকে আঁখি আলমগীর