ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ওআইসিকে পদক্ষেপ নিতে জামায়াতের আহ্বান
Published: 7th, April 2025 GMT
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি না মেনে ইসরায়েলের হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার উদ্যাগে এ আয়োজন হয়।
আজ সোমবার বিকেল চারটায় মহাখালীতে পথসভা সভা করে দলটি। এরপর সেখান থেকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি মুহাম্মদ রেজাউল করিমের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মহাখালী থেকে নাবিস্কো হয়ে মগবাজারে এসে শেষ হয়।
পথসভায় রেজাউল করিম ইসরায়েলকে সন্ত্রাসী ও দখলদারি দেশ বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে গাজায় গণহত্যা চালিয়েছে। হাজার হাজার শিশু, নারী-পুরুষকে হত্যা করেছে। একের পর এক যুদ্ধাপরাধ করেছে।
গাজায় গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘ, ওআইসি, আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ ও বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান এই নেতা। পাশাপাশি তিনি ইসলামি রাষ্ট্রগুলোকে একত্র করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থাকে (ওআইসি) এ যুদ্ধ বন্ধে অবিলম্বে বৈঠক ডাকার আহ্বানও জানান।
গাজায় গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে ইসরায়েলকে যারা ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন রেজাউল করিম। তিনি বলেন, অবিলম্বে এসব বন্ধ না হলে গোটা বিশ্বের মুসলিম ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলবে। মুসলিমরা ইসরায়েল ও তাদের সহযোগী রাষ্ট্রগুলোর পণ্য বর্জন করবে।
পথসভা শেষে মিছিল বের হয়। মিছিল থেকে ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘বিশ্বের মুসলিম এক হও’, ‘বদরের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘শিশুদের ওপর হামলা কেন’, ‘ফিলিস্তিনে হামলা কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’ এমন স্লোগান দেওয়া হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল গণহত য ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।