মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে মাঠে নামবে রিয়াল মাদ্রিদ। লন্ডনের এমিরেটস স্টেডিয়ামে প্রথম লেগে লস ব্ল্যাঙ্কসদের প্রতিপক্ষ আর্সেনাল। এই ম্যাচটা রিয়ালের প্রতিষোধের ম্যাচ।

তর্কাতীত ভাবেই চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসের সেরা দল রিয়াল মাদ্রিদ। নামের পাশে ১৫টি শিরোপা সেই দাবিকে সত্যতা দেয়। তবে লস ব্ল্যাঙ্কসরা ২০০৪/০৫ থেকে ২০০৯/১০ মৌসুম পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারেনি। সেটা তাদের চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত।ততদিনে রিয়াল গড়ে ফেলেছিল প্রথম গ্যালাকটিকো, ঝুড়িতে ছিল ৯টি ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা। এই কালো অধ্যায়ের সময় তারা যথাক্রমে জুভেন্তাস, আর্সেনাল, বায়ার্ন মিউনিখ, রোমা, লিভারপুল ও অলিম্পিক লিওর বিপক্ষে হেরে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা আটে উঠতে ব্যর্থ হয়।

আরো পড়ুন:

পেনাল্টি মিস করে বাজি হেরেছেন ভিনিসিয়ুস

ভিনির পেনাল্টি মিসে রিয়ালের শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার পথে

এই ৬ প্রতিপক্ষের পাঁচটিকেই ২০১০/১১ মৌসুম থেকে এখন পর্যন্ত এক বা একাধিকবার হারিয়েছে রিয়াল। কেবল আর্সেনালকে এখনও তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পায়নি।

২০০৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শেষ ষোলোতে থিয়েরি অঁরির দুর্দান্ত এক গোল রিয়ালের বিপক্ষে জিতে আর্সেনাল। বার্নাব্যুতে ১-০ ব্যবধানে জয়ের পর ঘরের মাঠে গোলশূন্য ড্র করে কোয়ার্টারে উঠে গানাররা। এরপর এই দুই দল আর কখনো একে অপরের মুখোমুখি হয়নি।

তবে এবার মিলছে সুযোগ। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এমিরেটসে খেলবে রিয়াল। দেড় যুগের অপেক্ষার পর অবশেষে সুযোগ এসেছে প্রতিশোধটাও নেওয়ার। চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে নিজেদের সবচেয়ে হতাশাজনক সময়টাকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলতে এবার শুধু আর্সেনালকে হারানোই বাকি রিয়ালের।

আর্সেনাল বুকায়ো সাকার প্রত্যাবর্তনে উজ্জীবিত। যিনি ১০১ দিন হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে মাঠের বাইরে ছিলেন। ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম ম্যাচে রিয়ালকেই পাচ্ছেন তিনি। গানার্স বস মিকেল আর্তেতা তার মিডফিল্ড ত্রয়ী ডেকলান রাইস, মার্টিন ওডেগার্ড ও থমাস পার্টি নিয়ে কৌশল সাজাবেন। এই ওডেগার্ড রিয়াল থেকেই আর্সেনালে নাম লিখিয়েছেন।

আর্সেনালের রিকারডো ক্যালাফিওরি, কাই হাভার্টজ, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, তাকেহিরো তোমিয়াসু এবং গ্যাব্রিয়েল ম্যাগালহায়েসের চোট সমস্যা আছে। এদের মধ্যে কেবল ক্যালাফিওরি এপ্রিল ১৬ তারিখে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফিরতি লেগের জন্য স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন।

অন্যদিকে, রিয়াল মাদ্রিদের সামনে খেলবেন কিলিয়ান এমবাপে ও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। এই দুজন চলমান মৌসুমে ৫১টি গোল করেছেন। কার্লো আনচেলত্তির দলের মিডফিল্ডের মূল চালিকাশক্তি জুড বেলিংহ্যাম, যিনি তার ক্যারিয়ারে প্রথমবার আর্সেনালের বিপক্ষে খেলবেন। চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরতে পারেন গোলরক্ষক থিয়াবো কর্তোয়া।

চোট সমস্যা আছে দানি সেবালিয়োস, এদার মিলিশাও, দানি কারভাহালের। ফরাসি মিডফিল্ডার অরেলিয়েন চৌয়াযমিনির কার্ড জটিলতায় এই ম্যাচটা খেলতে পারবেন না।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ আর স ন ল চ য ম প য়নস ল গ র আর স ন ল

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ