বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় জাবির ‘আনন্দশালা: স্পেশাল নিড্স অ্যাডুকেশন সেন্টার (এসএনইসি-জেইউ)’ এর আয়োজনে এবং উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা শুরু হয়। আনন্দশালা প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া এ শোভাযাত্রা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় মিলিত হয়।

আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেন, “তাদের প্রয়োজনগুলো বিবেচনার জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সচেতনতা প্রয়োজন। আমরা যদি নিজেরা সচেতন হই এবং এটাকে নিজেদের সমস্যা মনে করি, তাহলে আমরা এসব সমস্যার সমাধান করতে পারব। এই বিশেষ বাচ্চাদের প্রয়োজনগুলো বিবেচনার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এইটুকু মনে রাখতে হবে, এরা আমাদেরই সন্তান।”

উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আমাদের বাস্তুতন্ত্রের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে যেমন পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতার বিষয় রয়েছে, তেমনিভাবে মানুষের মধ্যেও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তান ও সহযোদ্ধা রয়েছে। তাদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে এ উপলব্ধি তৈরি করতে পারলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের ওপর থেকে বৈষম্য দূর করা যাবে।”

আনন্দশালার পরিচালক (অনারারী) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ও উপাত্ত বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.

রুমানা রইছের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, জবি কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ