দাখিল পরীক্ষা না দিয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়ি অনশন
Published: 10th, April 2025 GMT
দাখিল পরীক্ষার আসনে না বসে বিয়ের আসনে বসার দাবি নিয়ে প্রেমিক আরিফ মৃধার বাড়িতে অনশনে বসেছেন এক মাদ্রাসা ছাত্রী প্রেমিকা।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে ওই পরীক্ষার্থী। ঘটনা ঘটেছে আমতলী উপজেলার পুর্ব চন্দ্রা গ্রামে।
জানাগেছে, আমতলী উপজেলার মহিষকাটা এলাকার একটি মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষার্থী এক ছাত্রী পার্শ্ববর্তী চাওড়া ইউনিয়নের পূর্ব চন্দ্রা গ্রামের হেলাল মৃধার ছেলে আরিফ মৃধার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। গত তিন বছর ধরে তারা প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন। কিন্তু প্রেমিক বরিশাল বিএম কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া ছাত্র আরিফ মৃধা তাকে বিয়ে না করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) সকালে প্রেমিক আরিফের বাড়িতে যান প্রেমিকা। এরপর তাকে বিয়ের আশ্বাস দিলেও এক সপ্তাহ পার হলেও বিয়ে করেননি আরিফ। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ছিল ওই প্রেমিকার দাখিল পরীক্ষা ছিল। তিনি বাসা থেকে পরীক্ষা দেয়ার কথা বলে বের হলেও পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে প্রেমিক আরিফ মৃধার বাড়িতে গিয়ে অনশনে বসেছেন।
এসময় তিনি বলেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে আরিফ বিয়ে না করলে তিনি এই বাড়িতেই আত্মহত্যা করবেন। প্রেমিক আরিফ মৃধার বাড়িতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকার অনশনে বসার ঘটনার এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনার পরপরই আরিফ মৃধা ও তার পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
ওই দাখিল পরীক্ষার্থী বলেন, “আরিফ মৃধা আমার সঙ্গে তিন বছর ধরে প্রেম করছেন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এখন তার পরিবারের কথামতো আমাকে বিয়ে করতে রাজি না। তাই আমি পরীক্ষা দেয়া বন্ধ করে বিয়ের দাবিতে আরিফের বাড়িতে অনশনে বসেছি।”
তিনি আরো বলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করব। আমিতো আমার সবই হারিয়েছি। এখন আর আমার কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। গত বৃহস্পতিবার আমি এ বাড়িতে আসার পর আরিফের মা আমাকে তার ছেলের সঙ্গে রাতে থাকতে দিয়েছেন এখন তারা পালিয়ে গেছে।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য রুহুল আমিন বলেন, “দুই পরিবার বসে সমাধান করতে বলেছি। সমাধান হয়েছে কিনা আমি জানি না।”
এ বিষয়ে জানতে প্রেমিক আরিফ মৃধার ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।
আমতলী থানার ওসি মো.
ঢাকা/ইমরান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প র ম ক আর ফ ম ধ র দ খ ল পর ক ষ র পর ব র পর ক ষ র
এছাড়াও পড়ুন:
সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ–দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী–পুরুষ। পরে বিকেল চারটার দিকে কয়েকজনকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান আমন্ত্রিত অতিথিরা।
সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির এ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবীর, সাঁওতাল নেতা স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, তৃষ্ণা মুর্মু, বিটিশ সরেন, গৌড় পাহাড়ি, রাফায়েল হাসদা, অলিভিয়া হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, লুইস মুর্মু, খিলন রবিদাস প্রমুখ। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।
গণ–অনশনে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ করার মতো সরকারের অনেক জমি পতিত আছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতেই কেন ইপিজেড করতে হবে? এ আন্দোলন ইপিজেডের বিরুদ্ধে নয়; বরং বাপ–দাদার জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। এসব জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আজও গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।
বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল–বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ হলে সাঁওতালরা দফায় দফায় এই জমি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। সেই সঙ্গে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধিতা করে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।