লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে রুবেল হোসেন নামে এক যুবক আহত হয়েছেন। গুলিটি তার বাম হাতের কব্জিতে লেগেছে। এ ঘটনায় আজাদ হোসেন বাবলু ও আলমগীর হোসেন রাব্বি নামে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। 

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের পূর্ব চৌপল্লী গ্রামের বেপারি বাড়ি এলাকায়  ঘটনাটি ঘটে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

আরো পড়ুন:

ঝিনাইদহে ছাত্রদল নেতাসহ কয়েকজনের বাড়িতে ভাঙচুর, মালামাল লুট

জামিন: জেল গেটে হামলার শিকার সাবেক এমপি আব্দুল আজিজ

আহত রুবেল পূর্ব চৌপল্লী গ্রামের বেপারি বাড়ির আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আধিপত্য বিস্তার, মাদক কারবার নিয়ে রুবেল ও কদু আলমগীরের মধ্যে বিরোধ চলছে। দুইজনই পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, অস্ত্রসহ বিভিন্ন অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে। গত শুক্রবার বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে রুবেলকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে চিকিৎসক তাকে ঢাকায় পাঠান।

হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সময় রুবেল জানান, চৌপল্লী বাজার থেকে তিনি বাড়ি যাচ্ছিলেন। ঘটনাস্থল পৌঁছলে পেছন থেকে তাকে গুলি করা হয়। গুলিটি তার বাম হাতের কব্জিতে বিদ্ধ হয়। কে বা কারা গুলি করেছে তিনি তা দেখেননি। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে রাস্তায় পড়ে যান।

তিনি বলেন, “অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী কদু আলমগীর আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে। এলাকায় থাকতে হলে টাকা দিতে হবে, তা না হলে আমাকে হত্যা করবে বলেও হুমকি দিয়েছে। কয়েকবার বাড়িতে লোকজন পাঠিয়ে আমাকে হুমকি দিয়েছে।”

সদর হাসপাতালের চিকিৎসক কমলাশীষ রায় বলেন, “বাম হাতের কব্জিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে একব্যক্তি হাসপাতালে আসেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।”

লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো.

আকতার হোসেন বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাদক ব্যবসা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এর জেরে রুবেলকে গুলি করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

চন্দ্রগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন বলেন, “গুলিবিদ্ধের ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।”

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত আটক

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে চাকরির নামে যুবকদের পাঠানো হতো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, চক্রের ‘হোতা’ গ্রেপ্তার

বিদেশে আকর্ষণীয় বেতনে চকলেট কারখানার কর্মী, পরিচ্ছন্নকর্মী বা বাবুর্চির কাজ দেওয়ার কথা বলে আগ্রহীদের ফাঁদে ফেলা হয়। পরে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে আসছিল একটি চক্র। চক্রটির এদেশীয় ‘হোতা’ মুহাম্মদ আলমগীর হোছাইনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এমন তথ্য। তাদের খপ্পরে পড়ে অন্তত একজন যুদ্ধে নিহত এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, আলমগীর হোছাইনকে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির মানব পাচার প্রতিরোধ শাখা। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা রয়েছে। সেই মামলায় গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

সিআইডি জানায়, চক্রের সদস্যরা রাশিয়ায় মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ১০ জনকে প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব পাঠায়। সেখানে তাদের ওমরাহ হজ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেই সুলতান আবার তাদের দাস হিসেবে রাশিয়ান সৈনিকদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে তাদের  সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। কেউ যুদ্ধ অংশ নিতে রাজি না হলে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের দুর্বল করে ফেলা হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে রাজি হন। যুদ্ধে নাটোরের সিংড়ার হুমায়ুন কবির নামে একজন নিহত এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামে একজন গুরুতর আহত হন। আর রাশিয়ায় পাঠানো ১০ জনের মধ্যে নরসিংদীর পলাশের আকরাম হোসেন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন। এখানে তিনি অন্য ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার কাছে তথ্য পেয়ে যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার বনানী থানায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন।

তদন্তকালে সিআইডি জানতে পারে, ১০ জনের আরেকটি দল এখন সৌদি আরবে অবস্থান করছে। যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করানোর বিষয়ে জানাজানি হওয়ায় তারা রাশিয়া যেতে রাজি হননি। এ কারণে তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই তারা সৌদি আরবে কোনো কাজ করতে পারছেন না, দেশেও ফিরতে পারছেন না। সিআইডি ভুক্তভোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। সেইসঙ্গে মানব পাচারের এই নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি নিবিড় তদন্ত এবং গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।

এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার সময় মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য ফাবিহা জেরিন তামান্নাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তিনি ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের ব্যবসায়িক অংশীদার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গেপ্তার ২
  • বিএনপির সঙ্গে চীনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
  • মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ায় বাবাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, আটক ২
  • হবিগঞ্জে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
  • নাটক প্রকাশ নিয়ে নিলয়ের ক্ষোভ, যা জানাল দীপ্ত কর্তৃপক্ষ
  • শিল্পী-নির্মাতাকে না জানিয়ে ইউটিউবে নাটক প্রকাশ, নিলয়ের ক্ষোভ
  • শিল্পী-নির্মাতাকে না জানিয়ে নাটক রিলিজ, নিলয়ের ক্ষোভ
  • চাকরির নামে ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো চক্রের হোতা গ্রেপ্তার
  • বিদেশে চাকরির নামে যুবকদের পাঠানো হতো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, চক্রের ‘হোতা’ গ্রেপ্তার
  • ঈদ পুনর্মিলনীর নামে বিএনপির আয়োজনে আ.লীগের মিলনমেলার অভিযোগ