জাতীয় দলের কোচ হিসেবে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) প্রেসিডেন্ট এডনাল্ডো রদ্রিগুয়েজের প্রথম পছন্দ কার্লো আনচেলত্তি। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের ইতালিয়ান কোচ লিস্টে চারজনের মধ্যে ছিলেন চারে। কারণ জুলাইয়ের আগে তাকে পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কম ছিল। ওদিকে জুনের আগেই কোচ নিয়োগ চূড়ান্ত করতে চায় সিবিএফ।

কিন্তু ডন কার্লোর অধীনে রিয়ালের দুর্দশা চলায় নতুন সম্ভাবনা দেখছে ব্রাজিল। ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে লিগে ও আর্সেনালের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হেরে রিয়ালের ‘সর্বনাশ’ হয়েছে। ওই সর্বনাশে পৌষ মাসের সন্ধান করছে ব্রাজিল। দেশটির ফুটবল বিষয়ক সংবাদ মাধ্যম গ্লোবো এমনই দাবি করেছে। তারা আনচেলত্তির কোচ হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে শিরোনাম করেছে, ‘রিয়ালের সংকটে আনচেলত্তি প্রশ্নে আলো দেখা।’

সংবাদ মাধ্যমের মতে, আর্সেনালের বিপক্ষে ১৬ এপ্রিল রাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে আনচেলত্তি কামব্যাক করতে না পারলে চাকরি যাবে তার। সেক্ষেত্রে ব্রাজিলের কোচ হতে বাধা থাকবে না ডন কার্লোর। এমনকি ক্ষতিপূরণ ছাড়াই তাকে পেয়ে যাবে সিবিএফ।

সংবাদ মাধ্যম আরও দাবি করেছে, এই সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় সিবিএফ কাউকে মে মাসের আগে কোচ হওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া রিয়ালে কার্লো আনচেলত্তির অবস্থা নড়বড়ে দেখে তার ছেলে ডেভিড আনচেলত্তির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে সিবিএফ। ব্রাজিল বোর্ড কার্লোর জন্য ২৬ এপ্রিল কোপা দেল রে’র ফাইনাল পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বলেও দাবি করেছে গ্লোবো।

এর আগে গ্লোবো জানিয়েছে, ব্রাজিলের পরবর্তী কোচ হিসেবে চার জনের সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছে কনফেডারেশন। সেখানে আল হিলালের কোচ হোর্হে জেসুসের সেলেসাও কোচ হওয়ার ভালো সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া ফেনেরবেচের পর্তুগিজ কোচ হোসে মরিনহো ও পালমেইরাসের পর্তুগিজ কোচ আবেল পেরেইরা আছেন আলোচনায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল স ব এফ

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ