চুয়েটে দ্বিতীয় পর্যায়ে ভর্তি ২৩ এপ্রিল, এখনো আসন ফাঁকা ৩৬১টি
Published: 14th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ভর্তি কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। গত বৃহস্পতিবার চুয়েটের ভর্তিসংক্রান্ত ওয়েবসাইটে প্রকাশিত দ্বিতীয় পর্যায়ের ভর্তির বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার প্রথম পর্যায়ে ভর্তির পর মেধাস্থান ও পছন্দক্রম অনুযায়ী ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত বিভাগ তালিকা ভর্তিসংক্রান্ত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। তালিকা অনুযায়ী, ৯২০টি আসনের বিপরীতে বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হয়েছেন ৫৫৯ জন শিক্ষার্থী। এখনো ফাঁকা আছে ৩৬১টি আসন। এর মধ্যে পুরকৌশল বিভাগে ৯০টি, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগে ৬০টি, ইলেকট্রনিকস ও টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৫৮টি, জৈব চিকিৎসা প্রকৌশল বিভাগে ২৯টি, মেকাট্রনিকস ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২৮টি, যন্ত্রকৌশল বিভাগে ১টি এবং পানিসম্পদ কৌশল, জ্বালানি ও খনন কৌশল ও ম্যাটারিয়ালস ও ম্যাটালার্জিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রতিটি ৩০টি করে আসন ফাঁকা আছে।
আসন পূরণ না হওয়ায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ভর্তির জন্য ‘ক’ গ্রুপে (প্রকৌশল বিভাগসমূহ এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ) মেধাক্রমের ১ হাজার ৫০১ থেকে ২ হাজার ৫০০ পর্যন্ত ১ হাজার শিক্ষার্থীকে এবং ‘খ’ গ্রুপে (স্থাপত্য বিভাগ) ১০১ থেকে ১৫০ পর্যন্ত ৫০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য ডাকা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল মেধাক্রম অনুসারে নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য নিরীক্ষা কমিটির কাছে উপস্থিত হয়ে সনদপত্র যাচাই করে জমা দিতে হবে। সনদ জমাদানের পর ওই দিনই শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। এদিন আসন খালি থাকা সাপেক্ষে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত উপস্থিত প্রার্থীদের ভর্তি নেওয়া হবে।
পরদিন ২৪ এপ্রিল উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিভাগ বরাদ্দ তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রার্থীদের মেধাক্রম ও পছন্দক্রম অনুসারে বিভাগ নির্ধারণ করা হবে, যা এদিন সকাল ১০টার মধ্যে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। প্রাপ্ত বিভাগ দেখে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য নির্ধারিত ১৮ হাজার ৫০০ টাকা সোনালী ব্যাংক চুয়েট শাখায় বেলা তিনটার মধ্যে জমা দিতে হবে। তবে কোনো প্রার্থী স্বাস্থ্যপরীক্ষার পর একই দিনে (২৩ এপ্রিল) ভর্তি ফি কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে আসনসংখ্যার বেশি প্রার্থী উপস্থিত হলে অতিরিক্ত প্রার্থীদের নিয়ে মেধাক্রম অনুযায়ী একটি অপেক্ষমাণ তালিকা সংগ্রহ করা হবে। পরে আসন খালি হওয়া সাপেক্ষে অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের ভর্তির জন্য পর্যায়ক্রমে ডাকা হবে।
আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর রুটিন, কোন পরীক্ষা কবে২০ মার্চ ২০২৫দ্বিতীয় পর্যায়ে ভর্তির পর ভর্তি করা প্রার্থীর প্রাপ্ত বিভাগ ও মোট শূন্য আসনসংখ্যা ও সে অনুযায়ী পরবর্তী ভর্তির জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা ২৭ এপ্রিল ভর্তিসংক্রান্ত ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। আসন খালি থাকা সাপেক্ষে ওরিয়েন্টেশনের দিন পর্যন্ত ভর্তিপ্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি চুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৯৩১টি আসনে শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন।
আরও পড়ুনস্নাতক ও ডিগ্রির শিক্ষার্থীরা পাবেন উপবৃত্তি, মিলবে ১০,০০০২২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ ব ত য় পর য য় উপস থ ত অন য য় পর ক ষ র ভর ত
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা কমানো ও নতুন ১৮ বিভাগ চালুর সুপারিশ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সার্বিকভাবে আসনসংখ্যা কমানো, আরও ১৮টি বিভাগের অন্তর্ভুক্তি, ৪টি ইনস্টিটিউট চালু এবং ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে আসনসংখ্যা কমানো হচ্ছে বলে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৯তম একাডেমিক কাউন্সিল সভায় এসব বিষয়ে সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামে আরও ১৮টি বিভাগের অন্তর্ভুক্তি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী, কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে ল্যাব বেজড বিভাগগুলোতে আসনসংখ্যা ৪০টি এবং ল্যাববিহীন বিভাগগুলোতে ৫০টি আসন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। যার কারণে সার্বিকভাবে কিছু আসন কমে আসবে। এ ছাড়া নতুন আরও ১৮টি বিভাগের অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ, জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগ এবং জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জনসংখ্যাবিজ্ঞান বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। কলা ও মানবিক অনুষদভুক্ত গুলো হলো- ইসলামিক স্টাডিজ ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ এবং দর্শন বিভাগ।
আরও পড়ুনদুই দশকে ‘লালমাটির সবুজ ক্যাম্পাস’, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বর্ণাঢ্য আয়োজন ২৮ মে ২০২৫ব্যবসায় অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ব্যবসায়িক তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগ এবং লজিস্টিক ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ।
প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগ, পুরকৌশল বিভাগ এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগ। আইন অনুষদভুক্ত বিভাগটি হলো অপরাধবিদ্যা বিভাগ।
এদিকে সভায় চারটি ইনস্টিটিউট গঠনের সুপারিশ করা হয়। এগুলো হলো আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র। এগুলোর গঠনকাঠামোও সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, নিয়মিত অধ্যাপক দুজন, তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার বা ব্যবস্থাপক একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুজন এবং একজন ক্লিনার।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং অ্যাকাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র- এদুটোর জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, অতিথি অধ্যাপক থাকবেন একজন, অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার অথবা ব্যবস্থাপক হিসেবে একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং ক্লিনার-১ জন।
এ ছাড়া ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ন্যূনতম ২৬ জন করে শিক্ষক রাখার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হায়দার আলী বলেন, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এখনই এগুলো না দেখে বলা যাচ্ছে না। রেজ্যুলেশন পাশ হলে বিস্তারিত বলতে পারব। এ জন্য কিছুটা সময় লাগবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচনায় এগুলোর সুপারিশ করেছি; কোনোটিই এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। আর অর্গানোগ্রাম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ডিপার্টমেন্টের জন্য ছাড়পত্র চায়, তারপর কমিশন (ইউজিসি) যদি অনুমোদন দেয়, তখন সেটা অর্গানাগ্রামে যুক্ত হয়। অর্গানোগ্রামে থাকলেই যে বিভাগ হয়ে যাবে, বিষয়টি এমনও না। ইউজিসি একটা অনুমোদন দিয়ে রাখে। এই অনুমোদনের আলোকে আবার যখন আবেদন দেওয়া হবে, তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে। মূল কথা হলো এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েল এমন পরিকল্পনা থাকে। আমাদের এসব পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে অন্তত ২০৩২ সাল পর্যন্ত।’
অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ইউজিসি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে আসন সংখ্যা কমাতে, যাতে কোয়ালিটি এডুকেশনের নিশ্চিত হয়। এ জন্য তাঁরা ল্যাব বেজড বিভাগের জন্য ৪০টি আসন এবং ল্যাববিহীন বিভাগের জন্য ৫০ টি আসন বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। আর ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাব রাখা হয়েছে।