বরগুনার আমতলীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে যাওয়ায় এক নারীকে (৩২) মারধর করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন, ওই বাড়ির লোকজন তাঁকে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন। আহত ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে ওই নারীর সঙ্গে খালাতো দেবর আবুল কালাম মীরের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ ঘটনার জেরে গত মার্চ মাসে স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ওই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। ওই তিন সন্তান তাদের দাদির কাছে থাকে। বিবাহবিচ্ছেদের পর ওই নারী আবুল কালাম মীরকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। তবে আবুল কালাম মীর রাজি হচ্ছিলেন না। গত রোববার সন্ধ্যায় ওই নারী কালামের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন। ওই সময় কালাম বাড়িতে ছিল না। রাতে কালামের মা-ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা ওই নারীকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। তাঁর দুই হাত, দুই পা, বাহু, কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়।

খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ছালাম সিকদার ও হাসনেহেনা বেগম তাঁকে উদ্ধার করে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে গতকাল সোমবার তাঁকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী বলেন, ‘বিয়ের দাবিতে আবুল কালাম মীরের বাড়িতে অনশনে বসেছিলাম। তাঁর পরিবারের সদস্যরা আমাকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছেন। আমাকে তিন ঘণ্টা নির্যাতন করেছেন। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’

এ বিষয়ে জানতে আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাঁর বড় ভাই আবুল হোসেন মীর বলেন, ‘যে নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে, তিনি ও তাঁর স্বামী কালামের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছেন। ওই টাকা যাতে শোধ করতে না হয়, সে জন্য তাঁরা প্রেমের সম্পর্কের নাটক সাজিয়েছেন। আমার ভাইয়ের সঙ্গে কারও কোনো সম্পর্ক ছিল না।’

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ওই নারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘টাকা নেওয়ার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁরা একটি নাটক সাজিয়েছেন। আমি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করব।’

আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ কল দ য় ওই ন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।

স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।

অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে