স্ত্রী হত্যা মামলার আসামির কীটনাশক পান, জনতার পিটুনির পর হাসপাতালে মৃত্যু
Published: 16th, April 2025 GMT
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে মিনু আক্তার (৪২) নামে এক গৃহবধূকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি তাঁর স্বামী ফরিদুল আলমের (৪৪) মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান তিনি।
ফরিদুল বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা গ্রামের দুদু মিয়ার ছেলে। ডোংরা গ্রামের মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার বাহারছাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ইলশা এলাকা থেকে ফরিদুলকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। ওই সময় গণপিটুনি দেন জনতা। গণপিটুনিতে ফরিদুল গুরুতর আহত হলে তাঁকে চমেক হাসপাতাল ভর্তি করা হলে সেখানে আজ ভোরে তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, স্ত্রী হত্যার পর মঙ্গলবার বিকেলে বাড়িতে গিয়ে কীটনাশক পান করেন ফরিদুল। ওই সময় লোকজনকে তিনি কীটনাশক পানের কথা বলেন। তবে তা বিশ্বাস করেননি কেউ। উল্টো লোকজন তাঁকে ধরে পিটুনি দেন। আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে মারা যান তিনি। এর আগে, ১১ এপ্রিল ভোর সাড়ে চারটার দিকে স্ত্রী মিনু আক্তারকে (৪২) হত্যার অভিযোগ ওঠে ফরিদুলের বিরুদ্ধে।
পুলিশ জানায়, ২০১০ সালের মার্চ মাসে মিনু আক্তারের সঙ্গে ফরিদুল আলমের বিয়ে হয়। তাঁদের ঘরে দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ব্যবসায়িক কারণে ফরিদুল চট্টগ্রাম শহরে থাকতেন এবং মাঝেমধ্যে বাড়ি যেতেন। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি হতো। প্রায় সময়ই ফরিদুল আলম টাকার জন্য মিনুকে মারধর করতেন এবং বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলতেন।
সর্বশেষ গত ১০ এপ্রিল সন্ধ্যার পর মিনু বাপের বাড়ি বেড়াতে যান। কিন্তু পরদিন শুক্রবার ভোরেই ফরিদুল আলম তাঁর শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানেই তিনি মিনু আক্তারকে ছুরিকাঘাত করেন। ওই সময় মিনুর চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এলে ফরিদুল পালিয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে মিনুকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় মিনুর ভাই নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যা মামলার আসামি ফরিদুল আলম ঘরে গিয়ে কীটনাশক পান করেন। ওই সময় জনতা তাঁকে পিটুনি দিলে আজ ভোরে তিনি মারা যান। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫