দাবি আদায়ে অনশন শুরু করেছেন চট্টগ্রামের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে তাঁরা অনশন শুরুর ঘোষণা দেন। এর আগে নগরের বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।

সকাল থেকেই দাবি আদায়ে নগরের সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কিছু শিক্ষার্থী নগরের ২ নম্বর গেট এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে যান। সেখানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও। তাঁরা নিজেদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। একপর্যায়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি দাবি করা ন্যাশনাল পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম।

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি কোটা বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া রয়েছে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করা, ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করার দাবি।

গত বুধবার থেকে এসব দাবিতে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। এদিকে গতকাল রোববার জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি–সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো.

রেজাউল এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আবেদনটি আগামী ১৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি করতে বলা হয়েছে।

তবে এতে সন্তুষ্ট নন আন্দোলনরত পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা রায় ও এ–সংক্রান্ত মামলা পুরোপুরি বাতিল চান। তাঁদের দাবি, রায় স্থগিত নয়, বাতিল করতে হবে। এসব দাবিতে তাঁরা সড়ক অবরোধ করে অনশন করছেন।

বেলা তিনটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বসে স্লোগান দিচ্ছেন অর্ধশতাধিক কারিগরি শিক্ষার্থী। এ সময় সড়কের এক পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে বিকল্প পথ থাকায় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়নি। কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি তৌকির আহমেদ বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষার মান বাড়তে আট মাস ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক, তাহলে কেন এগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে না? ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয়, মাত্র ৬৫০টি আসন। যতক্ষণ আমাদের দাবি আদায় হচ্ছে না, আমরা অনশনে থাকব।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকার ফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ–দিনাজপুর সড়কের কাটামোড় এলাকায় এ কর্মসূচিতে অংশ নেন শতাধিক সাঁওতাল ও বাঙালি নারী–পুরুষ। পরে বিকেল চারটার দিকে কয়েকজনকে শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান আমন্ত্রিত অতিথিরা।

সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির এ কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাইবান্ধা আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, ফারুক কবীর, সাঁওতাল নেতা স্বপন শেখ, প্রিসিলা মুর্মু, তৃষ্ণা মুর্মু, বিটিশ সরেন, গৌড় পাহাড়ি, রাফায়েল হাসদা, অলিভিয়া হেমব্রম, বার্নাবাস টুডু, লুইস মুর্মু, খিলন রবিদাস প্রমুখ। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।

গণ–অনশনে বক্তারা বলেন, গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ করার মতো সরকারের অনেক জমি পতিত আছে। কিন্তু বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের রক্তভেজা তিন ফসলি জমিতেই কেন ইপিজেড করতে হবে? এ আন্দোলন ইপিজেডের বিরুদ্ধে নয়; বরং বাপ–দাদার জমি উদ্ধারের জন্য তাঁরা আন্দোলন করছেন। এসব জমি উদ্ধার করতে গিয়ে তিন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের আজও গ্রেপ্তার করা হয়নি। দোষী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি।

বক্তারা বিরোধপূর্ণ জমিতে ইপিজেড নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ, তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার, সাঁওতাল–বাঙালিদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও পৈতৃক জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।

রংপুর চিনিকল সূত্রে জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের আওতায় ১ হাজার ৮৪২ একর জমি আছে। এই জমিতে উৎপাদিত আখ রংপুর চিনিকলে মাড়াই হতো। চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ হলে সাঁওতালরা দফায় দফায় এই জমি দখল করেন। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ এসব জমিতে উচ্ছেদে গেলে সাঁওতালদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। সেই সঙ্গে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এ পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রংপুর চিনিকলের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ইপিজেড বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিকে চিনিকলের জমিতে ইপিজেড নির্মাণের বিরোধিতা করে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’
  • বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে নারী
  • সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন