চট্টগ্রামে অনশনে কারিগরি শিক্ষার্থীরা
Published: 21st, April 2025 GMT
দাবি আদায়ে অনশন শুরু করেছেন চট্টগ্রামের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে তাঁরা অনশন শুরুর ঘোষণা দেন। এর আগে নগরের বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
সকাল থেকেই দাবি আদায়ে নগরের সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কিছু শিক্ষার্থী নগরের ২ নম্বর গেট এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে যান। সেখানে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও। তাঁরা নিজেদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। একপর্যায়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি দাবি করা ন্যাশনাল পলিটেকনিক কলেজের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম।
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি কোটা বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া রয়েছে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত করা, ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করার দাবি।
গত বুধবার থেকে এসব দাবিতে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। এদিকে গতকাল রোববার জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি–সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো.
তবে এতে সন্তুষ্ট নন আন্দোলনরত পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা রায় ও এ–সংক্রান্ত মামলা পুরোপুরি বাতিল চান। তাঁদের দাবি, রায় স্থগিত নয়, বাতিল করতে হবে। এসব দাবিতে তাঁরা সড়ক অবরোধ করে অনশন করছেন।
বেলা তিনটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে বসে স্লোগান দিচ্ছেন অর্ধশতাধিক কারিগরি শিক্ষার্থী। এ সময় সড়কের এক পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে বিকল্প পথ থাকায় সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়নি। কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রতিনিধি তৌকির আহমেদ বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষার মান বাড়তে আট মাস ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক, তাহলে কেন এগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে না? ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয়, মাত্র ৬৫০টি আসন। যতক্ষণ আমাদের দাবি আদায় হচ্ছে না, আমরা অনশনে থাকব।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।
স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।
অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।