প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘‘শরণার্থী হিসেবে দীর্ঘ অবস্থান রোহিঙ্গাদের মধ্যে হতাশা বাড়াচ্ছে। তারা নানা রকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হলে পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা সংকট শুধুমাত্র একটি মানবিক সমস্যা নয়, এটি বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ, যার রয়েছে সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক এবং পরিবেশগত প্রভাব।’’

বুধবার (২৩ এপ্রিল) কাতারের দোহায় ড.

ইউনূস আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন। ‘বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তুচ্যুত জনগণের সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ-রোহিঙ্গা ইস্যু’ শীর্ষক এই বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মানবিক সহায়তা তহবিল কমিয়েছে, যা এই সংকটকে আরো জটিল করে তুলবে। বাংলাদেশ মনে করে, চলমান সংকটের একমাত্র সমাধান রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন।’’

বাংলাদেশ জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে নিউ ইয়র্কে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে উচ্চ পর্যায়ের একটি সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে, সেখানে কাতারকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘‘জাতিগত নিধন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায় কোনভাবেই শাস্তির বাইরে থাকতে পারে না, এজন্য আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে চলমান প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে বাংলাদেশ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমারের বিচার হতে পারে রাখাইনে ফিরে যেতে রোহিঙ্গাদের আস্থা।’’

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক মহলে চাপ বাড়াতে কাতারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ওআইসিভুক্ত দেশগুলোকে সক্রিয় করতে কাতারকে এগিয়ে আসতে বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

এ সময় তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি শুধু আলোচনা আর আনুষ্ঠানিকতা নয়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সত্যিকারভাবে কাজ শুরুর আহ্বানও জানান।

ঢাকা/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

রপ্তানিকারকদের সুবিধা বাড়ল, বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব থেকে সোয়াপ করে টাকা তোলা যাবে

রপ্তানিকারকদের সুবিধা বাড়ল। এখন থেকে রপ্তানিকারকেরা নিজেদের বৈদেশিক মুদ্রা (এফসি) হিসাব থেকে সোয়াপের মাধ্যমে টাকা তুলতে পারবেন।

আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকগুলোকে ৩০ দিনের পুলে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রা এবং রপ্তানিকারকের রিটেনশন কোটা (ইআরকিউ) হিসাবের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা-টাকা সোয়াপ চুক্তি করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সোয়াপ কী

সার্কুলার অনুসারে, আলোচ্য সোয়াপ চুক্তি বলতে একটি নির্দিষ্ট হারে ও মেয়াদে টাকার বিনিময়ে বৈদেশিক মুদ্রার স্পট ক্রয় এবং একই সঙ্গে একটি নির্ধারিত তারিখে পুনঃবিক্রয়ের ব্যবস্থাকে বোঝাবে। এ ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকের নিজস্ব উৎসের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহৃত হবে। সোয়াপের মেয়াদ ইআরকিউ তহবিলের ব্যবহারযোগ্য মেয়াদের বেশি হতে পারবে না এবং ৩০ দিনের পুল তহবিলের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০ দিন মেয়াদি সোয়াপ করা যাবে।

সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, সোয়াপের হার নির্ধারণে বাজারভিত্তিক বা খরচভিত্তিক সুদ বা মুনাফার পার্থক্য বিবেচনায় নেওয়া যাবে। আলোচ্য সোয়াপ লেনদেনকে ঋণ বা অর্থায়ন সুবিধা হিসেবে গণ্য করা হবে না। সোয়াপের মাধ্যমে প্রাপ্ত টাকা শুধু রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চলতি মূলধনের চাহিদা মেটাতে ব্যবহার করা যাবে। কোনো ফটকা উদ্দেশ্যে ওই অর্থ ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

শিল্প খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এ উদ্যোগের কারণে রপ্তানিকারকদের স্বল্পমেয়াদি তারল্য চাপ কমাতে সহায়তা করবে। এতে প্রচলিত রপ্তানি ঋণের ওপর নির্ভর না করেও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চালাতে পারবেন। পাশাপাশি এটি বাজারভিত্তিক বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনাকেও উৎসাহিত করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ