নবজাতকের মৃত্যু কমাবে কেএমসি মাতৃসেবা
Published: 23rd, April 2025 GMT
সময়ের আগে বা স্বাভাবিকের তুলনায় কম ওজন নিয়ে জন্ম নিলে জন্মের পর অন্তত প্রথম আট ঘণ্টা নবজাতককে মায়ের সঙ্গে রাখতে হবে। ত্বকের স্পর্শে রেখে নবজাতককে ঘন ঘন বুকের দুধ পান করাবেন মা। অত্যন্ত সহজ ও সাশ্রয়ী এই চিকিৎসাপদ্ধতিই বাঁচিয়ে দিতে পারে লাখো নবজাতকের প্রাণ। নবজাতককে দ্রুত সুস্থ করে তোলার অত্যন্ত কার্যকর এ পদ্ধতির নাম ‘ক্যাঙারু মাদার কেয়ার’ বা কেএমসি মাতৃসেবা। নামটি এসেছে ক্যাঙারু প্রাণী থেকে। প্রাণীটি নিজের পেটের নিচের দিকে থাকা প্রাকৃতিক থলেতে বাচ্চাদের নিয়ে চলাফেরা করে।
বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরাম (বিএনএফ) আয়োজিত সপ্তম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বিশেষ এই চিকিৎসাপদ্ধতির কথা তুলে ধরেন দেশি-বিদেশি নবজাতক ও শিশুবিশেষজ্ঞরা। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘কোয়ালিটি নিউবর্ন কেয়ার অ্যাট ফ্যাসিলিটি অ্যান্ড হোম: আ পাথওয়ে টু হেলদিয়ার ফিউচার’। অনুষ্ঠানটি সহব্যবস্থাপনা করছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল–ইউনিসেফ, সেভ দ্য চিলড্রেন, নোরা হেলথ, প্রজন্ম রিসার্চ ফাউন্ডেশন ও ওরবিস।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আজ বুধবার থেকে শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে নিজেদের প্রবন্ধ ও গবেষণাপত্র উপস্থাপন করছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৭২১ জন এবং ৮ জন বিদেশি নবজাতক বিশেষজ্ঞ। উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক নাজমুন নাহার ও অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
অধিবেশনে অসুস্থ নবজাতক এবং জন্মগত জটিলতা থাকা শিশুদের সেবায় বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে বিশেষায়িত নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রের (স্ক্যানইউ) চিত্র ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা তুলে ধরেন ইউনিসেফের কোয়ালিটি কেয়ার বিভাগের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা পায়ে ফিও থান চো। তিনি বলেন, নবজাতকের কম ওজন, শ্বাসজটিলতা এবং সেপসিসের মতো বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় স্ক্যানইউগুলো আধুনিকভাবে নকশা করা হয়েছে, যা অনেক শিশুর প্রাণ রক্ষা করবে।
কেএমসি মাতৃসেবা নিয়ে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন ইউনিসেফের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদ হাসান। পদ্ধতিটির গুরুত্ব তুলে ধরে এই চিকিৎসক বলেন, জন্মের পর মায়ের বুকে শিশুকে এমনভাবে শুইয়ে রাখা হয়, যেন দুজনই একে অপরের ত্বকের স্পর্শে থাকে। জন্মের পর প্রথম ২৪ ঘণ্টা কেএমসি সেবার ফলে বিশ্বব্যাপী নবজাতকদের সেপসিস হওয়ার হার ১৮ শতাংশ কমেছে। এভাবে সারা বিশ্বে অনেক নবজাতকের প্রাণ রক্ষার নজিরের কথা জানান জাহিদ হাসান।
‘বাংলাদেশের নবজাতক স্বাস্থ্যের দৃশ্যপট: এখন কোথায় মনোযোগ দিতে হবে?’ শীর্ষক আলোচনা করেন ইউনিসেফের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা চিকিৎসক দেওয়ান মো.
প্রধান অতিথি জাতীয় অধ্যাপক এম কিউ কে তালুকদার বলেন, নবজাতকের সেবায় দেশের তরুণ চিকিৎসক ও গবেষকেরা অনেক সম্ভাবনাময় কাজ করছেন। তাঁরা নতুন নতুন কৌশল আবিষ্কার করছেন, যা সত্যিই প্রশংসনীয়। দেশের সব মা ও শিশু যেন এই সেবাগুলো পায়, সেই উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
সম্মেলনে বাংলাদেশে ইউনিসেফের ডেপুটি প্রতিনিধি ব্রিজেট জব-জনসন বলেন, ‘বাংলাদেশ নবজাতক ও মাতৃমৃত্যু হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু এখনো প্রতি আট মিনিটে আমরা বয়স এক মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই এক নবজাতককে হারাচ্ছি। এই নবজাতকদের বেশির ভাগই নানা প্রতিরোধযোগ্য ও চিকিৎসাযোগ্য ব্যাধি। যেমন অপরিপক্বতা (সময়ের আগে জন্ম), কম ওজন নিয়ে জন্ম, জন্মকালীন শ্বাসকষ্ট ও সংক্রমণের কারণে মারা যাচ্ছে।’
ব্রিজেট বলেন, স্বাস্থ্যব্যবস্থা শক্তিশালী করা, স্ক্যানইউ স্থাপন, কেএমসি মাতৃসেবা সম্প্রসারণ, অক্সিজেন থেরাপি সেবা ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং কমিউনিটিভিত্তিক ফলোআপ পরিষেবা প্রসারের মাধ্যমে নবজাতকের পরিচর্যা উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছে ইউনিসেফ। আর এর সবকিছুই জাতীয় নবজাতক স্বাস্থ্য কৌশলের অধীন পরিচালিত হচ্ছে।
উদ্যোগগুলো আরও প্রসারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে ব্রিজেট আরও বলেন, ‘প্রত্যেক মা ও শিশু, বিশেষ করে দুর্গম অঞ্চলেও যেন এসব সেবা পান। মা ও কিশোরীদের সহায়তা, তাঁদের পুষ্টি উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসম্মত গর্ভকালীন বিরতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রতিরোধযোগ্য নবজাতক ও মাতৃমৃত্যু চিরতরে বন্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমাদের অবশ্যই এই অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে হবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স ব স থ য কর মকর ত ন ইউন স ফ র নবজ তকক জন ম র ক এমস
এছাড়াও পড়ুন:
ছয় কোটি শ্রমিক রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার বাইরে
দেশের মোট শ্রমিকের ৮৪ দশমিক ১ শতাংশের কোনো দায়দায়িত্ব নেয় না রাষ্ট্র । শ্রমিক হিসেবে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই। কোনো রকম আইনি ও সামাজিক সুরক্ষা নেই। কর্মস্থলের পরিচয়পত্র নেই। কাজের ক্ষেত্রে অন্যায়ের শিকার হলে তাদের শ্রম আদালতে মামলা করার সুযোগও নেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, অপ্রাতিষ্ঠানিক এই শ্রমিকের সংখ্যা ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার।
বিশালসংখ্যক শ্রমিকের প্রতি রাষ্ট্রের এ রকম অবহেলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সরকারের গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গত ২১ এপ্রিল পেশ করা কমিশনের ২৫ সুপারিশের মধ্যে প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের সব শ্রমিকের আইনি সুরক্ষা ও স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
দেশের শ্রম খাতের দুর্বলতা চিহ্নিত করা এবং শ্রমিকের অধিকার ও জীবনমান উন্নয়নে সুপারিশ প্রণয়নের উদ্দেশ্যে গঠিত ১৯ সদস্যের কমিশনপ্রধান ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। জানতে চাইলে গতকাল তিনি সমকালকে বলেন, ‘আমরা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছি। শ্রম আইনে অন্য সব শ্রমিকের মতো একই অধিকার এবং সুযোগসুবিধা পাওয়ার পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষে তাদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছি। সামাজিক সুরক্ষার আওতায় তাদের জন্য ভাতার কথা বলেছি। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকের জন্য এ সুবিধার সুপারিশ করা হয়নি। কারণ, তারা চাকরি শেষে কমবেশি কিছু আর্থিক সুবিধা পান।’
কমিশনের এ সব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে নিয়মিত নজরদারি রাখার কথাও জানান তিনি।
এ বাস্তবতায় আজ বৃহস্পতিবার মহান শ্রমিক দিবস পালন করা হচ্ছে। আজ সরকারি ছুটি থাকবে। এ দিনও কাজ করতে হবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দিবসটি পালনের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে, গড়ব এ দেশ নতুন করে’।
বিবিএসের গত নভেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যা ১২ কোটি ৬ লাখ ২০ হাজার। তাদের মধ্যে শ্রমশক্তি ৭ কোটি ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। মোট শ্রমশক্তির ৮৪ দশমিক ১ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে।
দেশে শ্রমশক্তি বলতে ১৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে যারা কর্মে নিয়োজিত এবং বেকার জনগোষ্ঠীর সমষ্টিকে বোঝায়। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর মানদণ্ড অনুযায়ী, যারা সাত দিনে কমপক্ষে ১ ঘণ্টার বেতন, মজুরি বা মুনাফার বিনিময় অথবা পরিবারের নিজস্ব ভোগের জন্য পণ্য উৎপাদনের কাজ করেছেন জরিপে তাদের কর্মে নিয়োজিত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। আবার যারা কর্মক্ষম কিন্তু কোনো কাজে নিয়োজিত নন, নির্দিষ্ট সময়ে কাজ খুঁজে বেড়ান এবং ওই সময়ে কাজের সুযোগ পেলে সে কাজ করতে প্রস্তুত তাদের বেকার বলা হয়েছে। এ হিসাবে দেশে বেকারের সংখ্যা ২৪ লাখ ৬০ হাজার।
অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক কারা
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা–আইএলওর আন্তর্জাতিক শ্রম পরিসংখ্যানবিদের সম্মেলন ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব লেবার স্ট্যাটিসিয়ান্স–আইসিএলসির সংজ্ঞা অনুযায়ী, বেসরকারি অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা খানামালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান, যেগুলোর আইনি সত্তা নেই, পরিপূর্ণ হিসাব নেই, উৎপাদনের হিসাব দিতে হয় না এবং বেসরকারি ও অনিবন্ধিত–এরকম খাতকে অনানুষ্ঠানিক খাত এবং এ খাতের শ্রমিকদের অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক বলা হয়।
মূলত কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতে অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক বেশি। কৃষিতে ৯৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক। শিল্প খাতে ৮২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের বড় অংশই গ্রামে থাকেন।
বিবিএস বলছে, গ্রামের মোট শ্রমিকের ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন। সংখ্যায় তারা ৪ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার। শহরের শ্রমিকদের এ হার কিছুটা কম। ৭৪ দশমিক ৫ শতাংশ। সংখ্যায় এক কোটি ৩৫ লাখ ৭০ হাজার। নারী শ্রমিকদের ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করে থাকেন।
শ্রম আইনে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতকেও অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ কমিশনের
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে প্রাতিষ্ঠানিক, অপ্রাতিষ্ঠানিক, কৃষি, গৃহশ্রমিক, অভিবাসী, স্বনিয়োজিত শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের জন্য শ্রম আইনে সুরক্ষা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে শ্রমিকদের কাজের স্বীকৃতি, পরিচয়পত্র, নিরবচ্ছিন্ন কাজ এবং আয়ের নিশ্চয়তা, মর্যাদাকর শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, এসব শ্রমিকের জন্য রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা হিসেবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সব অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলাদা অফিস অথবা ডেস্ক স্থাপন করতে হবে। শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং কল্যাণে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের সব ধরনের তথ্য নিয়ে তথ্যভান্ডার করা, পরিচয়পত্র দেওয়া এবং অবসর ভাতা চালুসহ বেশ কিছু সুপারিশ করে কমিশন।
অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের প্রবীণ শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতার সুপারিশ
রাষ্ট্রের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের আওতায় বিভিন্ন সুবিধা পেয়ে থাকেন প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা। অবসরের পরও কিছু সুবিধা পান তারা। তবে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা সারা জীবন খাটুনির পর প্রবীণ বয়সে আরও কষ্টে থাকেন। কারণ সামান্যতম কোনো সুবিধা পান না তারা। এ বিবেচনা থেকে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য অসরকালীন ভাতা বা তাদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনার সুপারিশ করেছে কমিশন। তাদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর নির্ধারণের কথা বলা হয় এতে। দরিদ্র বেকার শ্রমিকদের বয়স্কভাতা এবং তাদের প্রতিদিনের খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও অন্যান্য চাহিদা বিবেচনায় বয়স্কভাতার পরিমাণ নির্ধারণের কথা বলেছে কমিশন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের পেশা ও খাত অনুযায়ী সংগঠিত হওয়া, প্রতিনিধিত্ব করা ও নিয়োগকারী, তাদের সমিতি করার সুযোগ দেওয়ার কথাও বলা হয় কমিশনের সুপারিশে।
প্রাতিষ্ঠানিকের ৫৫ খাতেও ন্যূনতম মজুরি নেই
অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো নয়। এখনও অনেক শিল্প খাতকে ন্যূনতম মজুরি কাঠামোর আওতায় আনা হয়নি। মালিকপক্ষ যা দেয়, তা মেনে নিয়ে কাজ করেন শ্রমিকরা। এরকম অন্তত ৫৫টি খাতে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়নি।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের স্বীকৃত শিল্প আছে ১০২টি।
টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের মজুরি বোর্ড হয় সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে। অর্থাৎ, গত তিন যুগ ধরে একই মজুরি চলছে এ খাতে। জানতে চাইলে সরকারের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা ইসলাম গতকাল সমকালকে বলেন, ন্যূনতম মজুরি কাঠামোতে বর্তমানে ৪৭টি শিল্প রয়েছে। নতুন করে দুটি শিল্পকে ন্যূনতম মজুরির আওতায় আনা হবে। আরও ২০ শিল্পকে এর আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। তিনি জানান, পেট্রোল পাম্পের শ্রমিকদের মজুরি পুনঃনির্ধারণে বোর্ড গঠন হয়েছে। মালিক পক্ষ এ-সংক্রান্ত সভায় আসছে না। এ অবস্থায় করণীয় জানতে শ্রম মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ চেয়েছে মজুরি বোর্ড।
টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পে তিন যুগ ধরে একই মজুরির বিষয়ে জানতে চাইলে রাইসা ইসলাম বলেন, টাইপ ফাউন্ড্রি শিল্পের আর অস্তিত্ব নেই। খাতটি হয়তো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে।