‘আপনার মেয়েকে মেরে ফেলেছি, মৃতদেহ নিয়ে যান’
Published: 24th, April 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের কপাটিয়াপাড়া গ্রামে মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্ত্রী নাদিরা আক্তারকে (২৬) গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে আমিনুল ইসলাম নিজে শ্বশুর নজরুল ইসলামকে ফোন করে বলেন, “আপনার মেয়েকে মেরে ফেলছি। এসে মরদেহ নিয়ে যান।” এরপর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
নিহত নাদিরা আক্তার ও অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম দুজনেই শ্রীপুরে একটি ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। তাদের পারিবারিক জীবনে দীর্ঘদিন ধরেই কলহ চলছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।
নাদিরার ছোট ভাই রাজিব মিয়া বলেন, “প্রতিদিনের মতো আমি সকাল ৭টার দিকে কাজে বের হই। তখন বোনের ঘরের দরজা তালাবদ্ধ পাই। ভেবেছিলাম তিনি আগেই কাজে বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু পরে বাবা ফোন করে জানান, জামাই ফোন দিয়ে বলেছে আপাকে হত্যা করেছে। দ্রুত বাসায় ফিরে দেখি ঘরের দরজা তালাবদ্ধ, তালা ভেঙে রক্তাক্ত মরদেহ পাই।”
তিনি আরও জানান, আমিনুল ইসলামের আগেও একটি বিয়ে ছিল এবং সেই স্ত্রীকেও হত্যা করে জেল খেটেছে। এ তথ্য বিয়ের পর জানতে পারেন তারা। বিয়ের পর থেকেই নাদিরার ওপর নির্যাতন চলছিল।”
বাড়ির মালিক কামরুজ্জামান জানান, এই দম্পতি ছয় বছর ধরে তার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তিনি ঘটনা জানার পরপরই পুলিশকে খবর দেন।
মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো.
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?