গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের কপাটিয়াপাড়া গ্রামে মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে স্ত্রী নাদিরা আক্তারকে (২৬) গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে আমিনুল ইসলাম নিজে শ্বশুর নজরুল ইসলামকে ফোন করে বলেন, “আপনার মেয়েকে মেরে ফেলছি। এসে মরদেহ নিয়ে যান।” এরপর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে পালিয়ে যায়।

নিহত নাদিরা আক্তার ও অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম দুজনেই শ্রীপুরে একটি ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। তাদের পারিবারিক জীবনে দীর্ঘদিন ধরেই কলহ চলছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা।

নাদিরার ছোট ভাই রাজিব মিয়া বলেন, “প্রতিদিনের মতো আমি সকাল ৭টার দিকে কাজে বের হই। তখন বোনের ঘরের দরজা তালাবদ্ধ পাই। ভেবেছিলাম তিনি আগেই কাজে বেরিয়ে গেছেন। কিন্তু পরে বাবা ফোন করে জানান, জামাই ফোন দিয়ে বলেছে আপাকে হত্যা করেছে। দ্রুত বাসায় ফিরে দেখি ঘরের দরজা তালাবদ্ধ, তালা ভেঙে রক্তাক্ত মরদেহ পাই।”

তিনি আরও জানান, আমিনুল ইসলামের আগেও একটি বিয়ে ছিল এবং সেই স্ত্রীকেও হত্যা করে জেল খেটেছে। এ তথ্য বিয়ের পর জানতে পারেন তারা। বিয়ের পর থেকেই নাদিরার ওপর নির্যাতন চলছিল।”

বাড়ির মালিক কামরুজ্জামান জানান, এই দম্পতি ছয় বছর ধরে তার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তিনি ঘটনা জানার পরপরই পুলিশকে খবর দেন।

মাওনা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো.

হাসমতউল্লাহ বলেন, “তালাবদ্ধ ঘর খুলে ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পাশ থেকে একটি রক্তমাখা দা জব্দ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং আইনানুগ প্রক্রিয়া চলছে।”

ঢাকা/রফিক/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে

একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।

এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।

আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।

সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ