রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের ভূমিকা চান বাম নেতারা
Published: 27th, April 2025 GMT
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসনে চীনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের বামপন্থি দলগুলো। রোববার ঢাকা সফররত চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বাম নেতারা এ আহ্বান জানান। এদিন রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে প্রতিনিধিদলটি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর ডাইরেক্টর জেনারেল পেং জিউ বিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল আরও ছিলেন চেন ইয়াংপেই, ঝাং গুইউ।
সিপিবির পক্ষ থেকে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- দলের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ এবং সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী।
অন্যদিকে, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য ও আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান এবং মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক বৈঠকে যোগ দেন।
সিপিবির সঙ্গে বৈঠককালে উভয় দলের নেতারা বাংলাদেশসহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। এছাড়া দুই পার্টির দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
সিপিবি নেতারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং টেকসই উন্নয়নের চীনের কমিউনিস্ট পার্টি ও সরকারের ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করেন।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে সিপিবির সাহসী ভূমিকা তারা সবসময়ই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন।
জবাবে সিপিবি নেতারা জুলাই অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্খা ভিত্তিতে বাংলাদেশের মেহনতী মানুষের জন্য একটি বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সংহতি কামনা করেন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে বৈঠক
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে বৈঠককালে সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে চীনের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশিদের জন্য চীনের ভিসা আরও সহজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ চীনবিরোধী কোনো তৎপরতায় কাউকে বাংলাদেশকে ব্যবহারের সুযোগ দেবে না।
চীনের প্রতিনিধিদলের প্রধান পেং জিউ বিন বলেন, চীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে অটল থাকবে। চীন আগামীতে পারস্পরিক মর্যাদার ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে বহুমাত্রিক সহযোগিতার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আগামীতে উভয় পার্টির মধ্যকার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দুই নেতা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফুটবলার প্রতিমা এগিয়ে যাচ্ছেন, পাশে আছে কিশোর আলোসহ অনেকে
একটি পরিবারের ওপর নেমে আসা অপ্রত্যাশিত চাপ আর হতাশাকে দূর করেছে একটি সংবাদ। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় প্রতিমা মুন্ডার পড়াশোনা ও খেলাধুলা থমকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল মাত্র ৪৭ হাজার টাকার জন্য। প্রথম আলোয় প্রতিবেদন প্রকাশের পর মিলেছে সহযোগিতা, পরিশোধ হয়ে গেছে বিকেএসপির বকেয়া।
এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন প্রতিমার মা সুনিতা মুন্ডা। তাঁদের ওপর থেকে নেমে গেছে বড় ধরনের আর্থিক চাপ।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেএসপি প্রতিমার অভিভাবককে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছিল, তাঁদের মেয়ের বকেয়া বেতন ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা। সেই চিঠিতেই সতর্ক করে বলা হয়, ছয় মাসের বেশি বেতন বকেয়া থাকলে চূড়ান্ত সতর্কীকরণ, আর ১২ মাসের বেশি বকেয়া থাকলে বহিষ্কারের বিধান আছে। অর্থাভাবে যখন অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল প্রতিমার ভবিষ্যৎ, ঠিক সেই সময় ১১ অক্টোবর প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয় তাঁদের পরিবারের সংগ্রামের গল্প।
আরও পড়ুনবকেয়া বেতন চেয়ে বিকেএসপির চিঠি, ফুটবলার প্রতিমার পড়াশোনা বন্ধের পথে ১১ অক্টোবর ২০২৫প্রতিবেদনটি পাঠকের হৃদয়ে নাড়া দেয়। কিশোর আলোর পক্ষ থেকে প্রতিমার বকেয়া পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই দিনই বিকেলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে গিয়ে প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি প্রতিমা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে নেওয়া হয় এই উদ্যোগ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী সহায়তা করেন আরও ১০ হাজার টাকা। তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপা রানী সরকার দেন পাঁচ হাজার টাকা ও একটি ফুটবল।
সহায়তা পেয়ে স্বস্তি ফিরেছে পরিবারে। মুঠোফোনে প্রতিমা বলেন, ‘এখন আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। বিকেএসপির পাওনা ৪৬ হাজার ৮৪০ টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। আমি ভালো আছি, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা আর অনুশীলন করছি।’
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার প্রতিমা মুন্ডা ও তাঁর মা সুনিতা মুন্ডার হাতে কিশোর আলোর পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগরের সৌজন্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়