খুলনা মহানগরীতে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। পুলিশ মামলার প্রধান আসামি জ্যোতির বন্ধু হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) মামলা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খুলনা সদর থানার ওসি হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন মাসুম। 

তিনি বলেন, “ধর্ষণের ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় হুমায়ুন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হুমায়ুন প্রধান আসামি জ্যোতির বন্ধু। তিনি  রূপসা ষ্ট্যান্ড রোডের বাসিন্দা আব্দুল মজিদের ছেলে।”

আরো পড়ুন:

কুড়িগ্রামে ছুরিকাঘাতে মসলা বি‌ক্রেতা নিহত

৫১৭ মামলা প্রত্যাহারের সুপা‌রিশ, তালিকা প্রকাশ কর‌বে আইন মন্ত্রণালয়

ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রী ও মামলার বর্ণনা থেকে জানা যায়, খুলনা জেলার একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তিনি। দুই মাস আগে খুলনা সিটি করপোরেশন মার্কেটে নগরীর সুলতান আহমেদ রোডের হুমায়ুন কবির হিমুর ছেলে জ্যোতির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমালাপ শুরু হয়। পরে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

জ্যোতির যে আগে বিয়ে আছে তা ওই কলেজ ছাত্রী জানতেন না। জ্যোতি তাকে বিয়ের প্রলোভন দেন। গত ২৬ এপ্রিল তাকে নগরীর রূপসা ষ্ট্যান্ড রোডে বন্ধু জাহিদের পাঁচতলা ভাড়াবাড়িতে ডেকে নেন জ্যোতি।

বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন জ্যোতি। এরপর জ্যোতি তাকে ফোন করে তার অপর দুই বন্ধুর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চাপ দিতে থাকেন। রাজি না হওয়ায় ছাত্রীর সঙ্গে যোগযোগ বন্ধ করে দেন জ্যোতি। তাদের একান্ত সময় কাটানো মুহুর্তের কথা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন জ্যোতি।

গত সোমবার রাতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তিনি জ্যোতির বাড়ি সুলতান আহমেদ রোডে যান। সেখানে গেলে জ্যোতি তাকে রাস্তার ওপর ফেলে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। পরবর্তীতে এমন দাবি নিয়ে বাড়ির সামনে এলে তাকে হত্যার হুমকি দেন জ্যোতি। পরে ভুক্তভোগী বিষয়টি পুলিশকে জানান। পুলিশ জ্যোতির বাড়িতে গিয়ে তাকে পাইনি। পরে পুলিশ রূপসা ষ্ট্যান্ডের ওই পাঁচতলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করে।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল জ ছ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ

পরাজয়ের গ্লানি থেকে গর্বের গাঁথায় ফেরার গল্প যখন লেখা হয়, সেখানে একজন নায়ক থাকেন। এইবার সেই নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। সিলেটের লজ্জাজনক হার ভুলিয়ে দিয়ে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ যেন ঘুরে দাঁড়াল মেঘ ফুঁড়ে রোদ ওঠার মতো। অলরাউন্ড মিরাজের ব্যাটে-বলে দ্যুতি ছড়ানো আর তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে বিধ্বস্ত জিম্বাবুয়ে। ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ শেষ হলো ১-১ সমতায়।

প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে কোনো সুযোগই দেয়নি বাংলাদেশ। তাইজুল ও নাঈম ইসলামের নির্ভুল বোলিংয়ে মাত্র ২২৭ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। এরপর ব্যাট হাতে পাল্টা জবাব দেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। সাদমান ইসলামের ধারাবাহিকতা আর মিরাজের সংগ্রামী সেঞ্চুরিতে দল পৌঁছে যায় ৪৪৪ রানে। নেয় ২১৭ রানের লিড।

সাদমান তুলে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি, কিন্তু ম্যাচের মূল চিত্রনাট্য লিখলেন মিরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতকে তিনি ছিলেন নির্ভার, নিবেদিত এবং নিখুঁত। ১৪৩ বলের ইনিংসে ১১টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো তার ১০৪ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস শুধু দলীয় সংগ্রহে রানের সংযোজন ছিল না, ছিল প্রতিরোধ আর প্রতিশোধের প্রতীক।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করে মুজারাবানির ইতিহাস

ইনিংস ব‌্যবধানে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে বদলা নিলো বাংলাদেশ

তাইজুলের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে গড়েন ৬৩ রানের জুটি। এরপর তানজিম হাসান সাকিবের সঙ্গে নবম উইকেটে যোগ করেন আরও ৯৬ রান। তানজিম নিজেও খেলেন ৪১ রানের কার্যকর ইনিংস। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে মিরাজ যখন আউট হন, তখন স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশ—৪৪৪।

প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলতে নামা জিম্বাবুয়ের মাসেকসা ১১৫ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট নিয়ে রেখেছিলেন আলোচনার খোরাক।

দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের ইনিংস যেন শুরুই হলো পতনের ধ্বনি বাজিয়ে। মাত্র ৮ রানেই পড়ল ২ উইকেট। তাইজুল প্রথমে বোল্ড করলেন ব্রিয়ান বেনেটকে। এরপর এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেললেন নিক ওয়েলচকে। স্কোর যখন ৬৯, তখন উইকেট ৫টি। এরপর নাম মাত্র প্রতিরোধ গড়ে বেন কুরান ও ক্রেইগ আরভিন। কুরান করেন সর্বোচ্চ ৪৬ রান, আরভিন ২৫। বাকিরা যেন শুধুই আনুষ্ঠানিকতা সারলেন। ১১১ রানে অলআউট হয়ে লজ্জার হার বরণ করে নেয় জিম্বাবুয়ে।

মিরাজ বল হাতেও রচনা করলেন অনন্য মহাকাব্য। ২১ ওভারে ৮ মেডেনসহ মাত্র ৩২ রানে শিকার ৫ উইকেট। এটি তার ক্যারিয়ারের ১৩তম পাঁচ উইকেট শিকার। তাকে দারুণ সহায়তা দেন তাইজুল, ৩টি উইকেট নেন ৪২ রানে। নাঈম ইসলামের ঝুলিতে যায় ১ উইকেট।

একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ফাইফার, এমন কীর্তির সাক্ষী হওয়া সবসময় ঘটে না। মেহেদী হাসান মিরাজ সেই বিরল অর্জনের মালিক হয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন। শুধু এখানেই শেষ নয়, দুই টেস্টে মোট ১৫ উইকেট ও একটি দুর্দান্ত সেঞ্চুরির সুবাদে সিরিজ সেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতেই।

চট্টগ্রামে এই জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ শুধু সিরিজে সমতা ফেরায়নি, সিলেটের ক্ষতচিহ্নও কিছুটা মুছে দিয়েছে। মিরাজের ব্যাট-বলের বীরত্বে লেখা হলো এক প্রত্যাবর্তনের মহাকাব্য—যেখানে বাংলাদেশের ক্রিকেট আবারও প্রমাণ করেছে, তারা হার মানে না, হারিয়ে দিতে জানে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্যবিরোধীদের তোপের মুখে যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ
  • শ্রীলঙ্কার মাটিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ
  • মিরাজ বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ
  • চট্টগ্রামে অটোরিকশা চালকদের সমাবেশ পণ্ড, গ্রেপ্তার তিন
  • চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সমাবেশ পণ্ড, আটক ৩
  • পুলিশের ওপর হামলা করে আটক ব্যক্তিকে ছিনিয়ে নিল জনতা, গ্রেপ্তার ৩
  • রিকশাচালকদের সমাবেশ থেকে বাসদ নেতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার
  • চট্টগ্রামে ব্যাটরিচালিত রিকশা শ্রমিকদের সমাবেশ পণ্ড, আটক ৩
  • গতকালের বক্তব্যে রোহিঙ্গাদের জন্য ‘নিরাপদ অঞ্চল’ গড়ার কথা বোঝাতে চেয়েছি: জামায়াত নেতা তাহেরের বিবৃতি