মোহামেডানকে হারিয়ে ‘নীরবে’ চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
Published: 29th, April 2025 GMT
জয়ের খুব কাছে তখন আবাহনী স্পোর্টিং ক্লাব। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডে এক দর্শক আবাহনীর পতাকা দোলাচ্ছিলেন, উজ্জীবিত করছিলেন দলকে। তার সঙ্গে হাতে গোণা কয়েকজন। দেশের পট পরিবর্তনের পর আবাহনীর দুনিয়াও বদলে যেতে থাকে, মাত্র এক দর্শকের পতাকা দোলানোই তার প্রমাণ।
তবে পরিবর্তন হয়নি মাঠের পারফরম্যান্সে। একাগ্রতা, দৃড়তা, হার না মানসিকতায় আবার চ্যাম্পিয়ন আবাহনী! প্রতিপক্ষ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে হারিয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ২৪তম শিরোপা ঘরে তোলে আবাহনী। জয়ের পর ডাগআউট থেকে ক্রিকেটাররা দৌড়ে এসে উদযাপনে মেতে ওঠেন।
উৎসব বলতে এটুকুই। ছিল না ডোলের বাদ্য। অথচ আবাহনী চ্যাম্পিয়ন মানেই অন্যরকম কিছু ছিল। বলা যায় নিরবে মাঠের ক্রিকেটে দারুণ খেলে শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে আবাহানী। এদিকে বিগ বাজেটের তারকাবহুল দল গড়েও মোহামেডানের ট্রফি সংখ্যা এবারও দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেনি!
আরো পড়ুন:
মাহমুদউল্লাহ-আরিফুলের ফিফটিতে আবাহনীকে মোহামেডানের চ্যালেঞ্জ
আবাহনীর ২৪ নাকি মোহামেডানের ১০!
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ট্রফির লড়াইয়ে নামে আবাহনী-মোহামেডান। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেম ৭ উইকেটে ২৪০ রান করে সাদাকালো ক্লাবটি। তাড়া করতে নেমে মাত্র ৪০.
জয়ে দারুণ ভূমিকা রাখেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত-মোহাম্মদ মিথুন। দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ১৩৫ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচ শেষে দুজনকেই কাঁধে তোলেন সতীর্থরা। মোসাদ্দেক ৭৮ ও মিথুন ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
অথচ প্রথম ওভারেই শাহরিয়ার কমলকে হারিয়েছিল আবাহনী। এরপর জিসান আলমকে সঙ্গে নিয়ে ফিফটির জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন পারভেজ হোসেন ইমন। ২৮ রানে ইমন আউট হলে ভাঙে জুটি। জিসান ফেরেন ৫৫ রান করে।
মাঝে মেহরব ১০ রানের বেশি করতে পারেননি। এরপর বাকি কাজ সেরে দেন মোসাদ্দেক-মিথুন। মোহামেডানের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন নাসুম আহমেদ।
এর আগে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-আরিফুল হকের ফিফটিতে ভর করে মোহামেডান মোটামুটি চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে আবাহনীকে।
মাহমুদউল্লাহ-আরিফুল দুজনের ব্যাট থেকেই আসে সমান ৫০ রান। দুজনের ইনিংস ছিল ধীরগতির।মাহমুদউল্লার এই রান করতে লাগে ৬২ বল আর আরিফুলের নেন ৫৭ বল। রনি তালুকদারের ব্যাটে শুরুটা ভালো হলেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহ করতে পারেনি।
রনির ব্যাট থেকে আসে ৪৫ রান। মাঝে ৪২ রান করে ফরহাদ হোসেন। শেষ দিকে নাসুম আহমেদ ৪ ও মোস্তাফিজুর রহমান ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। ১৫ রান করেন আনিসুল ইসলাম।
আবাহনীর হয়ে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত দুটি করে উইকেট নেন।
ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর আর ফ ল উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
টাইব্রেকারে দুটি শট আটকে ফারইস্টকে বিদায় করে এআইইউবিকে ফাইনালে তুললেন রাজীব
ইস্পাহানি-প্রথম আলো তৃতীয় আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের ফাইনালে উঠেছে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এআইইউবি)।
জাতীয় স্টেডিয়ামে আজ প্রথম সেমিফাইনালে টুর্নামেন্টের গত আসরের রানার্সআপ এআইইউবি জিতেছে রোমাঞ্চকর টাইব্রেকারে। টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের রানার্সআপ ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিপক্ষে নির্ধারিত ৭০ মিনিটে ম্যাচটি ছিল ২-২ সমতায়। এরপর টাইব্রেকারে এআইইউবি জেতে ৬-৫ গোলে।
টুর্নামেন্টে টানা দ্বিতীয়বার শিরোপার চূড়ান্ত লড়াইয়ের টিকিট পেয়েছে এআইইউবি। নির্ধারিত সময়ে দুবার পিছিয়ে ম্যাচে ফিরেছে তারা, টাইব্রেকারেও একপর্যায়ে পিছিয়ে ছিল দলটি। টাইব্রেকারে দুটি শট আটকে এআইইউবিকে ফাইনালে তুলে নেন গত মৌসুমে দেশের শীর্ষ লিগে চট্টগ্রাম আবাহনীর হয়ে খেলা গোলকিপার রাজীব ইসলাম।
জাতীয় স্টেডিয়ামে গোটা ম্যাচজুড়েই ছিল টান টান উত্তেজনা। টাইব্রেকারে প্রথম চারটি শটে দুই দলই গোল করে। এআইইউবির আজিজুল হক অনন্তর নেওয়া পঞ্চম শট পোস্টে লাগে। এরপর এআইইউবির গোলকিপার রাজীব প্রতিপক্ষ গোলকিপার আরমান হোসেনের শট আটকে দলকে ম্যাচে রাখেন। তখন স্কোর দাঁড়ায় ৪-৪।
এরপর সাডেন ডেথের প্রথম শটে দুই দলই গোল করে, ৫-৫। কিন্তু সাডেন ডেথে ষষ্ঠ শটে এআইইউবি গোল করলেও ফারইস্টের সালমান গোল করতে পারেননি। তাঁর শট আটকে দেন এআইইউবির গোলকিপার রাজীব। আরমান ও সালমান দুই ভাই।
দুজনই টাইব্রেকারে শট মিস করেন। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৬-৫ গোলে জেতে এআইইউবি।
ফারইস্টের দুর্ভাগ্য, দুবার এগিয়ে গিয়েও এবং টাইব্রেকারে লিড নিয়েও তারা জিততে পারেনি। পারেনি এআইইউবির গোলকিপার রাজীব ইসলামের দৃঢ়তায়। জয়ের পর গোলকিপার রাজীবকে নিয়ে এআইইউবি মেতে ওঠে উল্লাসে। ম্যাচসেরার পুরস্কারও জিতেছেন এআইইউবির জয়ের নায়ক রাজীব।
মূল ম্যাচে এআইইউবির প্রাধান্য ছিল। তবে নির্ধারিত ৭০ মিনিটে তারা জিততে পারেনি। ৩০ মিনিটে গোল করে ক্ষয়িষ্ণু শক্তির দল নিয়ে মাঠে নামা ফারইস্টকে এগিয়ে দেন ব্রাদার্সের ফরোয়ার্ড মেরাজ প্রধান।
বাঁ দিক থেকে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে প্লেসিং করেন তিনি। ৪৪ মিনিটে সেই গোল শোধ করেন এআইইউবির আরিফুল হক। ৫৪ মিনিটে আবার গোল করে ফারইস্টকে এগিয়ে নেন মেরাজ। তবে দ্রুতই সেই গোল শোধ হয়ে যায়। ৫৯ মিনিটে গোলাম রাব্বি গোল করে ম্যাচে ২-২ সমতা ফেরান। এরপর ম্যাচ গড়ায় সরাসরি টাইব্রেকারে, যেখানে শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করে এআইইউবি।
ফারইস্ট আজ তাদের কয়েকজন সেরা খেলোয়াড়কে পায়নি। বাংলাদেশ লিগে খেলা থাকায় খেলতে পারেননি আবাহনীর ফরোয়ার্ড আসাদুল মোল্লা, একই দলের গোলকিপার পাপ্পু হোসেন, পুলিশের মিডফিল্ডার এমএস বাবলু, ফকিরেরপুলের ফরোয়ার্ড স্বাধীন হোসেন, প্রথম বিভাগের ডিফেন্ডার লিহান উদ্দিন এবং অধিনায়ক আল আমিন ও সেনাবাহিনীর গোলকিপার আশরাফুল।
ফারইস্ট পেয়েছে প্রিমিয়ার লিগে খেলা শুধু মেরাজকে। সেই মেরাজ দুই গোল করেও দলকে জেতাতে পারেননি।
অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগের আরামবাগের মিডফিল্ডার ওমর ফারুক মিঠু ও আক্কাস আলী, মোহামেডানের স্ট্রাইকার সৌরভ দেওয়ান, ডিফেন্ডার আজিজুল হক ও জাহিদ হাসানকে পেয়েছে এআইইউবি। আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখায় খেলতে পারেননি রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডার আলফাজ মিয়া।
ম্যাচসেরার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান ও জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, টুর্নামেন্টের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ইমতিয়াজ সুলতান জনি, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার ও ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. মো. মঞ্জুর ই খোদা তরফদার, ইস্পাহানি টি লিমিটেডের বিপণন মহাব্যবস্থাপক ওমর হান্নান, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক বিপ্লব ভট্টাচার্য, জাহিদ হাসান এমিলি ও মামুনুল ইসলাম।
গত বছর ফাইনালে এআইইউবি হেরে যায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কাছে। এবার তাদের ফাইনালের প্রতিপক্ষ হবে গণ বিশ্ববিদ্যালয় ও চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির মধ্যকার দ্বিতীয় সেমিফাইনালের জয়ী দল। ম্যাচটি আজই জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।