ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সারাদেশের কামিল মাদ্রাসাগুলোতে দুই বছর মেয়াদী কামিল স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

শনিবার সকাল দশটায় স্নাতকোত্তর-২০২৩ পরীক্ষা উপলক্ষে টঙ্গীর তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড.

মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ও প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবু জাফর খান পৃথক পৃথক কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শন শেষে ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, উপযুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা হচ্ছে। তারপরও আমরা বিভিন্ন কেন্দ্রের দিকে নজর রাখছি যাতে কোনোরকম অনিয়ম না হয়। কেউ অসদুপায় অবলম্বন করলেই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সেশনজট মুক্ত করে মাদরাসা শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় বদ্ধপরিকর।’ এক্ষেত্রে পরীক্ষা কেন্দ্রে নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে পরীক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী জানান, নকলমুক্ত উপযুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

এবারের পরীক্ষায় সারাদেশের মোট ১৪৯ কেন্দ্রে প্রায় ৪৩ হাজার পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন। সকাল নয়টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কামিল হাদিস, কামিল তাফসির, কামিল ফিকাহ, কামিল আদব বিষয়ে কামিল স্নাতকোত্তর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ২৪ মে পর্যন্ত পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ম ল পর ক ষ র পর ক ষ ম হ ম মদ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

হতাশা রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র বিদ্রোহে ঠেলে দিতে পারে: ক্রাইসিস গ্রুপ

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে হটিয়ে রাখাইন রাজ্যের উত্তরের বড় একটি অংশ দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি (এএ)। সেখানে আরাকান আর্মির উত্থানে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিতে শুরু করেছে। আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াই করতে তারা বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির থেকে সদস্য সংগ্রহের গতি বাড়িয়েছে।

রোহিঙ্গা মুসলিমরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু। আর আরাকান আর্মির প্রধান সমর্থক রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী।

রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এর সুযোগ নিচ্ছে এবং ধর্মীয় ভাষা ব্যবহার করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দলে টেনে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করছে বলে ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মিয়ানমারের জান্তা শাসকদের অন্যতম শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ায় দেশজুড়ে আরাকান আর্মির জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এ সময়ে তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো মানে মিয়ানমারের অনেক সাধারণ নাগরিকের চোখে রোহিঙ্গাদের ‘ভুল’ পক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হওয়া। এতে জনগণের মধ্যে রোহিঙ্গাদের গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাড়বে নিপীড়নের ঝুঁকি এবং এটা দেশটির বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইন সংস্কারের দীর্ঘমেয়াদি প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করবে।

যদিও আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। বরং রোহিঙ্গাদের এই বিদ্রোহ মিয়ানমারে আন্তসাম্প্রদায়িক সম্পর্কের ভয়াবহ ক্ষতি করবে এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ করে তুলবে।

আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের তৈরি করা ‘বাংলাদেশ/ মিয়ানমার: রোহিঙ্গা বিদ্রোহের ঝুঁকি’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে চলমান পরিস্থিতিতে বাংলাদের কী করা উচিত, সে বিষয়েও কিছু সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো রাখাইনে নিজেদের রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধি বলে দাবি করে। বাংলাদেশে শরণার্থীশিবিরগুলোতে তারা কয়েক বছর ধরে রক্তক্ষয়ী অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিল।

তবে রাখাইনে আরাকান আর্মির উত্থানের পর শরণার্থীশিবিরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর পারস্পরিক দখলদারির সংঘাত দ্রুত কম গেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে তারা একটি সমঝোতায় পৌঁছায়—একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এখন তাদের লক্ষ্য আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করা, এ জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দলে সদস্য বাড়াচ্ছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশের সরকার আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের যে সীমান্ত রয়েছে, তার পুরোটাই এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।

রাখাইনে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান হামলা আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশের এই আলোচনাগুলোকে দুর্বল করে দিতে পারে। শুধু তা–ই নয়, বরং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাবিরোধী মনোভাব আরও প্রবল হতে পারে—যা প্রায় ১০ লাখ শরণার্থীর প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

আরাকান আর্মি

সম্পর্কিত নিবন্ধ