Samakal:
2025-05-04@17:26:27 GMT

সেই ওসি সুজন মিঞা প্রত্যাহার

Published: 4th, May 2025 GMT

সেই ওসি সুজন মিঞা প্রত্যাহার

দিনাজপুরের হাকিমপুরে শ্রমিক দল আয়োজিত মে দিবসের র‌্যালিতে অংশ নেওয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সুজন মিঞাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে আজ রোববার দুপুরে ১২টার দিকে তাকে প্রত্যাহার করে দিনাজপুর জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। 

জেলা পুলিশ সুপার মো.

মারুফাত হুসাইন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মে দিবস উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা থেকে পৌর শ্রমিক দল র‌্যালি বের করে। র‌্যালিটি হিলি বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাওয়ার সময় তাতে হাকিমপুর থানার ওসি মো. সুজন মিঞা অংশ নেন। এ সংক্রান্ত ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দিনাজপুর জেলা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ওসি মো. সুজন মিঞা একটি রাজনৈতিক দলের র‌্যালিতে অংশ নেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তদন্ত সাপেক্ষে তাকে হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাকে দিনাজপুর জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ওসি মো. সুজন মিঞা এ বিষয়ে জানান, হাকিমপুর থানা থেকে তাকে ক্লোজড করা হয়নি। তবে দিনাজপুর অপরাধ বিভাগে বদলি করা হয়েছে। মিছিলে অংশ নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে তিনি মিছিলে ঢুকে যান। এটি ভুলবশত হয়েছে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন জানান, রোববার সকালে তাকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। শুধু একটি বিষয়ে না, নানা বিষয়ে এমন বদলি হয়ে থাকে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স জন ম ঞ

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরির আশায় গিয়ে রণাঙ্গনে নাজির, পরিবারে উদ্বেগ

প্যাকেজিং কোম্পানিতে চাকরির আশ্বাসে ১২ লাখ টাকায় রাশিয়ায় যান টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার নাজির উদ্দিন (৩৭)। প্রথম কিছুদিন সব ঠিকই ছিল। কিন্তু কয়েক দিন পর তাঁকে পাঠানো হয় সামরিক প্রশিক্ষণে। এরপর রণাঙ্গনে। এখন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ভারী অস্ত্র হাতে সম্মুখযুদ্ধে নাজির। দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরিবারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে নাজিরের মা, বাবা ও স্ত্রীর।

ঘাটাইলের দীঘলকান্দি ইউনিয়নের কুরমুশী গ্রামের ফয়েজ উদ্দিন ও নূরজাহান বেগম দম্পতির একমাত্র সন্তান নাজির উদ্দিন। তাঁর স্ত্রী ও তিন বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, সংসারে সচ্ছলতা আনতে ২০১৭ সালে ইরাকে গিয়েছিলেন নাজির। তিন বছর সেখানে থেকে দেশে ফিরে ব্যবসা শুরু করেন; কিন্তু সফল হননি। পরে আবার বিদেশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যোগাযোগ করেন ঢাকার মিরপুর এলাকার একটি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। ওই প্রতিষ্ঠানের মামুন মিয়া নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে রাশিয়া যাওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। এ জন্য গুনতে হয় ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা। 

ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘চড়া সুদে ১২ লাখ টাকা ঋণ করে ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর আমার ছেলেকে রাশিয়া পাঠাই। তাকে প্যাকেজিং কোম্পানিতে কাজ দেওয়া হয়। কিছুদিন ভালোই চলছিল। এর মধ্যে মাসখানেক আগে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় নাজির। গত ১৬ এপ্রিল সকালে হঠাৎ সে ফোন করে বলে, তোমাদের সঙ্গে আমার আর দেখা নাও হতে পারে। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমাকে যুদ্ধ করতে ইউক্রেনে নেওয়া হচ্ছে। ১৪ দিনের সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এসব কিছু করা হয়েছে জোর করে।’ 
এটাই ছিল ছেলের সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক ফয়েজ উদ্দিনের শেষ কথা। এরপর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। ফয়েজ উদ্দিন বলেন, ‘সরকার যেন আমার ছেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে। যারা মিথ্যা আশ্বাসে তাকে রাশিয়ায় নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে ঠেলে দিয়েছে, তাদের বিচার চাই।’
নাজিরের মা নূরজাহান বেগম মানসিক প্রতিবন্ধী। ছেলে যে কঠিন বিপদে আছে, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। এদিকে নাজিরের চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী কুলসুম বেগম। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী বেঁচে আছে, নাকি মরে গেছে– কিছুই জানি না। মেয়েটা সারাক্ষণ বাবা বাবা করে। প্রতিদিন বাবার আশায় মোবাইল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। সরকারের প্রতি অনুরোধ, আমার স্বামীকে যেন ফেরানোর ব্যবস্থা করা হয়।’
এর আগে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে তিন বাংলাদেশি নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার হুমায়ুন কবির, ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ইয়াসিন মিয়া শেখ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের আকরাম হোসেন। সারাদেশে আরও কয়েকজনের খবর পাওয়া গেছে, যারা এখন রাশিয়ায় যুদ্ধক্ষেত্রে রয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ