তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ বিরোধে জড়িত হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার স্থানীয় দুটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। ওই দুই গোষ্ঠীর মাঝে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রাম্য আধিপত্যের দ্বন্দ্ব বিরাজমান বলে জানা গেছে।  

গরুর খড় খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের আলাউদ্দিন মিয়া ও নুরুল হুদা গোষ্ঠীর লোকজন এ সংঘর্ষে জড়ার। গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারে প্রভাবশালী পরিবার দুটির মাঝে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলমান। সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মাঝে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে সংঘর্ষে লিপ্তদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনেক দিন ধরেই গ্রাম্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এ দুই গোষ্ঠীর মাঝে বিরোধ চলমান। কয়েকদিন আগে গরুর খড় খাওয়ার মতো তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ উস্কে ওঠে। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে স্থানীয় মুরুব্বিরা বিষয়টি সালিশের মাধ্যমে মীমাংসার উদ্যোগ নেন। এর আগেই ঘটনার দিন দুপুরে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

আহতদের মধ্যে কাওছার মিয়া, শফিকুল ইসলাম, আলী সমেদ, কুদরত মিয়া, তকদির মিয়া, আরজু মিয়া, জসিম মিয়া, আলামিন মিয়া, বাহুল মিয়া, নয়ন মিয়া, মন্নাফ মিয়া, কুদ্দুছ মিয়া, জমসের মিয়া, মিজান মিয়া, বাবুল মিয়া, আফজাল মিয়া, মাহফজুল মিয়া, আবু লায়েকের পরিচয় জানা গেছে।

বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, উভয়পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি গরুর খড় খাওয়ানো নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরেই সংঘর্ষে জড়ায় উভয়পক্ষ। ঘটনাস্থলে চার রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত উভয়পক ষ স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’

পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।

এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ধস, রক্তের জন্য হাহাকার
  • শৈলকুপায় কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত ১৭, হাসপাতালে নেই ভ্যাকসিন
  • তথ্য গোপন করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছরের কারাদণ্ড
  • প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড
  • যুবদল-ছাত্রদলের সংঘর্ষ ও গোলাগুলি, আহত ১০