আধিপত্যের দ্বন্দ্বে টেঁটা বল্লমে ক্ষতবিক্ষত ৫০ জন
Published: 5th, May 2025 GMT
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘ বিরোধে জড়িত হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার স্থানীয় দুটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। ওই দুই গোষ্ঠীর মাঝে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রাম্য আধিপত্যের দ্বন্দ্ব বিরাজমান বলে জানা গেছে।
গরুর খড় খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের আলাউদ্দিন মিয়া ও নুরুল হুদা গোষ্ঠীর লোকজন এ সংঘর্ষে জড়ার। গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তারে প্রভাবশালী পরিবার দুটির মাঝে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলমান। সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মাঝে টেঁটাবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে সংঘর্ষে লিপ্তদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনেক দিন ধরেই গ্রাম্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এ দুই গোষ্ঠীর মাঝে বিরোধ চলমান। কয়েকদিন আগে গরুর খড় খাওয়ার মতো তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে বিরোধ উস্কে ওঠে। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে স্থানীয় মুরুব্বিরা বিষয়টি সালিশের মাধ্যমে মীমাংসার উদ্যোগ নেন। এর আগেই ঘটনার দিন দুপুরে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
আহতদের মধ্যে কাওছার মিয়া, শফিকুল ইসলাম, আলী সমেদ, কুদরত মিয়া, তকদির মিয়া, আরজু মিয়া, জসিম মিয়া, আলামিন মিয়া, বাহুল মিয়া, নয়ন মিয়া, মন্নাফ মিয়া, কুদ্দুছ মিয়া, জমসের মিয়া, মিজান মিয়া, বাবুল মিয়া, আফজাল মিয়া, মাহফজুল মিয়া, আবু লায়েকের পরিচয় জানা গেছে।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, উভয়পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি গরুর খড় খাওয়ানো নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরেই সংঘর্ষে জড়ায় উভয়পক্ষ। ঘটনাস্থলে চার রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ আহত উভয়পক ষ স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।