রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে আফতাব আহমেদ (২০) নামের এক তরুণকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে ছিনতাইকারীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আফতাব উত্তরা ইউনাইটেড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছেন আফতাবের বাবা আলাউদ্দিন আল আজাদ। তিনি বলেন, গতকাল বিকেলে আফতাব দক্ষিণখান আশকোনার বাসা থেকে গোপীবাগে এক আত্মীয়ের বাসায় যান। রাতে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনের ছাদে উঠে বিমানবন্দর রেলস্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। রাত ৯টার দিকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ট্রেনের ছাদে অবস্থানকারী তিন-চার ছিনতাইকারী আফতাবকে ঘিরে ধরে মারধর করে এবং সঙ্গে থাকা ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা আফতাবকে ট্রেনের ছাদ থেকে নিচে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।

আলাউদ্দিন আল আজাদ আরও বলেন, আহত অবস্থায় আফতাবকে পথচারীরা প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন আফতাবের মাথায় রক্তরক্ষরণ হয়নি। সে শঙ্কামুক্ত। বর্তমানে তিনি নিউরো সার্জারি বিভাগের ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের চিকিৎসাধীন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো.

ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, আফতাবের মাথায় আঘাত লেগেছে। তবে গুরুতর কিছু নয়। তাঁর শরীরে কয়েকটি স্থানেও জখম হয়েছে।

আফতাবের পরিবার জানায়, আফতাবের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে। তিনি পরিবারের সঙ্গে দক্ষিণখান আশকোনা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আফত ব র

এছাড়াও পড়ুন:

সন্তান পালনে প্রচলিত পাঁচ ভুল

একটা সময় ছিল, যখন অভিভাবকের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্কটা ছিল ভয়ের, বিশেষ করে বাবার সঙ্গে। তবে সেই সময় বেশির ভাগ শিশু বেড়ে উঠত এক বৃহৎ পারিবারিক পরিসরে। সময় বদলেছে। এ যুগের শিশু অনেকটাই ‘একা’। বাড়ির বাইরে শিশুকে স্বাধীনভাবে খেলতে দিতেও অনেক অভিভাবক অনিরাপদ বোধ করেন। শিশুর নিরাপদ আশ্রয় কেবল তার পরিবার। ভরসার জায়গা কেবল তার মা-বাবা আর নিকটাত্মীয়রাই।
সন্তানপালনে প্রচলিত কিছু ভুল এবং তা সংশোধন সম্পর্কে জানালেন শিশু-কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যার সহকারী অধ্যাপক এবং যুক্তরাজ্যের সিনিয়র ক্লিনিক্যাল ফেলো ডা. টুম্পা ইন্দ্রানী ঘোষ

১. সবকিছুর চেয়ে শিশুর গুরুত্ব বেশি

আপনার সন্তান নিঃসন্দেহেই আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তবে তার মানে এই নয় যে তাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আপনি নিজেকে নিঃশেষ করে ফেলবেন। নিজের সুস্থতার প্রতিও গুরুত্ব দিতে হবে। কিছুটা সময় রাখুন নিজের জন্যও।

২. কোনো বিষয় না জানলে স্বীকার করা যাবে না

একটা মানুষ সব বিষয় জানবেন না, এটাই স্বাভাবিক। শিশুর সামনে তা স্বীকার করাও দোষের নয়। এতে আপনি তার চোখে ‘ছোট’ হয়ে যাবেন, এমন ভাবনা ভুল। বরং আপনি কিছু না জানলে তাকে বলুন যে আপনি তা জেনে নিয়ে পরে জানাবেন। শিশুকেও বিষয়টি জানার চেষ্টা করতে বলতে পারেন। জানার পর সে যাতে আপনার সঙ্গে বিষয়টি ভাগ করে নেয়, সে ব্যাপারেও তাকে উৎসাহ দিন।

৩. সব সময় শিশুর প্রশংসা করা উচিত

শিশুকে উৎসাহ দিতে প্রশংসা করতে হবে, এটা ঠিক। কিন্তু শিশুর ভুলগুলোও আপনাকেই ধরিয়ে দিতে হবে। নইলে সে অনেক কিছুই শিখতে পারবে না। ধরা যাক, শিশু ডাইনিংয়ে বাড়ির সবার সঙ্গে বসে খাচ্ছে। হয়তো সে খাবার ফেলে-ছড়িয়েই খাচ্ছে। প্রাথমিক অবস্থায় এটা মেনে নেওয়াই ভালো। তবে একটা বয়সে গিয়ে তাকে খাবার টেবিলের আদবকেতাও শেখাতে হবে, বলতে হবে টেবিল গোছানোর মতো টুকটাক কাজে সাহায্য করতেও। এসব শেখানোর পরও যদি সে না করে, তখন কিন্তু আপনাকে তার ভুল ধরিয়ে দিতেই হবে।

আরও পড়ুনশিশুর কান্না ট্যানট্রাম নাকি মেল্টডাউন? দুটির পার্থক্য জেনে রাখা এত জরুরি কেন২৬ জুন ২০২৫৪. শিশুকে দুঃখ বুঝতে দেওয়া যাবে না

দুঃখ তো জীবনেরই অংশ। নশ্বর এই পৃথিবীতে সবদিক থেকে সুখী হওয়া প্রায় অসম্ভব। অভাব, দুঃখ, কষ্ট—জীবনের বাস্তবতা থেকে শিশুকে আড়ালে রাখার প্রয়োজন নেই সব সময়। শিশুর সব চাওয়া পূরণ না করলে কোনো ক্ষতি নেই। বরং বাস্তবতা বুঝেই বড় হোক সে। আর্থিক অসংগতি থাকলে শিশুর বয়স বুঝে তা জানানো যেতে পারে। তবে এ নিয়ে তাকে হতাশাগ্রস্ত করে ফেলবেন না। সহজভাবে বুঝিয়ে বলুন। এমনভাবে বলুন, যাতে নিজের পরিবারের কারণে সে নিজেকে দুর্ভাগা মনে না করে, অন্যদের হিংসাও না করে।

৫. শাস্তি না দিলে শোধরাবে না

এমনও অভিভাবক আছেন, যাঁরা ভাবেন, শাস্তি না দিলে সন্তানের ভুল শোধরাবে না। এই ভাবনাও ভুল। প্রয়োজন হলে শিশুকে আপনি অবশ্যই শাসন করবেন। কিন্তু খেয়াল রাখবেন, তা করতে গিয়ে যেন আপনার সঙ্গে তার সম্পর্কের ভিতটা দুর্বল হয়ে না পড়ে। শিশুকে মারবেন না। কটু কথা বলবেন না। রেগে ভয়ংকরদর্শন একজন মানুষ হয়ে উঠবেন না। বরং শিশুর কোন কাজটা ভুল হয়েছে, কেন ভুল হয়েছে, তা বুঝিয়ে বলুন।

আরও পড়ুনসন্তান মানুষ করার চাপ যেভাবে সামলাবেন২১ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ