কুমিল্লার দেবিদ্বারে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে সফিউল্লাহ নামে এক ভ্যানচালককে ড্রিল মেশিন দিয়ে চোখ উপড়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। এ ঘটনায় গ্যারেজমা‌লিক মো. রাসেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১।

শনিবার রাতে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নগরেরহাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

আজ রোববার দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান কুমিল্লা র‌্যাব ১১ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান।

রাসেল উপজেলার ভানী ইউনিয়নের আন্দিরপাড় গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে। নিহত সফিউল্লাহ (৩৮) উপজেলার ভানী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দীনের ছেলে। র‌্যাব জানায়, পাওনা ৪৫ হাজার টাকা ফেরত চাওয়া নিয়ে বিরোধের জেরে ৬ মে দেবিদ্বারের ত্রিবিদ্যা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরদিন রাতে নিহত সফিউল্লার স্ত্রী রাসেলকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহার বলা হয়, ৫ মে রাসেল পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে সফিউল্লাহকে তার গ্যারেজে যেতে বলেন। পরদিন দুপুরে সফিউল্লাহ সেখানে গেলে টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রাসেল শাবল দিয়ে তার মাথা ও বুকে আঘাত করেন। এতে সফিউল্লাহ অচেতন হয়ে পড়লে রাসেল গ্যারেজে থাকা ড্রিল মেশিন দিয়ে চোখ তুলে তাকে হত্যার পালিয়ে যান।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসু‌দ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, হত্যা মামলার প্রধান আসামি রাসেলকে গ্রেপ্তার থানায় সোপর্দ করেছে র‌্যাব। তিনি আদালতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকার করেছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ