আগস্ট-অক্টোবরেই ভোট হতে পারে, ডিসেম্বরে কেন যেতে হবে: আমীর খসরু
Published: 18th, May 2025 GMT
নির্বাচন যত বিলম্বিত হচ্ছে, দেশকে তত বেশি অস্থিরতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি প্রশ্ন রাখেন, নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বর পর্যন্ত যেতে হবে কেন? আমি তো দেখছি ডিসেম্বর পর্যন্ত যাওয়ার কোনো কারণ নেই। নির্বাচনের জন্য তিন মাস সময় দরকার। আগস্ট, সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে নির্বাচন হতে পারে।
রোববার রাজধানীর বনানীতে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, জাতি এখন এক গভীর শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ এক অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে আছে। দেশ কোথায় যাচ্ছে, কেউ জানে না। সবাই মিলে স্বৈরাচার বিদায় করেছে। এর পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশ পরিচালনার যে প্রত্যাশা ছিল, তা হয়নি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, সরকার এমনভাবে কাজ করছে, যেন তারা একটি নির্বাচিত সরকার। অথচ এটি অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের দায়িত্ব ছিল একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করে ক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের কাছে হস্তান্তর করা।
সরকারের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, করিডোর, বন্দর, বিনিয়োগ সম্মেলন এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এই সরকারের এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার বৈধতা কোথায়? এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র-সংক্রান্ত আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন আমীর খসরু।
তিনি বলেন, আদালতের আদেশ মানা না হলে, আইনের শাসনের প্রশ্ন চলে আসে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কার স্বার্থে কাজ করছে, সেটিও এখন প্রশ্নবিদ্ধ। সরকার বলে সংস্কার হবে, ঐকমত্য হবে। কিন্তু সেই ঐকমত্য কোথায় তৈরি হচ্ছে? কাদের সঙ্গে এই মতৈক্য?
বিএনপির অন্যতম এ নীতিনির্ধারক বলেন, বাংলাদেশে আমরা একটি স্থিতিশীল সহাবস্থানের রাজনীতি করতে চাই। সাংঘর্ষিক কোনো রাজনীতি আমরা চাই না। যারা বিভিন্নভাবে এটিকে ভিন্ন দিকে নিতে চাচ্ছেন, আমরা তার বিরোধিতা করবই।
তিনি বলেন, আগামীতে যত নির্বাচন হবে, তা যেন সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হয়। এটি যেন একটি রুটিনে পরিণত হয়। সরকার যে আস্থা হারাচ্ছে, এটি দেশের জন্য দুর্ভাগ্য। বিএনপির পক্ষ থেকে দুই মাস আগে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়টি। লিখিতও দিয়েছি। অর্থাৎ, আইনি প্রক্রিয়ায়। কিন্তু সরকার নাটক কেন করল, মানুষের মনে এমন প্রশ্ন রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’
সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি বরাবর অভিযোগ করেন।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।