পদত্যাগ করতে পারেন ফারুক, আমিনুলকে নিয়ে আলোচনা
Published: 29th, May 2025 GMT
গত কিছুদিন ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) হট সিটে রদবদলের খবর শোনা যাচ্ছিল। নানা কারণে প্রবল সমালোচিত হয়ে আসছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। সমালোচনার ব্যাখ্যা প্রতিবার দিলেও আশাব্যঞ্জক উন্নতি হচ্ছিল না। যার কারণে সরকারও তাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে।
সেই সূত্রেই গতকাল রাতে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাসভবনে দেখা করেছেন ফারুক। দুজনের আলোচনায় বিসিবির আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে আসলেও ক্রীড়া উপদেষ্টা ফারুককে বার্তা দিয়েছেন বিসিবির শীর্ষ পদে তারা পরিবর্তনের কথা ভাবছে।
যে কারণে পদত্যাগের সিদ্ধান্তকে বেছে নিতে যাচ্ছেন ফারুক। সরকার সামনে এসে তাকে সরিয়ে দিলে আইসিসির নজরে আসবে। দেশের ক্রিকেটের ওপর সরকারের প্রভাবের প্রমাণ পেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধও হতে পারে বাংলাদেশ। বিশ্বস্ত সূত্র নিশ্চিত করেছে, এ জন্য ফারুক নিজ থেকে সরে যেতে চাচ্ছেন। দুয়েক দিনের মধ্যেই ফারুক নিজের পদত্যাগপত্র বোর্ডকে দেবেন। এ ব্যাপারে ফারুকের সঙ্গে রাতেই রাইজিংবিডির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি।
গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের পর বিসিবি সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন নাজমুল হাসান পাপন। এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের যোগসাজশে আরো কয়েকজন পরিচালক নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বিসিবির জন্য ফারুক আহমেদ ও নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। পরবর্তীতে ফারুক বিসিবির সভাপতি নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
কিন্তু শুরু থেকে তার কাজ নিয়ে প্রবল সমালোচনা হচ্ছিল। ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এসেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া মাঠের ক্রিকেটেও নেই কোনো সুখবর। যার কারণে বিসিবি সভাপতি হিসেবে প্রবল সমালোচিত হচ্ছিলেন তিনি।
সরকার মনোনীত প্রতিনিধি হওয়ায় ফারুককে সরাতে খুব বেশি জটিলতার মধ্যে পড়বে না সরকার। ফারুককে নিজেদের ভাবনা পরিস্কার করে বলে দেওয়ায় তার পদত্যাগ করাটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
এদিকে হঠাৎ ঢাকায় এসে আলোচনা তুঙ্গে তুলেছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। শুরুতে শোনা গিয়েছিল, জরুরী পারিবারিক কাজেই ঢাকা পা পড়েছে আমিনুল। আইসিসির চাকুরী করায় বিভিন্ন দেশে যেতে হয় তাকে। ছুটি নিয়ে ঢাকায় এসেছেন তিনি। কিন্তু এখন শোরগোল শুরু হয়েছে, আমিনুল হতে যাচ্ছেন পরবর্তী বিসিবি সভাপতি। যদিও এখনও কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।
ফারুকের পদত্যাগ, আমিনুলের নিয়োগ সবকিছু হতেই সময়ের প্রয়োজন। আগামী কয়েক দিন ক্রিকেটাঙ্গন মাঠের ক্রিকেটকে পাশ কাটিয়ে বিসিবির হট চেয়ার নিয়ে ব্যস্ত থাকবে তা বোঝাই যাচ্ছে।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য গ কর আম ন ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।
আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।
আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।
রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।