রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২৫ লাখ টাকা ও ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করেছে ডাকাত দল। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ইকরচালী ইউনিয়নের প্রামাণিকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

ডাকাতেরা প্রামাণিকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রাসায়নিক সার ডিলার সাকলাইন প্রামাণিক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বেঁধে রেখে আলমারির তালা ভেঙে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। সাকলাইন ইকরচালী ইউনিয়নের প্রয়াত চেয়ারম্যান মোবারক প্রামাণিকের ছেলে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ভুক্তভোগী সাকলাইন প্রামাণিক জানান, গভীর রাতে ঘরের দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ পান। দরজা খুলতেই অস্ত্রধারী পাঁচ থেকে ছয়জন ডাকাত তাঁকে জিম্মি করে হাত বেঁধে ফেলেন। পরে তাঁকে দিয়ে তাঁর মায়ের ঘরের দরজায় কড়া নাড়ানো হয়। তাঁর মা গোলাপী বেগম দরজা খোলার পর তাঁকেও একইভাবে বেঁধে ফেলে। এরপর তাঁর বোন মাসুমাকেও রশি দিয়ে বাঁধা হয়। তারপর ডাকাতেরা ঘরের দুটি আলমারির তালা ভেঙে সার বিক্রির ২৫ লাখ টাকা এবং স্ত্রী-স্বজনদের ব্যবহৃত প্রায় ৩০ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। ভোরে প্রতিবেশীরা তাঁদের বাড়িতে গিয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করেন।

সাকলাইন প্রামাণিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত–পা বেঁধে আমাদের ২৫ লাখ টাকা ও ৩০ ভরি স্বর্ণের জিনিসপত্র নিয়ে গেছে ডাকাতেরা। প্রায় ৮০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। পুলিশ এসেছিল। আমরা মামলা করব।’

খবর পেয়ে তারাগঞ্জ থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যান। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ডাকাতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স বর ণ ল ক র ২৫ ল খ ট ক

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ