চট্টগ্রামে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে নারীকে লাথি মারার ঘটনায় আকাশ চৌধুরী নামে একজনকে বহিষ্কার করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার রাতে দলের চট্টগ্রাম মহানগরের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহর সই করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে তাঁকে জামায়াতের কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২৮ মে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত দুটি সংগঠনের কর্মসূচিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ও ঘৃণ্য দৃশ্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কোনো ব্যাখ্যা ব্যতীত আমরা এহেন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সেদিন প্রেস ক্লাবে আয়োজিত দুটি সংগঠনের কর্মসূচি সম্বন্ধে আমরা পূর্ব থেকে ওয়াকিবহাল ছিলাম না, তাই আমাদের কোনো পর্যায়ের জনশক্তিকে সেখানে যাওয়ার নির্দেশনার প্রশ্নই ওঠে না। সেদিনের সংঘটিত ঘটনার সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই। তাই এই ঘটনার কোনো দায়দায়িত্ব জামায়াতে ইসলামী বহন করবে না।’

চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সেদিনের অনভিপ্রেত ঘটনার দায় কেবলমাত্র সেখানে উপস্থিত দায়ী ব্যক্তিদের ওপরই বর্তায়। বিশেষ করে আকাশ চৌধুরী নামে সংগঠনের একজন কর্মী ঊর্ধ্বতন সংগঠনের অনুমতি ব্যতিরেকে উপস্থিত হয়ে উক্ত কর্মসূচিতে যে কাজ করেছে, তা চরম নিন্দনীয়। একটি সুশৃঙ্খল ও দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী দেশব্যাপী পরিচিত। একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জামায়াতে ইসলামী দিন–রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে, কোনোভাবেই আমরা এ ধরনের কার্যক্রমকে প্রশ্রয় দেওয়ার পক্ষপাতী নই।’

এর আগে গত বুধবার চট্টগ্রামে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটে। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নগরের জামালখান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় ১২ জন আহত হন।

এদিন সন্ধ্যায় একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ১৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, হামলার পর প্রেসক্লাবের পাশে একটি ভবনের নিচে আশ্রয় নেন গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতা-কর্মীরা। সেখানে একজন পুলিশ সদস্যকেও দেখা গেছে। ওই ব্যক্তি পুলিশের চোখ এড়িয়ে নেতা-কর্মীদের পেছনে যান। সেখানে দাঁড়িয়ে হঠাৎ একজনকে লাথি মারেন তিনি। এরপর ঘুরে আবার আরেক নারীকে লাথি মারেন।

লাথি মারতে যে ব্যক্তিকে দেখা গেছে, তিনি ছাত্রশিবিরের সাবেক কর্মী বলে জানিয়েছেন ছাত্র জোটের নেতা–কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। তিনি ‘শিবির ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিত বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তবে ছাত্রশিবির বলছে, তিনি শিবিরের দায়িত্বশীল কোনো পদে নেই। শিবিরের কেউ এ কাজে জড়িত নন।

এর আগেও নগরের মুরাদপুরে সুন্নিদের জমায়েতে আকাশ চৌধুরীর নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ উঠেছিল। আকাশ চৌধুরীর বহিষ্কারের বিষয়ের জামায়াতে ইসলামীর একাধিক নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুনছাত্রজোটের কর্মসূচিতে নারীসহ দুজনকে লাথি মারার অভিযোগ ‘শিবির ক্যাডারের’ বিরুদ্ধে২৯ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গঠন র র কর ম ঘটন র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মাগুরায় চোর সন্দেহে একজনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় চুরির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বেলা পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তির নাম মো. ইসরাফিল (৪০)। তাঁর বাড়ি উপজেলা সদরের জাঙ্গালিয়া গ্রামে।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ ভোরে জাঙ্গালিয়া গ্রামে তিনটি মুঠোফোন ও নগদ ১ হাজার ৬০০ টাকা চুরি হয়। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এলাকাবাসী ইসরাফিলকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে এনে মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ইসরাফিলের পরিবারের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়েক দিন আগে পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের ইমরুল নামের এক ব্যক্তির মুঠোফোন চুরি হয়। সে সময় থেকেই ইসরাফিলকে সন্দেহ করা হচ্ছিল। আজ এলাকায় আরও একটি চুরির ঘটনা ঘটলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে তাঁকে বাড়ি থেকে ধরে এনে পিটিয়ে হত্যা করেন।

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহমান বলেন, একরামুল নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তিনটি মুঠোফোন ও টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় ইসরাফিলকে অভিযুক্ত করে স্থানীয় লোকজন পিটুনি দেন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আগে কয়েকটি চুরির অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে কোনো মামলা নেই। এ ঘটনায় তাঁর পরিবার থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লক্ষ্মীপুরে মামলায় জড়ানোর প্রতিবাদ ভুক্তভোগী পরিবারের
  • মাগুরায় চোর সন্দেহে একজনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা