সোনারগাঁয়ে বহিষ্কৃত যুবদল নেতার সাথে একই মঞ্চে জেলা যুবদলের আহবায়ক, ক্ষোভ
Published: 2nd, June 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে চাঁদাবাজির দায়ে বহিষ্কৃত যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আশরাফ ভূইয়ার সাথে একই মঞ্চে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদেকুর রহমান সাদেককে দেখে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
একই মঞ্চে তাদের অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় পুরো জেলায় যুবদলের নেতাকর্মী মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে।
গত রবিবার বিকেলে উপজেলার পেরাবো এলাকার ফান ল্যান্ড পার্কে শহীদ জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে বসে বিভিন্ন আলাপ ও দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। এরপর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনা সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, দখলবাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২৩ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম সোহেল স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আশরাফ ভূঁইয়াকে সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সেই বিজ্ঞপ্তিতে যুবদলের নেতাকর্মীদের তার সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাংগঠনিক সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক তার সাথে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করেই যাচ্ছেন। এতে একাধিবার বিতর্ক সৃষ্টি হলেও এবার পুরো জেলায় টক অফ দ্যা টাউন এ পরিনত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, বহিষ্কার হওয়ার পর থেকেই জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদেকুর রহমান সাদেকের সঙ্গে আঁতাত করে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন আশরাফ ভূঁইয়া। এছাড়াও বহিষ্কৃত এ নেতা আশরাফ ভূঁইয়ার সাথে সোনারগাঁ থানায় চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারী রাতে একটি সালিশি বৈঠকে ওসির কক্ষে সাদেকুর রহমান সাদেককে দেখা গিয়েছে।
সম্প্রতি নারায়গঞ্জের সোনারগাঁয়ের ২১মে একটি অভিজাত রেষ্টুরেন্টে তারুণ্যের সমাবেশের প্রস্তুতি সভায় সাদেকুর রহমান সাদেকের বলয়ে কিছু সংখ্যক লোক নিয়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল কবির পল ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল হক জিয়ার সামনে আশরাফ ভূইয়া বসলে হৈ চৈ শুরু হয়।
পরে আশরাফ ভূইয়ার সাংগঠনিক ভাবে বহিষ্কার হওয়া সত্বেও অনুষ্ঠানে আসায় তাকে শাসিয়ে সভা কক্ষ থেকে বের করে দেন রেজাউল কবির পল। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ নিয়েও নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যুবদলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বহিষ্কৃত নেতা আশরাফ ভূইয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ককে ব্যবহার করে জামপুর ইউনিয়নে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। কিছুতেই তার লাগাম টানা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলা যুবদল নেতা জানান, আশরাফ ভূইয়াকে চাঁদাবাজি ও তার উশৃংখলার সত্যতা পেয়েই কেন্দ্র থেকে সরাসরি বহিষ্কার করা হয়। একই সাথে তার সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখতে যুবদলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা আহবায়কের এমন কর্মকান্ড সাংগঠনিক বহির্ভূত।
সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক শহিদুর রহমান স্বপন বলেন, আমরা জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতি করি। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আশরাফ ভূঁইয়াকে বহিস্কারের পাশাপাশি তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে রাজনীতি করি। কেউ তার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রেখে তাকে সঙ্গে নিয়ে সভা, সমাবেশ করলে দায় ভার তার নিজের নিতে হবে।
নারায়ণগঞ্জে জেলা যুবদলের আহবায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক বলেন, সোনারগাঁয়ের ২১ মে একটি অভিজাত রেষ্টুরেন্টে তারুণ্যের সমাবেশের প্রস্তুতি সভা শেষে কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল কবির পল তাকে ঢাকায় সমাবেশে নেতাকর্মী নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছেন।
তবে দলের প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যুবার্ষিকী আশরাফ ব্যক্তিগতভাবে পালন করেছেন। দলীয় পদ ব্যবহার না করে অনুষ্ঠান করেছেন। সেই অনুষ্ঠানে আমাকে অতিথি করেছেন, আমি গিয়েছে। বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসেনি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও য বদল ন র য়ণগঞ জ ক ন দ র য় য বদল র স ন ত কর ম দ র ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ ন গঠন ক স স ন রগ র জ উল
এছাড়াও পড়ুন:
যাদের টাকা নিয়েছেন, তাদের ফেরত দেন : মাকসুদ চেয়ারম্যানকে সাখাওয়াত
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, গত ১৫টি বছর বন্দরের মানুষ ভালো ছিল না কারণ এখানে অপশাসন চলেছিল।
এই বন্দরে চলত ওই সেলিম ওসমানের শাসন তিনি এই বন্দরকে তার পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করেছিলেন। আর তার কিছু সর্দার মানে লাঠিয়াল ছিল তাদেরকে ব্যবহার করে তিনি জনগণের সম্পদ লুট করেছিলেন।
আর বন্দর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা সেলিম ওসমানের লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। মুসাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন কিন্তু সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের অন্যতম দোসর ছিলেন। মুসাপুরে এমন কোন অপকর্ম নাই যা তিনি করেন নাই।
জুলাই বিপ্লবের আন্দোলন যারা করেছে তারা কিন্তু কোন কিছুই করে নাই। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি ৫ই আগস্টের পরই ওই স্বৈরাচারের দোসর মাকসুদ হোসেন ও তার ছেলের নেতৃত্বে জনগণের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে ২৫ থেকে ৩০টি বাড়িতে আগুন দিয়েছে এবং লুটপাট করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
আর যাদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে তারা আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির অন্তর্গত বন্দর উপজেলা বিএনপির আওতাধীন মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম কার্যক্রম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেল চারটায় মুছাপুর ইউনিয়নের হরিবাড়ি এলাকায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, মাকসুদ চেয়ারম্যান এখন আবার নির্বাচন করতে চায় এমপি হওয়ার সাধ জাগছে। শেখ হাসিনা ও সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের দোসর তাকে বাংলার মাটি তথা বন্দরের মাটিতে কোন স্থান নাই। তাদের স্থান হবে ওই জেলখানায়।
স্বৈরাচারের দোসরা যারা চোখ রাঙ্গানি দিচ্ছে তাদেরকে আর ছাড় নাই তাদের স্থান হবে ওই জেলখানায়। মাকসুদের বিরুদ্ধে কিন্তু অনেক বৈষম্য বিরোধী মামলা রয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম শান্ত থাকেন।
আপনার যে সাধ জেগেছে সেটা এই বন্দরের মানুষ আপনাকে করতে দিবে না। শুধু তাই না আমরা জানতে পেরেছি এই মাকসুদ এই বন্দর মানুষকে গ্যাসের কথা বলে বেড়িয়েছে এবং অনেক কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়েছেন।
অনেকেই আমাদের কাছে এই বিষয়ে বলেছে আমরা বলতে চাই যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তাদের টাকা ফেরত দেন। অন্যথায় আমরা আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য থাকব।
ইনশাল্লাহ আমাদের সরকার বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে আমরা এই বন্দরের বঞ্চিত জনগণকে গ্যাসের ব্যবস্থা করে দিবো। আর এই গ্যাসের জন্য কোন জনপ্রতিনিধিকে আপনারা কোন টাকা পয়সা দিতে হবে না।
মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়ার সভাপতিত্বে এবংনারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড. জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক এড. সরকার হুমায়ূন কবির, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফারুক হোসেন, সদস্য হুমায়ূন কবির।
এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুদুর, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আঃ রহিম, বিএনপি নেতা অনিক আহম্মেদ, মোশারফ হোসেন, খোরশেদ আলম, মাকসুদ হোসেন, নুর আলম, বিল্লাল হোসেন, পানা উল্লাহ, নিজাম হোসেন, বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোহেল প্রধানস, বন্দর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আল আমিনসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবন্দ।