৫ খুনের মামলায় ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্নাকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ
Published: 3rd, June 2025 GMT
জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়াসহ পাঁচটি হত্যা মামলায় আলোচিত সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা এর আদালত শুনানি শেষে এ পৃথক পৃথক আদেশ দেন। পুলিশ পাঁচটি খুনের মামলায় তামান্নাকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেছিল।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের চান্দগাও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, পাঁচটি খুনের মামলায় শারমিন আক্তার তামান্নাকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে দাখিল করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ১৮ জুলাই, ৩ আগস্ট ও ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সন্ত্রাসীরা চবি ছাত্র হৃদয় চন্দ্র তরুয়া, ফজলে রাব্বী, সায়মান মাহিন, তানভীর সিদ্দিকী ও শহিদুল ইসলাম শহীদকে গুলি করে ও এলোপাতাড়ি মারধর করে খুন করেন। এ ঘটনায় আসামি শারমিন আক্তার তামান্নার সম্পৃক্ততা তদন্তে পাওয়া যাচ্ছে। তাই তাকে এসব খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন। আদালত পুলিশের পৃথক পৃথক আবেদনের উপর শুনানি শেষে আসামি তামান্নাকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন।
গত ১১ মে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বারৈইপাড়া থেকে তামান্নাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে নগরের বাকলিয়া থানা পুলিশের জোড়া খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর চেষ্টা করলে তামান্না হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়ার নথি পুলিশের কাছে জমা দেন। পরে তাকে বাকলিয়া থানা থেকে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় স্থানান্তর করা হয়। পরে তাকে ১২ মে ৩০ দিনের ডিটেনশন দিয়ে থানা থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এখন তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে গত ১৫ মার্চ ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পরদিন তার স্ত্রী তামান্নার প্রতিক্রিয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই ভিডিওতে তিনি ‘কাড়ি কাড়ি’ টাকা খরচ করে কারাবন্দি সাজ্জাদকে জামিনে বের করে আনার কথা বলেন। পাশাপাশি তার বিরোধী পক্ষকে হুমকি দিয়ে বলেন ‘এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা।’ তামান্না তার ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি শেয়ার করলেও পরে তা সরিয়ে নেন। এরপর ৮ এপ্রিল হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা ছোট সাজ্জাদকে সঙ্গে নিয়ে রাউজান ও বায়েজিদ এলাকায় মাইকিং করে পুলিশ। তাকে রাস্তায় ঘুরিয়ে ‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে’ হুঁশিয়ারি করে পুলিশের এ মাইকিংয়ের ঘটনায় চটেন তার স্ত্রী তামান্না। এ ঘটনার পরদিন নিজের ফেসবুক পেজ থেকে একটি ভিডিও বার্তায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তামান্নার অভিযোগ, তার স্বামী সাজ্জাদকে রশি বেঁধে রাস্তায় ঘোরানো ‘অপমানজনক’ এবং তাতে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে’।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫