নওগাঁর পত্নীতলায় বাস-মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ জনে। দাঁড়িয়ে থাকা বাসে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লেগে তাদের মৃত্যু হয়। তারা তিনজন বন্ধু ছিলেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহাদেবপুর ও পত্নীতলা উপজেলার মাঝামাঝি পার্বতীপুর মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, আশরাফ (১৭) ও হৃদয় হোসেন (১৭) ও সাদমান সাকিব (১৭)।

নিহত আশরাফ মহাদেবপুর উপজেলার মাস্টারপাড়া এলাকার বেথুল আশরাফের ছেলে ও স্থানীয় পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র, একই এলাকার আখতারুজ্জামানের ছেলে ও এবারের এসএসসির ফল প্রার্থী হৃদয় হোসেন। আর সাদমান সাকিব একই এলাকার শাহাজান আলীর ছেলে ও মহাদেবপুর কলেজের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, নিহত শিক্ষার্থীরা তিন বন্ধু। তারা বাড়ি থেকে নজিপুর বাজারে বেড়াতে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে মহাদেবপুর ও পত্নীতলা থানার মাঝামাঝি পার্বতীপুর মোড়ে আসে। সে সময় ওই স্থানে রাস্তার ধারে একটি বাস দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের মোটরসাইকেলের গতি অনেক বেশি থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার উপর দাঁড়ানো ওই বাসের পেছনে ধাক্কা লাগে। ধাক্কা খেয়ে মোটরসাইকেলটি বাসের বাঙ্কার ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়।

সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিহত আশরাফসহ অন্যদের উদ্ধার করে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশরাফকে মৃত ঘোষণা করেন এবং অপর দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পথেই হৃদয় হোসেনের মৃত্যু হয়। আর আজ বুধবার সকালে সাদমানেরও মৃত্যু হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো.

এনায়েতুল বলেন, আশরাফ ঘটনাস্থলেই মারা যান। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ না থাকায় এবং তাদের অনুরোধে মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে এবং আহত হৃদয় হোসেনকে রাজশাহী নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। বুধবার সকালে সাদমানের মৃত্যু হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত আশর ফ

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের আগের দিন আরেকটি ঈদ হয়ে যেত

ছোটবেলার কুরবানির ঈদ খুব আনন্দের ছিলো। আমার বেড় ওঠা ঢাকায়। ইকবাল রোডে আমার বাবার বাড়ি। সাড়ে বারো কাঠা জায়গা নিয়ে ছিল আমাদের বাড়িটা। ঘরের সামনে বিরাট উঠান ছিলো। কুরবানির জন্য কেনা গরু ওই উঠানে রাখা হতো। শুধু আমাদের গরু না, মামা, খালাদের কেনা গরুও ওই একই উঠানে রাখা হতো। 

ঈদের আগের দিন বাবা, মামারা সবাই একসঙ্গে গরু কিনতে যেতেন। মামারা গরু কিনতে যাওয়ার আগে আমাদের বাড়িতে আসতেন। মা অনেক রকম খাবার রান্না করতেন। যেমন— খিচুরি, মুরগির মাংস, ডিম ভাজি। সবাই একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করে গাবতলী হাটে গরু কিনতে যেতেন। বড়দের সঙ্গে আমিও যেতাম।  বিকালের আগে গরু কিনে বাসায় ফিরে আসতাম। রাতে আবার সবাই একসঙ্গে খেতো। এবং পরের দিনের গরু কুরবানির প্ল্যানিং হতো। অবশ্য বিকালের পরে নারীরা অর্থাৎ নানী, খালারা সবাই আসতেন গরু দেখতে। বাড়িটা উৎসবমুখর হয়ে উঠতো। সবমিলিয়ে আমাদের বাড়িতে ঈদের আগের দিন আরেকটি ঈদ হয়ে যেত।

সেই সময় সবাই একসঙ্গে ঈদ করা হতো। বাড়ির উঠানেই গরু কুরবানি করা হতো। মাংস ভাগ করে বিলানো হতো। এরপর মামা, খালারা তাদের ভাগের মাংস নিয়ে বিকালে নিজেদের বাড়িতে চলে যেতেন। এই যে ঈদের আগের দিন গরু কেনা থেকে কুরবানি  এই সময়টুকুতে আত্মীয় স্বজনেরা সবাই মিলে একটি পরিবার হয়ে উঠতো। 

আরো পড়ুন:

চলতি মাসে মুক্তি পাবে আলোচিত পাঁচ সিনেমা

বিয়ে করলেন হিনা খান, ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইটাও চলছে

সবার আলাদা বাসা এবং আলাদা ফ্ল্যাট বাড়ি হওয়ার পর থেকে আর এই সুযোগটুকু রইলো না। সময়ের পরিবর্তনে মানুষজন অনেকে হারিয়ে গেলো, অনেকে বিদেশে চলে গেলো। এভাবে করে ভাঙতে ভাঙতে এখন যার যার ঈদ তার তার।

এখন হয়তো আগের চেয়ে অনেক বড় গরু কুরবানি দেওয়া হয় কিন্তু আগের ঈদের আনন্দটা  এখন আর খুঁজে পাই না। 

অনুলিখন: স্বরলিপি

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ