জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটা হয়তো মাঠে নয়, সংসারে। আর সেই সংসারে যদি দুজনই হন ক্রিকেটার, তাহলে কেমন হয়? এমনই কিছু ক্রিকেটার দম্পতি আছেন, যাঁদের দৈনন্দিন জীবনের বড় অংশজুড়েই আছে ব্যাট, বল আর সেঞ্চুরি, উইকেটের গল্প। স্রেফ খেলার জন্য খেলা নয়, পেশাদার ক্রিকেটার তাঁরা। এই লেখায় থাকছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা তেমনই ৫টি জুটির গল্প।১.

মিচেল স্টার্ক-অ্যালিসা হিলি (অস্ট্রেলিয়া)

সত্যিকার অর্থেই আপাদমস্তক ক্রিকেটের জুটি। দুজনই পুরোদমে অস্ট্রেলিয়ার পুরুষ ও নারী দলে খেলে চলেছেন। মিচেল স্টার্ক বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিন সংস্করণে ২৮৮টি ম্যাচ খেলা স্টার্ক এরই মধ্যে ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ—সবই জিতেছেন।

অস্ট্রেলিয়া নারী দলের হয়ে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার কীর্তি আছে অ্যালিসা হিলিরও। অস্ট্রেলিয়া নারী দলের অধিনায়কত্বও করেছেন। হিলি মূলত উইকেটকিপার-ব্যাটার। মজার বিষয় হচ্ছে, এখন বাঁহাতি পেসার হিসেবে পরিচিত হলেও স্টার্কের শুরুটাও কিন্তু উইকেটকিপার হিসেবেও ছিল। দুজনের পরিচয়ও অল্প বয়স থেকেই।

দীর্ঘদিনের পরিচয় ও প্রেমের পর স্টার্ক-হিলি বিয়ে করেন ২০১৬ সালে। একে অপরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে তাঁরা এতটাই জড়িয়ে যে কিছুদিন আগে আইপিএলের সময় স্টার্কের সঙ্গেই ছিলেন হিলি। আবার ২০২০ সালে হিলির টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের খেলা দেখতে অস্ট্রেলিয়া পুরুষ দলের হয়ে একটি ওয়ানডেও মিস করেছিলেন স্টার্ক।

২. রজার প্রাইডো-রুথ প্রাইডো (ইংল্যান্ড)

রজার ও রুথ প্রাইডোর নাম এখনকার অনেকের কাছে অপরিচিত লাগতে পারে। লাগার কারণও আছে। দুজনই ক্রিকেট খেলেছেন এখন থেকে প্রায় ছয় দশক আগে।

১৯৬৮-৬৯ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে দুটি টেস্ট খেলেছেন রজার। তুলনায় রুথের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার লম্বাই। ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৩ সালের মধ্যে ইংল্যান্ড নারী দলের হয়ে খেলেছেন ১১টি টেস্ট। রুথ পরে ইংল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলের প্রধান কোচও ছিলেন।

৩. রিচার্ড হ্যাডলি-কারেন হ্যাডলি

ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা বোলার রিচার্ড হ্যাডলিও যে এক ক্রিকেটারকেই বিয়ে করেছিলেন, এটা হয়তো অনেকেই ভুলে যান। দুটি কারণ আছে।

রিচার্ড হ্যাডলির স্ত্রী কারেন হ্যাডলি আন্তর্জাতিক নারী ক্রিকেটে ম্যাচ খেলেছেন মাত্র একটি। ১৯৭৮ সালে ভারতে নারী বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই এক ম্যাচেই শেষ তাঁর ক্যারিয়ার। দ্বিতীয় কারণ, দুজনের বিয়েটা টেকেনি। বিয়ের পর কারেন হ্যাডলি নাম হলেও বিচ্ছেদের পর কারেন মার্শ নামে ফিরে গেছেন রিচার্ডের প্রাক্তন।

কারেন হ্যাডলি ও রিচার্ড হ্যাডলি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ বক প

এছাড়াও পড়ুন:

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প

ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিকোলাস মাদুরোর দিন ফুরিয়ে এসেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ করতে যাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সিবিএস নিউজের ৬০ মিনিটসকে বলেন, “আমার সন্দেহ রয়েছে। আমার মনে হয় না। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ আচরণ করছে।”

আরো পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

ক্যারিবীয় অঞ্চলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগে নৌযানগুলোতে মার্কিন হামলা অব্যাহত থাকার মধ্যে ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো। ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের প্রবাহ বন্ধ করার জন্য এই হামলা প্রয়োজনীয়।

ট্রাম্প এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান মাদক বন্ধ করার লক্ষ্যে নয়, বরং ট্রাম্প বিরোধী মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি ‘অনেক কিছু’ সম্পর্কে।

বিবিসির মার্কিন নিউজ পার্টনার সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে ক্যারিবীয় ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন হামলায় কমপক্ষে ৬৪ জন নিহত হয়েছে।

সম্প্রতি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হামলায় আপনি যেসব নৌযানে বিস্ফোরণ হতে দেখেন, তার প্রতিটিতে অন্তত ২৫ হাজার মাদকদ্রব্য ধ্বংস হয়। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রে মাদক সরবরাহের জন্য দায়ী।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থলপথে ভেনেজুয়েলায় হামলার পরিকল্পনা করছে কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প তা উড়িয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, “আমি এটা বলতে চাই না যে আমি এটা করব...আমি ভেনেজুয়েলার সাথে কী করব, আমি তা করব কিনা, তা আমি বলব না।”

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরো ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রোর অভিযোগ, নৌযানগুলোতে হামলা চালানোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র লাতিন আমেরিকায় ‘আধিপত্য বিস্তার’ করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প জানান, তার সরকার ‘সারা বিশ্ব থেকে’ সন্ত্রাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ‘আসতে’ দেবে না।

তিনি বলেন, “তারা কঙ্গো থেকে আসে, তারা সারা বিশ্ব থেকে আসে, তারা আসছে, কেবল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে নয়। তবে বিশেষ করে ভেনেজুয়েলা- খারাপ। তাদের গ্যাং আছে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্দিষ্ট করে ভেনেজুয়েলার ‘ট্রেন দে আরাগুয়ার’ নাম উল্লেখ করেন। তিনি এটিকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ গ্যাং’ হিসেবে অভিহিত করেন।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসার পর থেকে, ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো এবং ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি মাদক পাচারকারী সংগঠন ও অপরাধী গোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ভেনেজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া এবং কার্টেল অব দ্য সানস, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও তার ঘনিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা পরিচালনা করে। তবে কারাকাস সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ