সাগরকন্যা খ্যাত সমুদ্র সৈকত পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের আগমন বাড়তে শুরু করেছে। রোববার কুয়াকাটা সৈকতের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখা গেছে, হাজারো পর্যটকের পদচারণায় মুখর সৈকত। ছবি তোলা, বালিয়াড়িতে হৈ-হুল্লোড়, আড্ডা, পরিবার নিয়ে সৈকতে আনন্দ উপভোগে ব্যস্ত পর্যটকরা।

ঈদ পরবর্তী সময়ে সৈকতে পর্যটকদের আগমনে ব্যস্ততা বেড়েছে বয়বসায়ীদের। পর্যটকদের বরণে নানা ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন হোটেল-মোটেল, ঝিনুক, কিটকটসহ ১৬টি পেশার ব্যবসায়ীরা। অনেকটা পরিচ্ছন্ন সৈকত, নিরাপত্তা আর পর্যটক আগলে রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক লাবিব বলেন, কুয়াকাটায় আসছি এই প্রথম। আজকে অনেক লোক দেখে ভালো লাগছে। বেশ আনন্দ উল্লাস করছি। 

খুলনা থেকে আসা সুমন চন্দ্র বলেন, আমি কুয়াকাটা এর আগেও অনেকবার এসেছি। কুয়াকাটায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়। তাই এখানে বারবার আসি।

পর্যটকদের নিরাপত্তায় কঠোর অবস্থানে রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। বিভিন্ন পয়েন্টে পোশাক ও সাদা পোশাকে কয়েকটি টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। সঙ্গে সহযোগিতা করছে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম। এমনটাই জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কুয়াকাটা জোন ইনচার্জ তাপস চন্দ্র রায়। 

কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য মো.

শাহিন আলম বলেন, আমরা পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্টে, ফিস ফ্রাই, ক্যামেরাসহ পর্যটকদের সেবা দেওয়া সকল পেশাজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি সেরেছি। আশা করছি, এই লম্বা বন্ধে ভালো পর্যটকদের সাড়া পাব।

সিকদার রিসোর্ট অ্যান্ড ভিলাসের এজিএম আল-আমিন উজ্জ্বল জানান, আমাদের হোটেলগুলোর প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ বুকিং। তবে বুকিংটা ৯-১০ তারিখে বেশি। অন্য দিনগুলোতে একটু কম। তবে আমরা প্রস্তুতির কমতি রাখিনি। আমাদের দাবি, কুয়াকাটায় পর্যটকরা এসে অনেকেই একদিনে চলে যাচ্ছেন। যদি এখানে আরও কিছু বিনোদনের স্থান বাড়ানো যেত তাহলে পর্যটকরা দুই-তিন দিন কুয়াকাটায় অবস্থান করতেন।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটায় মূলত দুইশ’র বেশি আবাসিক হোটেল রয়েছে, যার মধ্যে প্রথম শ্রেণির হোটেলগুলোতে এরই মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বুকিং হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির হোটেলগুলোতে ৫০ শতাংশ বুকিং হয়েছে। আমাদের টুর অপারেটর ও গাইডরা প্রস্তুতি সেরেছেন যাতে কোন পর্যটক হয়রানির শিকার না হন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ত ত

এছাড়াও পড়ুন:

দর্শণার্থীদের পদভারে মুখর রাঙামাটি

ঈদের টানা ছুটিতে রাঙামাটির বিনোদন কেন্দ্রগুলো এখন দর্শণার্থীদের পদভারে মুখর। ঈদের পরদিন থেকেই প্রকৃতির রূপ দেখতে  হাজারো পর্যটক আসতে শুরু করেছেন পার্বত্য এ জেলায়। এখানকার বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক, আরণ্যতে ভ্রমণপিপাসুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

রবিবার (৮ জুন) সকাল থেকেই রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। দলে দলে পর্যটকদের ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। তাদের অনেকেই এসেছেন পরিবারের সঙ্গে। পর্যটকদের অনেকে কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার করছেন। হ্রদ-পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করে যান্ত্রিক জীবন একঘেয়েমি দূর করছেন তারা।

পলওয়েল পার্কেও ছিল পর্যটকদের সরব পদচারণা। তারা পার্কের ভেতরে থাকা বিভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। শিশুরা টয় ট্রেন ও দোলনাতে চড়ে আনন্দ করে। 

আরো পড়ুন:

কুয়াকাটায় কাঙ্ক্ষিত পর্যটক নেই

পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি

রাজশাহী থেকে ঘুরতে আসা নূর হোসেন বলেন, “ঈদের ছুটি কাজে লাগাতে বন্ধুরা মিলে রাঙামাটি ঘুরতে আসলাম। চমৎকার জায়গা। শান্ত প্রকৃতি, হ্রদের জলও শান্ত ও স্বচ্ছ। এমন সৌন্দর্য বাংলাদেশের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে, তা নিজের চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না।”

ঢাকা থেকে আসা এক নবদম্পতি বলেন, কয়েকদিন আগেই বিয়ে হয়েছে, ঈদের ছুটিতে তাই রাঙামাটি চলে আসলাম। শান্ত প্রকৃতি দেখে ভালো লাগছে। সুবলং ঘুরতে গিয়ে হ্রদের দুই পাশের পাহাড় খুব ভালো লেগেছে।

প্রিয়াংকা দে নামে এক পর্যটক বলেন, “আরণ্যক, পলওয়েল পার্ক এই জায়গাগুলো ঘোরা শেষ, এবার কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণে যাচ্ছি। হ্রদের সৌন্দর্য আমাদের বিমোহিত করবে এমন আশাই করছি।”

পর্যটন নৌযান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, “ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে পর্যটকরা রাঙামাটি আসতে শুরু করেছেন। আশা করছি, পুরো সপ্তাহ ভালো পর্যটক পাব।”

এদিকে, রাঙামাটি শহরের অধিকাংশ হোটেল-মোটেলে বুকিং বেড়েছে। হোটেল হিল পার্কের সত্ত্বাধিকারী স্বপন শীল বলেন, “ঈদের ছুটিতে পর্যটক হবে সেটি আমরা আগেই ধারণা করেছিলাম। ঈদের আগে আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ রুম বুকিং হয়। আগামী কয়েকদিনও ভালো পর্যটক হবে।”

রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, “পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। আমাদের যে টার্গেট ছিল ঈদকে ঘিরে, আশা করছি, তা পূরণ হবে। সোমবার (৯ জুন) থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত আমাদের ৮০ শতাংশ রুম অগ্রিম বুকিং আছে। আশা করছি এই মৌসুমে আমাদের বেশ ভালো ব্যবসা হবে।”

ঢাকা/শংকর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাগরকন্যা কুয়াকাটায় পর্যটকের আনাগোনা কম, হতাশ ব্যবসায়ীরা
  • ঈদের ছুটি কাটাতে কক্সবাজার সৈকতে পর্যটকের ভিড় বাড়ছে
  • ফাটল-ধসে বিপর্যস্ত মাধবকুণ্ড, ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে লাল পতাকা
  • দর্শণার্থীদের পদভারে মুখর রাঙামাটি
  • নিস্তব্ধ পাহাড়ের পাদদেশে মুখরিত টাঙ্গুয়ার হাওর
  • কাঙ্ক্ষিত পর্যটক নেই কুয়াকাটায়
  • পাহাড়, নদী ও লেকের অপার সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর
  • ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটক টানতে ছাড়ের প্রতিযোগিতা 
  • তিন শর্তে খুললো রুমা ও থানচি