রোনালদো গোল করলেন, পর্তুগাল জিতল উয়েফা নেশন্স লিগ
Published: 9th, June 2025 GMT
এমন না যে নিজেকে প্রমাণ করার আরো কিছু আছে তার। তবুও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অঝোরে কাঁদেন। উল্লাসে কাঁদেন। অর্জনে কাঁদেন। সেই সুখের কান্নায় আরেকবার ভিজলো জার্মানির আলিয়াঞ্জ এরিনার সবুজের গালিচা।
যেখানে স্পেনকে হারিয়ে পর্তুগাল জিতে নেয় উয়েফা নেশন্স লিগ কাপ। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ এ অমীমাসিংত থাকে। অতিরিক্ত আরো ৩০ মিনিটেও চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণ করা যায়নি। টাইব্রেকারেই হয় ফয়সালা। যেখানে ৫-৩ গোলে স্পেনকে হারিয়ে পর্তুগাল নিশ্চিত করে শিরোপা। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার পর্তুগাল জিতল উয়েফা নেশন্স লিগ। ২০১৯ সালে পেয়েছিল প্রথমবার।
চল্লিশ পেরোনো রোনালদো এই ম্যাচেও গোল করেছেন। হয়তো ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোল। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা চলছিল। স্পেন ২-১ এ এগিয়ে। গোল শোধে মরিয়া পর্তুগাল একের পর এক আক্রমণে যাচ্ছে কিন্তু ফিনিশিংয়ের ঘাটতির কারণে গোল পাওয়া হচ্ছিল না।
৬৫ মিনিটে রোনালদো দলকে সমতায় ফেরান। মেনডেসের ক্রস থেকে ডি বক্সের ভেতরে বল পান রোনালদো। স্পেনের রক্ষণের খেলোয়াড়ের বাধায় বল ঠিকঠাক জায়গা মতো পাননি রোনালদো। কিন্তু তার নিখুঁত শট খুঁজে নেয় স্পেনের জাল। স্কোরলাইন ২-২। এরপর নির্ধারিত সময়ের খেলা অমীমাংসিত থাকে। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও গোলের দেখা পায়নি কেউ।
ফাইনাল ম্যাচ টাইব্রেকারে গিয়ে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়। পর্তুগাল সবগুলো শটে গোলের দেখা যায়। স্পেনের প্রথম তিনটি শটও ছিল গোল। চতুর্থ শট নিয়েছিলেন অধিনায়ক মোরাতা। কিন্তু গোলরক্ষক কস্তা ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বল আটকে দেন। পরের শটে নেভেস গোল করে পর্তুগালকে জেতান শিরোপা।
ম্যাচের ৮৮ মিনিটে চোট পেয়ে উঠে যান রোনালদো। পেনাল্টির পুরোটা সময় তার চোখে মুখে ছিল চিন্তার ভাঁজ। স্পেন গোল করলেই মুখটা বিষন্ন হয়ে আসে। নিজের দলের খেলোয়াড়রা গোল করলে তার মুখে হাসি ফোটায়। মিশ্র এই অনুভূতির মাঝেই কস্তা মোরাতার শট আটকে দিলে চোখের কোণে জল চলে আসে রোনালদোর।
এরপর নেভেসের শট লক্ষ্যভেদ হলে নিজেকে আর আটকে রাখতে পারেননি সিআরসেভেন। মাটিতে বসে কান্নায় সবুজ গালিচা ভিজিয়ে দেন। উঠে দাঁড়িয়েও আনন্দাশ্রু ঝরতে থাকে। মাঠের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যখন শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন তখন আনন্দের জোয়ারে ভেসে যায় সব। ব্যক্তিগত অর্জনে টইটুম্বুর রোনালদো দেশের জার্সিতে ২০১৬ ইউরো, ২০১৯ নেশন্স লিগ জিতেছিলেন। ছয় বছর পর আবার জিতলেন নেশন্স লিগ।
কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল…তিন নক আউট ম্যাচেই রোনালদো গোল করেছেন। ২২০তম ম্যাচে এটি রোনালদোর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১৩৮তম গোল। যা তার পেশাদার ক্যারিয়ারের ৯৩৮তম গোল।
ফাইনাল ম্যাচে স্পেন দুইবার এগিয়ে যায়। প্রথমে ২২ মিনিটে। জুবিমেন্ডি অতি সহজেই গোল পেয়ে দলকে এগিয়ে নেন। লিড অবশ্য বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি স্পেন। বক্সের বাইরে থেকে নেটোর বাড়ানোর পাস নিয়ে এগিয়ে নেন মেনডেস। ক্ষীপ্রতায় এগিয়ে যান ভেতরে। এরপর বামপায়ের জোরালো শটে বল পাঠান জালে। ১-১ এ খেলা সমতা।
কিন্তু বিরতিতে যাওয়ার আগে আবার গোল হজম করে পর্তুগাল। পেড্রির বাড়ানো বল ইয়ারজাবাল শট নিয়ে স্পেনকে এগিয়ে দেন। কিন্তু ওই এগিয়ে যাওয়াতে তেমন লাভ হয়নি। রোনালদোর গোলে পর্তুগাল ম্যাচে সমতা ফেরায়। এরপর টাইব্রেকারে পর্তুগাল উড়ায় বিজয়ের পতাকা। পাঁচবারের ব্যালন ডি অরের সাফল্যের মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হলো। দেখার বিষয়, চল্লিশ পেরিয়ে যাওয়া রোনালদো কোথায় গিয়ে থামেন।
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ত গ ল ফ ইন ল গ ল কর
এছাড়াও পড়ুন:
মোদিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর কথা মনে করিয়ে দিলেন ওমর আবদুল্লাহ্
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে প্রকাশ্য জনসভায় কায়দা করে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাওয়ার বাসনার কথা প্রকাশ করলেন। শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীরের কাটরায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় তিনি বলেন, মঞ্চে উপস্থিত সবার উন্নতি হলেও একমাত্র তাঁর অবনতি হয়েছে। ছিলেন পূর্ণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের।
ওমর অবশ্য বলেন, তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, খুব বেশি অপেক্ষায় থাকতে হবে না। প্রধানমন্ত্রী জম্মু-কাশ্মীরকে নিশ্চিতই আবার পূর্ণ রাজ্য করে দেবেন।
পেহেলগাম–কাণ্ড ও অপারেশন সিঁদুরের পর আজ শুক্রবার প্রথম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জম্মু-কাশ্মীর সফরে যান। দুপুর ১২টায় কাশ্মীরে চন্দ্রভাগা নদীর ওপর বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধন করেন, যার উচ্চতা প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের চেয়েও বেশি। এরপর তিনি যান জম্মুর কাটরায়। উদ্বোধন করেন দুটি ‘বন্দে ভারত’ ট্রেন। তারপর কাটরায় এক প্রকাশ্য জনসভায় ভাষণ দেন। সেই জনসভাতেই নিজের ভাষণের সময় ওমর আবদুল্লাহ কায়দা করে মোদিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত পাওয়ার কথাটি মনে করিয়ে দেন।
মঞ্চে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী মোদি, উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংয়ের উপস্থিতিতে ওমর বলেন, তাঁর সৌভাগ্য এমন যে যখনই জম্মু-কাশ্মীরে রেলওয়ের কোনো বড় প্রকল্পের শিলান্যাস বা উদ্বোধন হয়েছে, তিনি তার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। অনন্তনাগ রেলস্টেশন চালু হওয়া, বানিহাল রেল টানেলের (সুড়ঙ্গ) উদ্বোধন কিংবা ২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে যখন প্রধানমন্ত্রী কাটরা রেলস্টেশনের উদ্বোধন করেন, প্রতিবারই তিনি হাজির ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। ওমর এরপর প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি যখন কাটরা রেলস্টেশন উদ্বোধন করেন, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন জিতেন্দ্র সিং। এখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের মন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন আজকের উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা। তখন তিনি ছিলেন রেল মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। বৈষ্ণব দেবীর কৃপায় তার পর আপনি আরও দুবার ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। মনোজ সিনহারও পদোন্নতি ঘটেছে। হয়েছেন উপরাজ্যপাল। কিন্তু আমার ডিমোশন হয়েছে। তখন আমি ছিলাম পূর্ণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আমার স্থির বিশ্বাস, অচিরেই রাজ্য তার হৃত মর্যাদা ফিরে পাবে।’
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে তৈরি করা হয় দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। কেন্দ্রীয় সরকার যদিও শুরু থেকেই জানিয়েছে, এটা সাময়িক। পরিস্থিতির উন্নতি হলে দ্রুত রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তা কবে হবে কেউ জানে না। যেমন কারও জানা নেই পরিস্থিতির উন্নতির সংজ্ঞা কী।