আহমেদাবাদে দুর্ঘটনাস্থলে নরেন্দ্র মোদী, আহতদের দেখতে গেলেন হাসপাতালে
Published: 13th, June 2025 GMT
গুজরাটের আহমেদাবাদে লন্ডনগামী উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার সকালে আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি। সিভিল হাসপাতালে ভর্তি আহতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। খবর-বিবিসি
নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার সকালে আহমেদাবাদ পৌঁছে বিমানবন্দর থেকে ঘটনাস্থলে যান। পরিস্থিতির বিষয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এরপর তিনি আহমেদাবাদ সিভিল হাসপাতালে যান এবং দুর্ঘটনায় আহতদের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি।
দুর্ঘটনার কবলে পড়া ওই এয়ার ইন্ডিয়ার যাত্রীদের মধ্যে একমাত্র জীবিত ব্যক্তি বিশোয়াস কুমার রমেশের সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। পাশাপাশি লোকালয়ে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার কারণে যারা জখম হয়েছেন, তাদের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ছিলেন, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল, কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী রামমোহন নাইডু কিঞ্জারাপু, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মুরলীধর মোহোল এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভি। এর আগে, ঘটনার পর বৃহস্পতিবারই আহমেদাবাদে পৌঁছেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে জরুরি সেবা চলছে, অন্যদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে জরুরি সেবা চলছে। তাই হাসপাতালে আসা সব রোগীকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে হাসপাতালে আসা অনেক রোগীকে চিকিৎসা ছাড়াই ফেরত যেতে হচ্ছে। ফলে তাঁরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। আজ বুধবার সকাল দশটা থেকে হাসপাতালে অবস্থান করে এই চিত্র দেখা গেছে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পরিসরে বহির্বিভাগ চালুর বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম।
দুই সপ্তাহ ধরে দেশের সবচেয়ে বড় এই বিশেষায়িত চক্ষু হাসপাতালে অচলাবস্থা চলছে। গত ২৮ মে জুলাই আহতদের সঙ্গে সাধারণ রোগী ও হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংঘর্ষ-মারামারির পর হাসপাতালে সব ধরনের সেবা বন্ধ হয়ে যায়। গত বুধবার থেকে হাসপাতালটির জরুরি বিভাগে সীমিত পরিসরে চিকিৎসাসেবা (জরুরি সেবা) চালু হয়। কিন্তু এখনো অচলাবস্থা পুরোপুরি কাটেনি।
আজ জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার এই বিভাগ থেকে ৮৬ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ৯ রোগীর অস্ত্রোপচার করা হয়। এখন জরুরি বিভাগের অধীন ২৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগ বন্ধ থাকায় জরুরি বিভাগের অধীন চিকিৎসাধীন রোগীদেরও বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। প্রতিদিনই কিছু রোগী ভর্তি ও কিছু রোগীকে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।
সকালে হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের অধীন ভর্তি থাকা ২৯ রোগীর মধ্যে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ রয়েছেন।
জরুরি সেবার প্রয়োজনীয়তা না থাকা রোগীদের হাসপাতাল থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে জানান জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সরা।
মাদারীপুর থেকে আসা মো. ইয়াকুব আলী বলেন, সংঘর্ষের জেরে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হওয়ার ঘটনা তিনি জানেন। সম্প্রতি সীমিত পরিসরে চিকিৎসাসেবা চালুর খবর পেয়ে চিকিৎসার আশায় তিনি হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু জরুরি বিভাগ থেকে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি।
ইয়াকুব আলী বলেন, ‘চোখের যন্ত্রণা আর সহ্য হয় না। এত দূর থেকে এসেছি। এখন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। আগামীকাল কিছু চিকিৎসা চালুর কথা শুনেছি। কোথাও গিয়ে আজকে থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। চিকিৎসা ছাড়া ফেরত গেলে আবার আসতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার মতো সক্ষমতা আমার নেই।’
জরুরি বিভাগ ছাড়া হাসপাতালে কিছু সাধারণ রোগী এখনো ভর্তি আছেন। তাঁদের সংখ্যা অন্তত পাঁচজন। গত ২৮ মের পর তাঁরা চিকিৎসার আশায় হাসপাতালে থেকে গেছেন।
ঈদের ছুটির আগে হাসপাতালে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ৫৪ জন ভর্তি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ছাড়া বাকি সবাই ঈদের আগে বাড়ি চলে গেছেন। তবে গতকাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথম আলোকে জানিয়েছে, তাঁদের কেউ হাসপাতালের ছাড়পত্র নিয়ে যাননি।
সরকারের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের ছাড়পত্র দিতে বলেছে। ঈদের ছুটি শেষে তাঁরা আবার হাসপাতালে ফিরে এলে পরিস্থিতি কী হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ঠিক কতজন এখন হাসপাতালে অবস্থান করছেন, তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি চিকিৎসক ও নার্সরা। যাঁরা এখন আছেন, তাঁরা হাসপাতালের বিশেষায়িত কেয়ার ইউনিটে অবস্থান করছেন। আজ সকালে গিয়ে প্রবেশ করা যায়নি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সকালে জুলাই আহতদের একজন এসে পাঁচজনের খাবার নিয়ে গেছেন।
হাসপাতালের চতুর্থ তলার বিশেষায়িত এই ইউনিটের ফটকে সকালে গিয়ে দেখা যায়, ভেতর থেকে তালা লাগানো।
সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে কয়েকজন নার্স ইউনিটে গিয়ে জুলাই আহতদের খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে ভেতর থেকে কারও সাড়া না পেয়ে তাঁরা ফিরে যান।
এই নার্সদের কেউ গণমাধ্যমে তাঁদের নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি। তাঁরা বলেন, গত কয়েক দিন বিশেষায়িত ইউনিটের ভেতরে জুলাই আহতরা তালা লাগিয়ে অবস্থান করছেন। শুধু খাবারের সময় হলে তাঁদের একজন এসে খাবার নিয়ে যান। আজ সকালে পাঁচজনের খাবার সংগ্রহ করেছেন একজন।
হাসপাতালে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। আনসার সদস্য মোক্তারুল ইসলাম বলেন, যাঁদের জরুরি সেবা প্রয়োজন, শুধু তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফলে অনেক রোগী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জুলাই আহতদের বেশির ভাগ বাড়ি চলে গেছেন। তবে তাঁদের কয়েকজন এখনো হাসপাতালে অবস্থান করছেন। তাঁরা বিশেষায়িত ইউনিট থেকে বের হন না।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জানে আলম প্রথম আলোকে বলেন, এ মুহূর্তে জরুরি সেবা চালু আছে। সেখান থেকে যতটুকু সম্ভব চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুরোপুরি সেবা চালু না থাকায় অনেক রোগীকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পুরোদমে চালুর বিষয়ে জানতে চাইলে জানে আলম বলেন, ‘আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পরিসরে আমরা বহির্বিভাগ চালু করব। সব ঠিক থাকলে আগামী শনিবার থেকে হাসপাতালের সব সেবা পুরোদমে চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।’
আরও পড়ুনচক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি জুলাই আহতদের ছাড়পত্র দিতে বলেছে কমিটি২ ঘণ্টা আগে