ঈদ পুনর্মিলনীর নামে বিএনপির আয়োজনে আ.লীগের মিলনমেলার অভিযোগ
Published: 13th, June 2025 GMT
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় বিএনপির নেতাদের আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনীর নামে আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) নেতাকর্মীদের মিলনমেলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আলমগীর হোসেন ও রঘুনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রব আকুঞ্জীর আহ্বানে থুকড়া বাজারে করা হয় এ আয়োজন। অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন মধ্যাহ্নভোজে। ঈদ পুনর্মিলনীর নামে এভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের চেষ্টায় উপজেলাজুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বুধবার (১১ জুন) দুপুর ২টায় ডুমুরিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের থুকড়া বাজার জনতা সমিতি ভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুদ্যুতি কুমার মন্ডলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রংপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদিত্য কুমার মন্ডল, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এস এম গাউসুল হক, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বি এম কামাল হোসেন, ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বি এম বিদ্যুৎ আলম, ডুমুরিয়া উপজেলা যুবলীগের নেতা ও রঘুনাথপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জি এম শামীমুর রহমান, ডুমুরিয়া উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিভা বিশ্বাস, নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সঞ্জিত কুমার মন্ডল, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা তপন বিশ্বাস, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা সুকৃতি বিশ্বাস, যুবলীগ নেতা বিপন্ন মন্ডল, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের এজেন্ট খ্যাত শচীন্দ্রনাথ বৈরাগী ও রুইদাস মন্ডল, কাছারি বাড়ি আর আর জি টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেশ্বর বৈরাগী।
ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বীরেশ্বর বৈরাগীর বিরুদ্ধে গত ১৭ বছরে ২২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের নামে প্রায় ২ কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করা ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আলমগীর হোসেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে মিলনমেলা করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, এটা কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম নয়। অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমান শিক্ষক এবং এলাকার সুধীজনদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এখানে যারা ছিলেন, তারা আগে আওয়ামী লীগ করতেন, এখন করেন না।
সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করা ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুদ্যুতি কুমার মন্ডলের সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কাছারি বাড়ি আর আর জি টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেশ্বর বৈরাগী বলেন, ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের কথা বলে আমাকে ওই প্রোগ্রামে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক। এখানে বিএনপির তিনটি গ্রুপ, তারাই এগুলো ছড়াচ্ছে। আগে ইউএনওসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা এ বিষয়টি তদন্ত করেছে। কিন্তু, কোনো প্রমাণ পায়নি।
এ বিষয়ে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু জানিয়েছেন, এ অনুষ্ঠানের বিষয়ে তিনি অবগত নন। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
বিএনপির কোনো নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর পুনর্বাসনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মনিরুজ্জামান মন্টু।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল গ র ন ত কর ম অন ষ ঠ ন র ব এনপ র স আওয় ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত পাঁচ বিএনপিকর্মী
নোয়াখালীর হাতিয়ায় হামলায় আহত হয়েছেন বিএনপির পাঁচ কর্মী। তাদের মধ্যে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তমরদ্দি বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ জন্য একই দলের অন্য নেতার অনুসারীদের দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা।
আহত ব্যক্তিরা হলেন– সোহেল উদ্দিন (৩০), রুবেল (২৫), মো. রনি (২৬), এরশাদ (৩৫) ও পায়েল (২৫)। তাদের বাড়ি তমরদ্দি ইউনিয়নের আঠারোবেকী গ্রামে। আহত সবাই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের কর্মী-সমর্থক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তমরদ্দি বাজারের একটি চা দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। এ সময় কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাঁচজন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিহাব উদ্দিনের ভাষ্য, সবার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। কিছু আঘাত অনেক গভীর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনেকের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ জন্য চারজনকে রাতেই হাতিয়ার বাইরে চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের ভাষ্য, মঙ্গলবার ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে আসার পথে হামলায় তাঁর কয়েকজন কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় দুটি মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। ওই আসামিরাই বৃহস্পতিবারের হামলায় জড়িত। তারা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোক।
তবে আলমগীর কবিরের দাবি, হামলায় তাঁর কোনো নেতাকর্মী জড়িত ছিলেন না। এমন অভিযোগ সত্য নয়।
হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, বিএনপি নেতা তানভীর হায়দার ও আলমগীর কবিরের লোকজনের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাদের বিরোধ অনেক পুরোনো। আগের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।