খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় বিএনপির নেতাদের আয়োজনে ঈদ পুনর্মিলনীর নামে আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) নেতাকর্মীদের মিলনমেলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আলমগীর হোসেন ও রঘুনাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রব আকুঞ্জীর আহ্বানে থুকড়া বাজারে করা হয় এ আয়োজন। অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন মধ্যাহ্নভোজে। ঈদ পুনর্মিলনীর নামে এভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের চেষ্টায় উপজেলাজুড়ে তীব্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে।  

বুধবার (১১ জুন) দুপুর ২টায় ডুমুরিয়া উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের থুকড়া বাজার জনতা সমিতি ভবনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুদ্যুতি কুমার মন্ডলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রংপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আদিত্য কুমার মন্ডল, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এস এম গাউসুল হক, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বি এম কামাল হোসেন, ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বি এম বিদ্যুৎ আলম, ডুমুরিয়া উপজেলা যুবলীগের নেতা ও রঘুনাথপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জি এম শামীমুর রহমান, ডুমুরিয়া উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিভা বিশ্বাস, নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা সঞ্জিত কুমার মন্ডল, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা তপন বিশ্বাস, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা সুকৃতি বিশ্বাস, যুবলীগ নেতা বিপন্ন মন্ডল, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের এজেন্ট খ্যাত শচীন্দ্রনাথ বৈরাগী ও রুইদাস মন্ডল, কাছারি বাড়ি আর আর জি টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেশ্বর বৈরাগী। 

ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বীরেশ্বর বৈরাগীর বিরুদ্ধে গত ১৭ বছরে ২২ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের নামে প্রায় ২ কোটি টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করা ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আলমগীর হোসেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে মিলনমেলা করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, এটা কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম নয়। অবসরপ্রাপ্ত ও বর্তমান শিক্ষক এবং এলাকার সুধীজনদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এখানে যারা ছিলেন, তারা আগে আওয়ামী লীগ করতেন, এখন করেন না। 

সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করা ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনুদ্যুতি কুমার মন্ডলের সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

কাছারি বাড়ি আর আর জি টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বীরেশ্বর বৈরাগী বলেন, ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের কথা বলে আমাকে ওই প্রোগ্রামে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলক। এখানে বিএনপির তিনটি গ্রুপ, তারাই এগুলো ছড়াচ্ছে। আগে ইউএনওসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা এ বিষয়টি তদন্ত করেছে। কিন্তু, কোনো প্রমাণ পায়নি।

এ বিষয়ে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু জানিয়েছেন, এ অনুষ্ঠানের বিষয়ে তিনি অবগত নন। এ বিষয়ে ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। 

বিএনপির কোনো নেতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর পুনর্বাসনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মনিরুজ্জামান মন্টু।  

ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল গ র ন ত কর ম অন ষ ঠ ন র ব এনপ র স আওয় ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের রাউজানে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে যুবদল কর্মী আলমগীর আলমকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক যুবককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার যুবক আলমগীর আলমের সহযোগী ছিলেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার যুবকের নাম মুহাম্মদ রাজু (২৮)। তিনি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার মৃত নুর নবীর ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, আলমগীর আলমকে গুলি করার সময় তাঁর পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন মুহাম্মদ রাজু।

গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে রাউজান পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চারাবটতল বাজারসংলগ্ন কায়কোবাদ জামে মসজিদের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আলমকে। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও সন্তান পেছনে একটি অটোরিকশায় ছিলেন। পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। আলমের বাড়ি পার্শ্ববর্তী ঢালারমুখ এলাকায়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা আলম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অস্ত্রধারীরা তাঁকে হত্যার পর রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে গেছেন। নিহত আলমের শরীরে পাঁচটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।

রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, আলম নিহত হওয়ার দুই দিন পর তাঁর বাবা আবদুস সাত্তার বাদী হয়ে ২১ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করে রাউজান থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে রাজুর নাম নেই। তবে ঘটনার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে এ মামলায় এজাহারভুক্ত দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁরা হলেন রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ রাসেল খান (৩২) ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রহমতপাড়ার বাসিন্দা ও যুবদল কর্মী মুহাম্মদ হৃদয় (৩০)।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, যখন অস্ত্রধারীরা আলমগীর আলমকে গুলি করার জন্য কবরস্থানে লুকিয়ে ছিলেন, তখন আলমগীর আলমের পেছনে একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন রাজু। তিনি আলমগীরের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। তবে হত্যাকাণ্ডে তাঁর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অস্ত্র-মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ১২ বছর কারাগারে ছিলেন আলম। তিনি গত বছরের ৫ আগস্টের পর জামিনে মুক্তি পান। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিকল্পিতভাবে প্রচারণা চলছে যে বিএনপি সংস্কারের বিরোধী: মির্জা ফখরুল
  • কাঁচাপাট রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বিজেএ চেয়ারম্যানের
  • বাবাকে না পেয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে যায় শিশু, মুহূর্তে ট্রাকচাপায় নিহত
  • রাউজানে যুবদল কর্মীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁর সহযোগী গ্রেপ্তার
  • ক্ষুব্ধ-বিরক্ত আঁখি বললেন, ভণ্ডামি থেকে মুক্তি চাই
  • ‘বয়স বাড়ছে, বুঝে ফেলি কে মিথ্যা বলে’—ফেসবুকে আঁখি আলমগীর